মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। গত ২৮ অক্টোবর নীরবে নিভৃতে চলে গেল বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের আত্মত্যাগের আরেক বছর। ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তের চৌকি এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন তিনি। জাতীর এ বীর সন্তানকে নিয়ে গত ২৮শে অক্টোবর তার ফেইচবুকে প্রয়াত হামিদুরের তথ্যবৃত্তান্ত দিয়ে বেশ সমৃদ্ধ নিবন্ধ লিখেছেন মোহাম্মদ আলমগীর।
হামিদুর রহমান ১৯৪৫ সালে ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার চাপড়া থানার ডুমুরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর বাবা আক্কাস আলী মন্ডল ও মা কায়ছুননেছা ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খোর্দ্দখালিশপুর গ্রামে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তার নামে খোর্দ্দখালিশপুর গ্রামটির নামকরণ করা হয়েছে- ‘হামিদনগর’, লিখেছেন মোহাম্মদ আলমগীর।
আলমগীর আরো লিখেছেন, ১৯৭১ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দিয়ে হামিদুর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। একাত্তুরের ২৮শে অক্টোবর ভোরে লে. কাইয়ুমের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল পাক সেনাদের ওপর চারদিক থেকে আক্রমণ চালায়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পাক সেনাদের ক্যাম্পে। এ সময় প্রচন্ড গোলাগুলি ও পাকবাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা হতাহত হন। এমন পরিস্থিতিতে সিপাহী হামিদুর রহমান গোলাগুলির মধ্যেও হামাগুড়ি দিয়ে শত্রুদের অবস্থানের ৫০ গজের মধ্যে ঢুকে পড়েন। তার হাতের এলএমজি’র গুলিতে শত্রুদলের অধিনায়কসহ বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে আলমগীল তার লেখায় দাবী করেছেন। হঠাৎ শত্রুদের একটি বুলেট হামিদুরের কপালে লাগে। এ গুলিই তার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেয়। কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তের তৎকালীন ইপিআর ক্যাম্পের(বর্তমান বিডিআর ফাঁড়ি) সামনে শহীদ হন সিপাহী হামিদুর রহমান।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আমবাসা গ্রামের একটি মসজিদের পাশে ওই সময় বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানকে দাফন করা হয়। ৩৬ বছর পর ২০০৭সালের ১১ই ডিসেম্বর তার দেহাবশেষ ভারতের ত্রিপুরা থেকে দেশে এনে ঢাকার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। তথ্য- মোহাম্মদ আলমগীরের ফেইচবুক থেকে