এমনও হতে পারে একটি ডাকঘর। তাও আবার আমেরিকার মত দুনিয়ার প্রথম কাতারের ধনী দেশে। হয়, আমেরিকার “গ্রিমশোজ” ডাকঘর তেমনি একটি। বাংলায় আমরা বলি টং দোকান। ছোট খাটো আকারের চার খুঁটির উপর ভর করে দাড়ানো কোন খুপড়ি ঘরের মত। অনেকটাই অনুরূপ, কাঠের বানানো খুপড়ি ঘর আছে আমেরিকার উত্তর কেরোলিনায়। উত্তর কেরোলিনার দক্ষিন-পশ্চিম নীলচূড় পাহাড় ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে সে ঘরটি। কাছেই রয়েছে আমেরিকার একটি পতাকা।
ছোট্ট এ টংঘরটি, বলা হয় আমেরিকার সবচেয়ে ছোট একখানা ডাকঘর। ঘরের ভেতরেই দেয়ালে হলুদ অক্ষরে লেখা রয়েছে ‘আমেরিকার সবচেয়ে ছোট্ট ডাকঘর’। একটি গণমাধ্যম লিখেছে এটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট ডাকঘর। কিন্তু কি কারণে ডাকঘরখানা এ নমুনার?
“গ্রিমশোজ” ডাকঘর এতোই ছোট যে তার মাপ সর্বসাকূল্যে ৫ x ৬ফুট। টংঘরের মত করে এ ডাকঘরখানা তৈরী করা হয় ১৮৭৮সালে এবং ১৯৫৩সাল অবদি ৭৫বছর ছোট্ট এ ঘরখানা এলাকার মানুষের পত্র-পত্রিকা কিংবা সংবাদ বিনিময়ের একমাত্র মাধ্যম হয়ে কাজ করেছে।
সূচনাতে ডাকঘর খানার নাম ছিল “হুয়াইট সাইড কোভ ডাকঘর”। পরে ১৯০৯সালে এর নাম বদলে যায়। নতুন নাম হয় “গ্রিমশোজ” ডাকঘর।
এ নাম দেয়া হয় ‘মিঃ গ্রিমশোজ’এর নাম থেকে। এই মিঃ গ্রিমশোজ ছিলেন ডাকঘরের প্রথম পোষ্ট মাষ্টার। তিনি ওই এলাকায় বড় একখণ্ড জমির মালিক ছিলেন। তার জমির এক কোনায় একটি ফসল মাড়াই কলের ঘর ছিল। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আইসেন হাওয়ারের সময় যখন তৃতীয় শ্রেণীর সকল ডাকঘর বন্ধ করে দেয়া হয় তখনই এই ডাকঘরখানা বন্ধ হয়ে যায়। এর পর ঘরখানা টিকেট ঘর ও পোষ্টকার্ড প্রাপ্তির কাউন্টার হিসেবে বহুদিন ব্যবহৃত হয়। পরে আরো ভগ্নদশা হলে এলাকার লোকজন এলাকার গৌরবস্মৃতি হিসেবে ছোট্ট সে টংঘর খানাকে হুবহু সেভাবে রেখেই একটু ঘসাই-মাজাই করে পূনঃনির্মাণ করে নেয়।
বর্তমানে ছোট্ট এ টংঘরখানা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে নীলপাহাড়ের অনেকটা নির্জন চূড়ায় আমেরিকার পর্যটকদের আকর্ষণ হয়ে সগর্বে দাড়িয়ে আছে। প্রতিদিনই কিছু মানুষ বিশ্বের এক সময়ের এই ছোট্ট ডাকঘরখানাকে একনজর দেখার জন্য আসে। সূত্র: এটলাসঅব্সকোরা