কেউ কারো কাছে সাহায্যের জন্য আসলে তার দুয়ারে এসে হাঁক দেয়। আমরা মানুষ তাই মানুষের কথা বা তাদের কন্ঠস্বরে বুঝতে পারি তার আসার কারণ। তাই কেউ হাঁক দিলে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসি সাহায্যের জন্য। কিন্তু কোনো পশুপাখি যদি সাহায্যের জন্য মানুষের দুয়ারে আসে ডাকাডাকি করে তাহলে তার অবস্থাটা বোঝা মানুষের পক্ষে খুবই কঠিন। তাহলে কিভাবে সে তার মনের ভাব প্রকাশ করবে?
ঠিক তেমনি এক ঘটনা ঘটে গেলো আজ। একটি অসহায় পাখি এলো আমাদের দুয়ারে সাহায্যের জন্য।
সন্ধ্যার সময় বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন ভাই। গেইট খুলতে হঠাৎ কী যেনো তার মাথার উপর দিয়ে উড়ে বাসার ঘরে ঢুকলো। বসার ঘর থেকে পাখা ঝাপটানোর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। আওয়াজ শোনে সকলেই বসার ঘরের দুয়ারে এসে দাঁড়ালেন। ভাই জানালেন একটি ঈগল পাখি ভিতরে ঢুকে গেছে। ভিতর থেকে পাখা ঝাপটানোর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কিন্তু কেউই অনেকটা ভয়ে দেখতে যাচ্ছেন না। যদি চোখ কেড়ে নেয়। পরবর্তীতে সাহস করে পর্দার আড়াল থেকে ভিতরে উঁকি দিলাম। দেখলাম পাখিটি উড়ার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। পাখিটিকে দেখতে বুঝা যাচ্ছে খুবই দুর্বল। শরীরের সবটুকু শক্তি দিয়ে উড়ার চেষ্টা করছে কিন্তু বার বার পড়ে যাচ্ছে। আমরা কিন্তু তা আগে খেয়াল করিনি। একটি ঈগল দেখেই মোবাইল দিয়ে ছবি তুলতে শুরু করেছি। কিছুক্ষণ পর পাখিটির ছটফটানি দেখে বুঝতে পারলাম সে সুস্থ নয়। হয় অসুস্থ কিংবা অভুক্ত।
ভীত সন্ত্রস্ত অভুক্ত সেই ঈগল পাখীটি। ছবি: মুক্তকথা
অবশেষে বিপর্যস্ত ভেবে পাখীটিকে অনেক কসরতের পর ধরা হলো এবং একখানা কাপড় দিয়ে মোড়িয়ে দিয়ে কিছু খাবার দেয়ার চেষ্টা করা হলো। পাখীটি খেতে পারছে না দেখে টেলিফোনে ডাকা হলো শ্রীমঙ্গলের সীতেশ ধরের চিড়িয়াখানার লোকজনকে। উত্তরে তারা বললেন কাল ভোরে আসবেন। পরে খবর দেয়া হলো পাখী নিয়ে লিখিয়ে একজন সাংবাদিককে। সাংবাদিক খবর দিলেন উপজেলা বন কর্মকর্তাকে। কিছুক্ষনের মধ্যেই তারা আসলেন একটি লোহার খাঁচা নিয়ে। নাম-ঠিকানা লিখে পাখীটিকে নিয়ে গেলেন। যাবার সময় বনবিট কর্মকর্তা আবু নঈম মোহাম্মদ নূরুন্নবী বলে গেলেন পরিবেশ দূষণের কথা। বললেন-“আমরাতো বনও রাখছিনা। পাখীগুলো বাঁচবে কি করে। যাবে কোথায় আর থাকবেই বা কোথায়!
|