মৌলবীবাজার প্রতিনিধি।। অবশেষে তিনদিন পর রাজনগর উপজেলার কুশিয়ারা নদী সংলগ্ন ওয়াপধা বাঁধের ভাঙ্গন মেরামত করা হলো। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাউবোর সংশ্লিষ্টদের সহযোগীতায় ও উত্তরভাগ ইউনিয়ন পরিষদের আর্থিক ব্যয়ে প্রায় ৮ হাজার বস্তা ভর্তি বালি, বাঁশ ও গাছ-পালা ব্যবহার করে পুরোদমে বন্ধ করা হয়েছে পানির শ্রোতধারা। এর আগে দুপুরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ঝুনু মিয়ার সাথে সরেজমিনে কথা হলে তিনি জানান, তিন দিন হলো বাঁধ রক্ষার কাজ চলছে। এই বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়াতে রাজনগরের ২০-২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর প্রভাবে মৎস্যখামার, পুকুরের মাছ ও ঘরে রাখা বোরো ধান নষ্ট হয়েছে। একাজের ব্যয়ভার কারা গ্রহন করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন ইউনিয়ন পরিষদ বাঁধ রক্ষার যাবতীয় খরছ চালিয়ে নিচ্ছে। পরবর্তীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিশোধ করবে। তিনি বলেন, এ বাঁধ রক্ষা করতে প্রায় আড়াই হাজার বালির বস্তা ও অনেকগুলো গাছ হারিয়ে গেছে। পরবর্তীতে আরো ৮ হাজার বস্তা বালি প্রস্তত করা হয়।
তবে ওই এলাকার হলদিগুল গ্রামের শ্রমিক ফেরদৌস আলম জানান, বাঁধ মেরামত করতে এতোগুলো বস্তা বালি হারিয়ে যায়নি। শুরুতে ৪শ ৭৫টি বালির বস্তা ও ২৮টি গাছ পানিতে তলিয়ে গেছে। উত্তরভাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ শাহিদুজ্জামান ছালিক জানান, কালাইরগুলের ভাঙ্গন মেরামত করা হয়েছে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে। এখন সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চলাচল করছে। তবে আরো কিছুটা কাজ রয়ে গেছে। এগুলো রাত্রে সম্পন্ন হবে।
মৌলভীবাজার পানিউন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহি প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানান, মনু নদীতে পানি কমে বিপদসীমার ২১০ সেঃমিঃ নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আর কুশিয়ারা নদীতে পানি বেড়ে বিপদসীমার ২৫ সেঃমিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কালাইরগুল বাঁধে কি পরিমান বস্তা ভর্তি বালি লেগেছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবদককে জানান, সাড়ে ষোল হাজার বস্তা লেগেছে বাঁধ রক্ষায়।
মৌলভীবাজারে অগ্রণী ব্যাংকের উদ্যোগে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সদর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে আনুষ্টানিকভাবে এসব ত্রান বিতরণ করা হয়। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ব্যাংক কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান। সদর উপজেলা কর্মকর্তা(ইউএনও) মোঃ মনিরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যদেন অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহম্মদ শামস্ উল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকটির মহাব্যবস্থাপক (সিলেট সার্কেল) জাকিয়া বেগম,পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহজালাল, সিলেট সার্কেলের ডিজিএম মোঃ মশিউর রহমান,সিলেট পশ্চিম অঞ্চলের ডিজিএম মোঃ আজিজুল হক,সিলেট পূর্ব অঞ্চলের ডিজিএম মোঃ আশেক এলাহীসহ অনেকেই। অনুষ্ঠানের শুরতে স্বাগত বক্তব্য দেন মৌলভীবাজার অঞ্চলের এজিএম বিশ্বজিৎ দাস। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মৌলভীবাজার শাখা ব্যবস্থাপক ভজন চন্দ্র দাস, হবিগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম, মোস্তফাপুর শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ মর্তুজ আহমদ, ব্যাংক কর্মকর্তা দেবাশীষ বিশ্বাসসহ সিলেট ও মৌলভীবাজার অঞ্চলের শতাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ।
পরে ৭শ জন বন্যার্তদের মাঝে ত্রানসামগ্রী তুলে দেন অতিথিরা। পরের দিন থেকে কমলগঞ্জ উপজেলায় ৪শ, কুলাউড়ায় ৪শ ও রাজনগর উপজেলায় ৫শ জন বন্যার্তসহ মোট আড়াই হাজার গরীব-দুস্থদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ প্রতিক্রয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির মৌলভীবাজার অঞ্চলের এজিএম বিশ্বজিৎ দাস। ত্রান সমাগ্রীর মধ্যে ছিল ৫ কেজি চাল, ১কেজি তেল,১ কেজি আলু,২ কেজি ময়দা,১টি লুঙ্গি, ১টি বালতি, ৫টি ওরস্যালাইনসহ আরো এক প্যাকেট মোমবাতি।
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার কুশিয়ারা নদী পাড়ে বন্যা কবলিতদের মাঝে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেছে লণ্ডন ভিত্তিক টিভি ‘চেনেল এস’। রোববার বিকেলে উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামে ইক্বরাহ ইন্টারন্যাশনাল ইউকে-এর আয়োজনে শতাধিক বন্যা কবলিতদের হাতে ত্রান সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, শাহমোস্তফা একাডেমীর প্রিন্সিপাল মোঃ ইয়ামীর আলী, সাংবাদিক আব্দুল ওয়াদুদ, জোবায়ের আহমদ, ফারুক উদ্দিন, ফারুক মিয়াসহ অনেকেই।
চ্যানেল এস ইউকে-এর এমডি এসময় বলেন, আপনাদের এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের চিন্তা আমাদের রয়েছে। সকলের সহযোগীতা পেলে ওই এলাকার গরীব-অসহায়দের ঘর-বাড়ি তৈরি করে দিতে আমরা প্রস্তুত আছি।