আনসার আহমদ উল্লাহ।। শনিবার, ২২শে অক্টোবর ২০১৬।। “বাংলাদেশে ইসলামের নামে সন্ত্রাসের উত্থান এবং প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় গত ১৮ই অক্টোবর বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসসে। ইউরোপ-ভিক্তিক সংগঠন, ইউরোপীয়ান বাংলাদেশ ফোরাম এই সন্মেলনের আয়োজন করে।
ব্রাসেলস প্রেস ক্লাবে অনুষ্টিত এই সম্মেলনের প্রথম পর্বে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টের সদস্য ড. চার্লস টেনক সঞ্চালক হিসাবে তার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান, আহমদিয়া, সেক্যুলার ব্লগার, শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবিদের উপর একটির পর একটি আক্রমণ হয়েছে। এই সমস্ত ঘটনার মূল লক্ষ্য ছিল সেই সমস্ত জনগণের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করা যারা চায় একটি ধর্ম নিরপেক্ষ বাংলাদেশ, যারা চায় আধুনিক বাংলাদেশ এবং এমন একটি বাংলাদেশ যেখানে সবার অধিকার থাকবে নিশ্চিত। বৃটিশ এম ই পি চার্লস টেনক বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে জুলাই মাসে সংঘটিত হলি আর্টিজান সন্ত্রাসী আক্রমন ছিল জঘন্যতম ও ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের ঘটনা। এই ধরণের ঘটনা কেবল বাংলাদেশে নয়, ইউরোপ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংঘটিত হচ্ছে। এই সন্ত্রাসী ঘটনায় মনে হয়, বাংলাদেশ একদিকে যারা আধুনিকতা চায় এবং অন্যদিকে আর একটি পক্ষ যারা দেশটিকে ৭ম দশকের কালো অধ্যায়ের দিকে নিয়ে যেতে চায়- এই দু’য়ের মাঝে প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে।
দুই অধিবেশনে বিভক্ত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন ই বি এফের সভাপতি লন্ডনস্থ সাংবাদিক আনসার আহমদ উল্লাহ। সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ থেকে আগত ফোরাম ফর সেক্যুলার বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবীর, মানবাধিকার সংঘটনের নেত্রী, ড. মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, দুই বৃটিশ সাংবাদিক মার্টিন ব্রাইট ও টেড জিয়োরি, বিশিষ্ট ডাচ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. বিলেম ফান দার খেইস্ট, লন্ডনস্থ কুইলাম ফাউন্ডেশনের প্রধান ইমাম ড. উসামা হাসান, ইউ কে আহমাদিয়া মুসলিম জামাতের প্রধান মাওলানা ফিরোজ আলম, ডাচ উন্ননয় সংগঠনের প্রধান রেমী কেম্পার্স, হল্যান্ডস্থ ইসলামী সংগঠন মাশরিকের চেয়ারম্যান ইলিয়াস শেৱালি এবং বিশিষ্ট সমাজকর্মী আনার চৌধুরী। দ্বিতীয় অধিবেশন সঞ্চালন করেন ব্রাসেলস ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ কোঅপারেশন-র পরিচালক, অধ্যাপক ড্. তাজিন মুর্শিদ।
“কমব্যাটিং ইসলামিস্ট টেরোরিজম : মুসলিম ব্রাদারহুড এন্ড জামাত-ই-ইসলামী” শীর্ষক মূল প্রবন্ধে শাহরিয়ার কবির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং পশ্চিম ইউরোপ ‘জামাত ও মুসলিম ব্রাদারহুডকে ‘মডারেট ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টি’ হিসাবে বিবেচনা করে, কিন্তু এই দুটি দল, বিশ্ব ব্যাপী ধর্মের নামে যে সন্ত্রাস চলছে তার হোতা এবং এই মর্মে প্রচুর প্রমাণাদি রয়েছে। তিনি বলেন, কোন রাষ্ট্রের পক্ষে এককভাবে এই সন্ত্রাস মোকাবেলা করা সম্ভব নয়, একে মোকাবেলা করতে হবে সম্মিলিত ভাবে।