গত ১৮মে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে স্বাক্ষরিত শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি মো: ইউছুব আলী, খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো(বিএমডি) মহাপরিচালক(অতিরিক্ত সচিব) বরাবরে এক আবেদন করেছেন।
তিনি তার আবেদনে যে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা থেকে বিবেচনায় নিলে অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তিনি আবেদন করেছেন মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলাতে বালু মহাল থেকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত প্রসঙ্গ নিয়ে।
তিনি তার আবেদনে যে সকল তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো ‘বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি(বেলা)’র একটি রিট আবেদন এবং রাজস্বের টাকা জমা না দিয়েই অবৈধভাবে বালি উত্তোলন ও বিক্রি।
এ বিষয়ে তিনি লিখেছেন- “মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলাতে ২৯ টি সিলিকা বালু ছড়া ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি(বেলা) কর্তৃক মহামান্য হাইকোর্টে এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে ইজারা বন্দোবস্তোতে স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
পরে ২০১৮ সালে আদালত এনভেরনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট(ইআইএ) প্রাপ্তি সাপেক্ষে ছড়ার ইজারার অনুমোদন দিতে বলা হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারী জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজার কার্যালয় থেকে ১৪২৮ বাংলা সনের বৈশাখ মাস হতে ১৪২৯ বাংলা সনের ৩০ চৈত্র ২ বছরের জন্য ইজারা সংক্রান্ত দরপত্র আহ্বান করে।
এতে করে শ্রীমঙ্গল উপজেলাতে ২০টি ছড়ার ইজারা বন্দোবস্ত পান ইজারাদাররা। ঐ ২০ টি ছড়ার ইজারাদাররা শুধু মাত্র ২৫% সিকিউরিটির টাকা জমা দিয়ে পরিবেশ ছাড়পত্র ‘ইআইএ’ সংগ্রহের জটিলতা এর অজুহাত দেখিয়ে বিগত দুই বছর রাজস্বের বাকী টাকা জমা না দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন। এতে শুধু মাত্র বিগত দুই বছরে ভ্যাট, টেক্স ও ইজারা মূল্য সহ এই বালু মহাল থেকে ইজারাদাররা ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৪ হাজার ৫৬২ টাকা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন।
বিগত ২০১৬ সাল থেকে হিসাব করলে সরকার এ খাত থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকার মত রাজস্ব আহরণ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কিন্তু এই বালু মহালগুলো থেকে অধ্যাবদি পর্যন্ত বালু খেকোরা একদিনের জন্যও বালু উত্তোলন বন্ধ করেনি। গত ১৭ এপ্রিল ২০২৩ ইং সালে শুধু মাত্র একজন ইজারাদার ‘ইআইএ’ জমা দিয়ে সুমাই ছড়ার ইজারা পরবর্তী আরও দুই বছরের জন্য বন্দোবস্তো অনুমোদন পান।
কিন্তু এই একজন ছাড়া এখন পর্যন্ত বাকী কোন ইজারাদার ‘ইআইএ’ জমা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার তাগিদ অনুভব করছেন না এবং তারা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন। তারা পরিবেশের ক্ষয়-ক্ষতির কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছেন না। বর্তমানে ১৪৩০ বাংলা সন চলমান কিন্তু ১৪২৯ বাংলা সনের পূর্বের ঐ দরপত্রের ইজারার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ নতুন ইজারা দরপত্র কেন আহ্বান করছেনা তা বোধগম্য নয়?”
এ নিয়ে তার আবেদনে তিনি সরকারকে কিছু মূল্যবান পরামর্শও দিয়েছেন।