মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। খবরটি পুরানো তবে এখনও মহিমা হারায়নি। কারণ খবরের বাণীর সাথে জড়িত আছেন তৃণমূল থেকে গড়ে উঠা, মাঠের মানুষের সাথে কাজ করা একজন রাজনীতি সচেতন মানুষ। জীবনের অনেক ঘাত-সংঘাতের মধ্যদিয়ে তিনি নিজেকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন রাজনীতিক হিসেবে। দেশ পরিচালনায় এই প্রথম নয়, এর আগেও তিনি সাংসদ ছিলেন। সংসদের হুইপ ছিলেন। তারও আগে জীবন রাজনীতির সূচনাতে নির্বাচিত হয়েছিলেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান। সেই যে শুরু করেছিলেন এখনও আছেন। এমন মানুষের কথা মহিমা হারায়না। এমন মানুষ যা ধারণ করতে পারে তাই অ-কপটে বলে। আর যা বলে তাই করে দেখায় বলেই শুনেছি। এক নামে এখন সকলেই তাকে চেনে জনাব মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন।
এবার তিনি মন্ত্রী হয়েছেন। দায়ীত্ব নিয়েছেন ‘পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন’ দফতরের। মন্ত্রীত্ব পাওয়ার পর তিনি আবেগ উদ্বেলিত হয়ে আধ্যাত্মিক রাজধানী বলে কথিত সিলেটের হযরত শাহজালাল(রঃ) এর মাজার জিয়ারত করে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে কিছুক্ষন আলাপ করেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, তার সরকার দূর্ণীতি প্রতিরোধে বদ্ধপরিকর। তিনিও তার মন্ত্রনালয়কে সবকিছুর আগে দূর্ণীতিমুক্ত করে শুরু করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। শুধু তাই নয়, তার মন্ত্রনালয়ে দূর্ণীতির সাথে জড়িত কাউকে কোনরূপ ছাড় না দেয়ার দৃঢ়তার কথা তিনি শুনিয়েছেন। তিনি আরো জানিয়েছেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ দেশকে দূর্ণীতিমুক্ত করতে হবে। সবচেয়ে খেয়াল করার কথা যা তিনি বলেছেন যে, তার মন্ত্রনালয়কে দূর্ণীতিমুক্ত করেই তিনি কাজ শুরু করেছেন।
গাছ-বিরিক্ষ কেটে বন-বাদার উজার করে ক্ষেতের জমিন বানানো বা বসতবাটি বানানো এখন দুনিয়ার মানুষের সবচেয়ে প্রিয় কাজ হয়ে উঠেছে। এটি মানুষ বাড়তির চাপ। জাতিসংঘের “ফাও”(FAO=Food and Agriculture Organisation)এর হিসেবানুযায়ী সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১৮মিলিয়ন একর বনভূমি বিনষ্ট করা হচ্ছে। “ফাও”এর হিসেব, প্রতি সেকেণ্ডে দেড় একর বনভূমি উজাড় করা হচ্ছে। তার প্রধান কারণ কৃষি জমি তৈরী করা। ঔষুধ এবং সৌখিন আসবাপত্র তৈরী করার নিমিত্তে গাছপালা কাটা হয়ে থাকে। অসাধু নিরীহ বেকার মানুষ এসব কাজে হাত লাগায় তাদের নিজস্ব চাহিদা মেটাতে গিয়ে। সর্বশেষ ভীতিকর হিসেব দিয়েছে “ফাও” বলেছে যে, সারা বিশ্বের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনভূমির প্রায় অর্ধেক ইতিমধ্যেই হয় উজাড় করে ফেলা হয়েছে অথবা বসতবাটি বা কৃষিভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। এর খেসারত দিতে হবে সারা বিশ্বের মানুষকে।
“ফাও”এর ২০০১সালের এক হিসেব মতে বাংলাদেশে মোট ১৩লাখ ৩৪হাজার হেক্টর জমিতে বনভূমি আছে। এর আগে “ফাও”এরই অপর এক হিসেবে দেখা গিয়েছিল যে বাংলাদেশে বনভূমির পরিমান মোট ১৪লাখ ৪২হাজার হেক্টর ভুমি। “ফাও”সহ অন্যান্য বনগবেষক ও পরিবেশবিদদের মতে বাংলাদেশে বনভূমি উজাড়ের হার প্রতিবছর শতকরা ৩ভাগ। অথচ সারা দক্ষিন এশিয়ায় সে হার শতকরা মাত্র ০.৬ভাগ। আমাদের বনভূমি উজাড়ের কারণ তাদের মতে, বণজ সম্পদ দিয়ে উৎপাদিত পণ্যসামগ্রীর বিশেষ চাহিদা পূরণ, কর্মচারী স্বল্পতার কারণে বিভিন্নমুখী বনব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা সমূহ দেখানোর ঘাটতি এবং অসাধু ব্যক্তি বা সংস্থা কর্তৃক বনভূমির বেআইনী দখল না ঠেকানো।
আমাদের বনবিভাগ উপরে উল্লেখিত তিনটি কারণের প্রতি বিশেষ নজর দিতে সক্ষম হলে মন্ত্রী তার কথা রাখতে পারবেন এটি নিশ্চিত করে বলা যায়। এখন থেকে আমাদের দেখার পালা।