1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
প্রাচীন গুরুকুল - মুক্তকথা
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন

প্রাচীন গুরুকুল

তনিমা রশীদ॥
  • প্রকাশকাল : বুধবার, ২ জুন, ২০২১
  • ২০২২ পড়া হয়েছে
তনিমা রশীদ

ইস্! যদি এমন স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় পাওয়া যেত যেখানে খোলা আকাশের নীচে গাছের তলায় প্রকৃতির মাঝে লেখাপড়া করা যেত বা কোনো বিষয়ের নীরস তাত্ত্বিক দিকটা না তুলে ধরে প্রয়োগিক দিকটাই তুলে ধরা হতো এবং আমাদের শেখানো হতো একজন ডিগ্রিধারী মানুষ নয়, বরং মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠার বিদ্যা তাহলে খুবই ভালো হতো তাই না? তবে বিদ্যাকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতাম আর লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে এক বিষয় নিয়ে পড়ে সেই বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কহীন একটা চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হতো না।
এমনই শিক্ষাধারা ছিল প্রাচীন ভারতবর্ষে। অর্থাৎ আমাদের দেশে প্রাচীনযুগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি এবং শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতি এতটাই উন্নত ও সমৃদ্ধ ছিল। প্রাচীন ভারত বর্ষে প্রতিটা মানুষের সমাজজীবন চারটি আশ্রমে বিভক্ত ছিল। যথা : (১) ব্রহ্মচর্য, (২) গার্হস্থ্য, (৩) বাণপ্রস্থ ও (৪) সন্ন্যাস ( গুগল থেকে প্রাপ্ত)। এগুলো যেন মানবজীবনের চারটি স্তরবিশেষ এবং জীবনের এই চারভাগের বিধানের দ্বারাই মানুষের জীবন পরিচালিত হতো। ছাত্রজীবনকে বলা হতো ‘ব্রহ্মচর্যাশ্রম। আমাদের মূল আলোচনা এই আশ্রমকে কেন্দ্র করে।
প্রাচীন ভারতবর্ষে ছাত্রদের গুরুগৃহে পাঠ নিতে হতো। একজন গুরুকে কেন্দ্র করে একটি আবাসিক বিদ্যালয় পরিচালিত হতো যাকে বলা হতো গুরুকুল। এই গুরুকুল শব্দের অর্থ হলো গুরুর গৃহ বা আশ্রম। এই ‘গুরুকূল’ আদিতে প্রাচীন ভারতের শিক্ষাব্যবস্থার নাম, রূপ, রূপক, পরিচায়ক ও সাক্ষী! ‘গুরুকূল’ বলতে আক্ষরিক অর্থেই গুরুর আলয় অথবা আবাসকে বোঝায়।আমি ভেবেছিলাম প্রাচীন গুরুরা বুধয় অরণ্যে বসবাস করতেন তবে নানা রকম গুগল আর্টিকেল থেকে জানতে পারলাম যে সব গুরুকুলই অরণ্যে অবস্থিত ছিল না বা সব গুরুই অরণ্যবাসী ছিলেন না। গুরু যাঁরা হতেন তাঁদের অধিকাংশই ছিলেন বলা গৃহী-শিক্ষক এবং বেশিরভাগ গুরুকুলই লোকালয়ে অবস্থিত ছিল। লোকালয়ে অনেক সময় বহু শিক্ষকের সমাগমে অনেক বড়ো বড়ো নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল। তখন নানা মুনি-ঋষির আশ্রমেও শিক্ষাদান হতো। আসলে, প্রাচীন যুগে ‘আশ্রম’ বলতে সংসারত্যাগী মানুষদের আবাসস্থল এবং সাধনা ও শাস্ত্রচর্চা করার কেন্দ্রকে বোঝাতো। এখনও তাই বোঝায়। এই মুনি-ঋষিরাই গুরুরূপে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করতেন।
প্রাচীনকালে এইসব আশ্রম বা গুরুগৃহগুলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সেই আশ্রমগুলিতে এক বা একাধিক গুরু থাকতেন যাঁরা ছাত্রদের বিজ্ঞান, গণিত, রাজনীতি, সাহিত্য, ব্যাকরণ, শাস্ত্র, যুদ্ধবিদ্যা ইত্যাদি বিষয় শিক্ষা দিতেন। তৎকালীন ভারতীয় জীবন যেমন আশ্রমভিত্তিক ঠিক তেমনি ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থাও ছিল আশ্রম ভিত্তিক। নির্দিষ্ট একটি বয়সে পিতা-মাতা সন্তানদের লেখাপড়া শেখার জন্য আশ্রমে বা গুরুগৃহে পাঠিয়ে দিতেন। এইব্রহ্মচর্যাশ্রমে উপনয়নকৃত বালক সকল নিয়মনিষ্ঠা পালন করে গুরুগৃহ থেকেই বেদ, বেদাঙ্গ ইত্যাদি শাস্ত্র পাঠ করত। সাধারণত বাণপ্রস্থীরা গুরুর দায়িত্ব পালন করতেন।
তখনকার দিনে গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক এখনকার ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্ক ছিল না, বরং তা ছিল অনেকটা পিতা-পুত্রের সম্পর্কের মতো। গুরুর প্রতি সকল ছাত্রের শ্রদ্ধা এতটাই ছিল যে গুরুনিন্দা তো কল্পনাতীত এমনকী তা শোনাও ছিল মহাপাপ। আর গুরুর নির্দেশই যে কতখানি বেদবাক্য ছিল তা মহাভারতের আরুণির কাহিনিপড়লেই বোঝা যায়। তখনকার দিনে শিক্ষাগ্রহণের জন্যে কোনো অর্থ লাগত না। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষাদান করানো হতো। ‘গুরুদক্ষিণা বলতে তখন ছিল গুরুর প্রতি অসীম শ্রদ্ধা, ভক্তি, বিশ্বাস ও ভালোবাসা। অনেক গুগল আর্টিকেলে পেয়েছি যে, প্রাচীন গুরুকুলে ছাত্রদের মধ্যে জাতপাত, ধনী-দরিদ্র ইত্যাদি প্রভেদ ছিল না। সমাজের দরিদ্রতম ছাত্রটিরও শিক্ষালাভ করার সুযোগ থাকত। আবার অনেক আর্টিকেলে (প্রথম আলো) এও পেয়েছি যে, তৎকালীন অভিজাত শ্রেণীই এই শিক্ষাব্যবস্থার আওতাভুক্ত ছিল বলে শক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়। শুধুমাত্র ব্রাহ্মণ আর ক্ষত্রিয় গোষ্ঠীই এই গুরুকুলে তথা প্রাচীন ভারতের আবাসিক এই শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেত। এইসব আশ্রমের সমস্ত ব্যয় বা খরচ চালানো হতো রাজপ্রদত্ত ভূসম্পত্তি থেকে। আবার কোনো কোনোও আশ্রমে গুরুই শিষ্যদের গৃহস্থদের বাড়িতে বাড়িতে পাঠাতেন ভিক্ষা করে অর্থ সংগ্রহের জন্য যার দ্বারা তারা তাদের অন্নের ব্যবস্থা করত।(চলবে)

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT