মুক্তকথা, লন্ডন: Md Alim Al Rabby was feeling vorosha rakhun muhit saheber upor. এভাবেই খেদ মিশ্রিত কথায় মোহাম্মদ আব্দুল আলীম আল রাব্বি তার ফেইচবুকে ব্যাংকিং এ নতুন দুটি নিয়ম বিষয়ে লিখেছেন। ব্যাংকের নতুন নিয়ম দু’টি তিনি যে নমুনায় উল্লেখ করেছেন হুবহু সেভাবেই এখানে তুলে ধরা হলো। তিনি লিখেছেন-
১। সরকার আগামী পহেলা জুলাই থেকে ব্যাংক একাউন্টে টাকার পরিমাণ ১.০০ লক্ষ ১ টাকা হতে ১০.০০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আবগারী শুল্ক (Excise Duty) নির্ধারণ করেছেন ১০০০ টাকা!!!
অর্থ্যাৎ আগামী কালকে ব্যাংকে (সরকারী ব্যাংক) কেউ ১.০০ লক্ষ টাকা তিন মাস মেয়াদে এফডিআর করলে মেয়াদ শেষে ৪.৫০% হার সুদে মুনাফা পাবেন ১,১২৫ টাকা। উৎস কর (সোর্স ট্যাক্স) হিসাবে এই ১,১২৫ টাকার ১৫% হিসাবে কাটা যাবে ১৬৯ টাকা এবং আবগারী শুল্ক ১,০০০ টাকা। অর্থ্যাৎ মোট কাটা যাবে (১৬৯+১,০০০) = ১,১৬৯ টাকা। তিন মাস পরে গ্রাহক ফেরত পাবে (১০০,০০০+১,১২৫-১,১৬৯)= ৯৯,৯৫৬ টাকা। অর্থ্যাৎ গ্রাহক তিন মাস টাকা খাটানোর পর লাভ তো দূরের কথা উল্টো আসল হতে ৪৪ টাকা কম পাবে।
আর যারা অক্টোবর এর ১ তারিখের পরে ৩ মাস মেয়াদী এফডিআর করবে তাদের কে ১৭ ও ১৮ সালের মোট ২ বছরের Excise Duty দিতে হবে। এক্ষেত্রে সে পাবে = ৯৮, ৯৫৬/।
ইতিমধ্যে পহেলা এপ্রিল ২০১৭ এর পর যারা তিন মাস মেয়াদে ১.০০ লক্ষ টাকা এফডিআর করেছেন তাদের সবার ক্ষেত্রেই এই ঘটনা ঘটবে।
বেশির ভাগ প্রাইভেট ব্যাংক গুলোর এফডিআর সুদের হার ৪.৫০%-৬.০০% তাদের ক্ষেত্রেও একই বিষয় হবে।
আলীম আল রাব্বি ব্যাংক ও গ্রাহক উভয়কে তিনমাস পর শাখায় গ্রাহকের সাথে উদ্ভুত কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিষয়টা সম্পর্কে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। এফডিআর এ বিনিয়োগ করার আগে মেয়াদ শেষে সকল সরকারি কর্তন শেষে কত টাকা মুনাফা পাবেন তা আগে নিশ্চিত হয়ে নেবার অনুরোধ জনিয়েছেন।
২। এ নিয়মকে আলীম আল রাব্বি ‘জুলুম, রক্ত চুষে নেওয়ার সামিল’ বলে উল্লেখ কলে লিখেছেন- আগামী জুলাই মাসের পর থেকে যে কেউ ২০ হাজার টাকার বেশি ব্যাংকে জমা দিলে বা তুললে প্রতি লেনদেনে তাকে কমপক্ষে ২০০ টাকা আবগারী কর দিতে হবে। এই টাকা ব্যাংক গ্রাহকের অজান্তেই ব্যাংক একাউন্ট থেকে কেটে রাখা হবে। করের পরিমানটাও নিম্নরূপ:-
২০ হাজার ১ টাকা থেকে ১ লাখ পর্যন্ত: ২’শ টাকা,
১ লাখ ১ টাকা থেকে ১০ লাখ পর্যন্ত: ১ হাজার টাকা,
১০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত: ৩ হাজার টাকা।
এখন যদি কেউ মাসে এমন ১০ টা লেনদেন করেন, তাহলে তার একাউন্ট থেকে কত হাজার টাকা সরকার কেটে নেবে?
লেখা পড়ে আমরা বুঝতে পেরেছি রাব্বি ব্যাংকিং ব্যবসারই মানুষ। তার কথা মিথ্যে হবার নয়। ব্যাংকিং ব্যবস্থাই দুনিয়াব্যাপী মুনাফার ব্যবস্থা হিসেবে চলে আসছে। যে কেউ তার অলস টাকা কিছু মুনাফার উদ্দেশ্যে নিরাপদ জেনে ব্যাংকে হিসাব খুলে জমা রাখেন। ব্যাংক জন্মের পর থেকেই এটিই ব্যাংকের ব্যবসা। কিন্তু জমা রাখার পর মেয়াদ শেষে একজন গ্রাহককে ঘোষিত লভ্যাংশ দেয়া হবে না উপরন্তু তাকে মূলধন থেকে হারাতে হবে! এটি অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য ও তথ্য নির্ভর নয় বলেই আমরা মনে করতে চাই। একই সাথে, এ অবস্থায় আমাদের সকলেরই অবশ্যই জানার অধিকার রয়েছে এ কোন ধরনের হিসাব? বিষয়টি শুধু হাস্যস্পদই নয় বেহদ দূর্ভাবনারও বটে। এটি নিছক কোন ভুল না হয়ে পারে না। অবশ্যই সংশ্লিষ্ট মহলকে অবিলম্বে বিষয়টি সংশোধন করে নিয়ে জনবিজ্ঞপ্তি দিতে হবে।
আমাদেরকে ‘ইস্যু পাগল জাতি’ বলে উল্লেখ করে অনেক খেদে আল রাব্বি জানতে চেয়েছেন- এটা নিয়ে কোন রা নাই কেন? আমরাও বলতে চাই আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো কি শুধু ভোট নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন। সাধারণ মানুষের এসব সমস্যা নিয়ে তাদের কি কোন দায়-দায়ীত্ব নেই!