মুক্তকথা কমলগঞ্জ ।। করোণা ভাইরাসের এ সময়ে সারা বিশ্বের ধনী-গরীব সকল দেশেই শিল্পশ্রমিকদের ঘর থেকে বাইরে না যাবার নির্দেশ নতুন কিছু নয়। সকল দেশের প্রায় সকল সরকারই একই ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু অনেকটা বিপরীত বাংলাদেশের চা শিল্প এলাকা মৌলভীবাজারে। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের ধলই চা বাগানে করোনা ভাইরাসের সময়ও সপ্তাহে ৩ দিন কাজ হয়। ভয়াবহ জীবনঝুঁকি নিয়ে ৩ দিনের কাজের বিপরীতে শ্রমিকরা ৩ দিনের মজুরীই পান। কাজ না পেয়ে ঘরে বসে থাকা এক শ্রমিকের ৬ দিনের মজুরীর দাবি বাগান কর্তৃপক্ষ উপেক্ষা করিলে ওই শ্রমিকের হামলায় একজন টিলা কেরানী(বাগান কর্মচারি) ও একজন চা শ্রমিক আহত হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ ৩জনকে আটক করেছে। গত শনিবার, ১৬ মে, সন্ধ্যায় উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ধলই চা বাগানে এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা য়ায়, শনিবার সন্ধ্যায় চা বাগানের টিলা ক্লার্ক আব্দুল মতিনের নিকট চা শ্রমিক নিমাই মাদ্রাজি ৬ দিনের কাজের মজুরি দাবি করেন। এ নিয়ে চা বাগান কার্যালয়ে শনিবার বিকেলে বাগানের টিলা ক্লার্ক আব্দুল মতিনের সাথে বাকবিতন্ডা হয় নিমাইয়ের। বিষয়টি জানাজানি হলে চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির লোকজন ও বাগানের অন্যান্য কর্মচারিদের সহযোগিতায় প্রাথমিকভাবে সমস্যার শেষ হয়।
|
পরে অফিসের কাজ শেষ করে সন্ধ্যায় ইফতারের পূর্ব মুহুর্তে কর্মচারি আব্দুল মতিন বাসায় ফেরার পথে তার উপর নিমাই ও তার সহোদররা আতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় আব্দুল মতিন আহত হয়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে একই চা বাগানের লছমি পাশী নামের ১ চা-শ্রমিকও আহত হয়েছেন। পরে চা বাগান ব্যবস্থাপক আব্দুল মতিনকে উদ্ধার করে রাতেই কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ভর্তি করেন। আব্দুল মতিন কোমর, পায়ে ও মাথায় আঘাত নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
কমলগঞ্জ থানার এসআই ফজলে রাব্বী জানান, এ ঘটনায় ৫৪ ধারায় শনিবার রাতেই ৩সহোদরকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন-ধলই চা বাগানের নিমাই মাদ্রাজি, নিতাই মাদ্রাজি ও লছমন মাদ্রাজী।
ধলই বাগান ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্ততি চলছে।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আরিফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনায় জড়িত তিন ভাইকে আটক করা হয়েছে। এখন চা বাগান থেকে মামলা দিলে সে মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হবে।