লণ্ডন।। দীর্ঘ রোগভোগের পর প্রায় ছত্রিশ ঘন্টা লাইফ সাপোর্টে থেকে প্রয়াত হলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। গত ১৬ই আগষ্ট বৃহস্পতিবার দিল্লীর অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস বা AIIMSএ তিনি পরলোক গমন করেন। গত জুন মাসে তাঁকে দিল্লির AIIMS এ ভর্তি করা হয়।
ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে, অসুস্থ বাজপেয়ী বিগত দশ বছরে নিজেকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে প্রায় পুরোপুরি সরিয়ে নিয়েছিলেন, এবং কার্যত গৃহবন্দী ছিলেন। তাঁকে দেখতে দফায় দফায় AIIMS এ যান বহু রাজনৈতিক নেতা, যাঁদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ছিলেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী দিল্লির AIIMS-এ গত নয় সপ্তাহ ধরে ভর্তি ছিলেন। বর্ষীয়ান এই বিজেপি নেতার শারীরিক অবস্থা গত ৩৬ ঘণ্টা ধরে সঙ্কটজনক ছিল।
রাতেই দেখা করতে হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই নিয়ে চতুর্থবার অটল বিহারীকে দেখতে হাসপাতালে গেলেন প্রধানমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চূড়ান্ত তৎপরতা ছিল AIIMS-এর সামনে। হাসপাতালের পাশাপাশি পুলিশের নিরাপত্তা বলয়ে ছিল অটল বিহারী বাজপেয়ীর বাসভবন। নেতিবাচক ঈঙ্গিতই মিলেছিল সেখান থেকেও।
বর্তমানে AIIMS-এর ডাইরেক্টর এবং পালমোনোলজিস্ট ডাঃ রণদীপ গুলেরিয়া তিন দশকের ওপর বাজপেয়ীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে তাঁর পরিচর্যা করেছেন। ডাঃ গুলেরিয়া ছাড়াও নেফ্রোলজি, গ্যাস্ট্রো-এন্টেরোলোজি, পালমনোলোজি, এবং কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকদের একটি দল সর্বক্ষণ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে নজরে নজরে রেখেছিল।
গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দেশের অনেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা অটল বিহারী বাজপেয়ীকে শেষ দেখা দেখতে দিল্লি আসেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমার, উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী ও মন্ত্রী নন্দকিশোর যাদব। তার আগে AIIMS-এ পৌঁছন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।
সমস্ত কাজ বাতিল করে দিল্লি রওনা দেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। রাজধানীতে আসেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া। দেখা করতে আসার কথা ছিল মহারাষ্টের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশেরও।
মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা হওয়ার একঘন্টা আগেই বিজেপির পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় যে দলের আগামী দু দিনের জাতীয় কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে। অটল বিহারী বাজপেয়ীর শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে ১৮ ও ১৯ আগস্ট দলের সমস্ত কাজ মুলতুবী রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দলটি।