লন্ডন: বহুরূপী এ বিশ্বমাটি বৈচিত্র্যময় বহু সাংস্কৃতিক মানবগুষ্ঠীতে ভরপুর, কথাটি এতই সত্য যে তা ব্যাখ্যা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। বিভিন্নমুখী নানারূপী জীবনধারার বৈচিত্র্য সত্যই বিশ্ববৈচিত্র্যের এক অত্যাশ্চর্য্য দিক। দুনিয়ার কোটী কোটী গবেষক হয়রান আছেন এসব বৈচিত্র্যের মূল বের করে আনতে। বিশ্বব্যাপী বহু সংস্কৃতিতে বহুপ্রাচীন কিছু প্রথা রয়েছে যা বংশানুক্রমে চলে আসছে। বছর ঘুরে আসলেই নির্দিষ্ট দিনে ও সময়ে তা ঘটা করে পালন করা হয় গ্রাম থেকে শুরু করে শহর-নগর-বন্দরে।
এই মানব সমাজে যা পুরুষানুক্রমিকভাবে চলে আসছে তাকেই আমরা ঐতিহ্য শব্দ দিয়ে প্রকাশ করে থাকি। পুরুষানুক্রমিকভাবে চলে আসা সেসব কাজ যে অনাদি অনন্তকালই মানুষের কল্যাণে কাজ করে তা নয়। পৃথিবীতে বহু মানবগুষ্ঠীর বহু ঐতিহ্যিক অনুষ্ঠান রয়েছে যা আজকের এ অত্যাধুনিক বিভিন্নরূপী বহুসংস্কৃতির দুনিয়ায় অপ্রয়োজনীয় কিংবা ক্ষতিকারক হলেও টিকে আছে পশ্চাদপদ জাতিগুষ্ঠীগুলোর জীবনে। তেমনি একটি ঐতিহ্যিক আচার হলো হাতে ডাইয়া বা বলাপিঁপড়ার হুল ফুঁটানো সহ্য করে তালে তালে নাচা।
আমাজনের বলাপিঁপড়াভরা মুষ্টিদস্তানা হাতে
ছেলে বয়ঃপ্রাপ্ত হয়েছে কি-না তা পরীক্ষা করে দেখার এক ভুতুড়ে প্রথা চলে আসছে ব্রাজিলের আমাজন অঞ্চলের “সাটিয়ার মাউয়ে” নামক এক সম্প্রদায়ের মাঝে। বড় বড় বলা পিঁপড়া ধরে এক ধরনের পাতা খাইয়ে এদের বিষাক্ত-উন্মত্ত করে তুলা হয়। তার পর হাতে পড়ার দু’টি মুষ্টিদস্তানায়(gloves) এই পিঁপড়াদের পাতলা জালকাপড় দিয়ে সেলাইকরে রাখা হয়। এরপর নির্দিষ্ট সেই ছেলেকে ওই মুষ্টিদস্তানা পড়ে(গ্লাভস হাতে দিয়ে) ২০ দফা একটি নির্দিষ্ট তালের সাথে নাচতে হবে।
ব্রাজিলের আমাজন অঞ্চলের “সাটিয়ার মাউয়ে” নামক একটি সম্প্রদায়ের মধ্যে এই প্রথা ঐতিহ্য হিসেবে চলে আসছে সেই কবে থেকে কেউ তার ইতিহাস জানে না।
বলা পিঁপড়ার হুল ফুটানোর বেদনাকে যদি ওই ছেলে সহ্য করতে পারে, অজ্ঞান হয়ে না যায় তা’হলেই তিনি পাশ করবেন। অর্থাৎ তিনি যৌবনপ্রাপ্ত হয়েছেন ধরে নেয়া হয়। কেমন আজব ঐতিহ্য! সূত্র: ওয়েইন-লুসিয়ানে, চেনেল.নেশনেলজিওগ্রাফিক.কম ও ইউটিউব