মৌলভীবাজার সংবাদদাতা।। মৌলভীবাজারে শহর থেকে এখন গ্রামাঞ্চলে টার্কি মুরগী পালন বিস্তৃত হচ্ছে। পর্যটন জেলা ও চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজারে টার্কি মুরগী পালনে এখন অনেকেই এগিয়ে আসছে। একসময় শুধু শহরে সৌন্দর্য্য বাড়ানোর শখেরবসে পালন করা হতো এ জাতের মোরগী। এখন টার্কি মোরগীর ফার্ম গড়ে তোলে গ্রামাঞ্চলে অনেক বেকার যুবক-যুবতি স্বাবলম্বী হয়েছেন। মৌলভীবাজারে ২০১৫-১৬ সালে প্রথম প্রথম এ জাতের মুরগী পালন শুরু হয়। এ জেলায় মানুষ বাড়ার সাথে সাথে মাংসের চাহিদা বেড়েছে। বাড়তি সে চাহিদা পূরণে এসব মোরগী এখন অনেকেই কিনে খাচ্ছেন।
বর্তমানে গ্রাম-গঞ্জে টার্কি মুরগী প্রতি কেজি ৪শ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। স্থানীয় খামারীরা জানান, ৩-৪ মাস যত্নসহকারে পালন করলে প্রতিটা ওজনে ৯-১০ কেজি হয়ে থাকে। বাজার থেকে বাচ্চা মোরগী এনে দেড়-দুই মাস খাবার খাইয়ে একটু বড় করার পর এরা নিজেরাই গ্রামাঞ্চলের সবুজ ঘাস খেয়ে প্রাকৃতিকভাবে বড় হয়ে উঠে। এই সময়ে গরু-ছাগলের সাথে এদের দিকে খাটনি দিলেই অল্পতে লাভমান হওয়া যায়। জেলার অন্যতম বৃহৎ হাওর কাউয়াদিঘী অঞ্চলের রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের আব্দুল হাকিম, রাহুল দাশ, আব্দুল খালিক, সামু আহমদ, তারেক আহমদ, ইমাদ ও আলম আহমদ শখের বসে মুরগি পালন শুরু করলেও এখন অনেকেই বানিজ্যিকভাবে পালন করছেন।
টার্কি খামারী আলম আহমদ জানান, প্রথমে তিনি এক মাস বয়সী ১৬টি টার্কি বাচ্চা কিনে পালন শুরু করেন। এখন প্রতিটার ওজন প্রায় সাড়ে চার কেজি। এগুলো বিক্রি করে ফের কিনে পালন করবেন তিনি। আলম আরো বলেন, এ জাতের মুরগি পালনের নিয়ম না জানার কারণে কিছুটা পিছিয়ে আছেন তিনি। সরকারের তরফ থেকে এ পেশায় সহযোগীতা করা হলে তারা আরো উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে যেতে পারতেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, টার্কি মুরগি বিদেশি প্রজাতির একটি প্রাণী। বাংলাদেশে এই টার্কি মুরগির চাষ শুরু হয় ২০১০ থেকে ২০১১ সালে। বর্তমানে বাংলাদেশে খাদ্য তালিকায় টার্কি মুরগি অন্তর্ভুক্ত
করা হয়েছে। টার্কি মুরগির রোগবালাই অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কম হয়ে থাকে। একটি টার্কি মুরগির ওজন হয়ে থাকে ৮ থেকে ৯কেজি। একটি টার্কি বছরে ১শ’ থেকে ১২০টি ডিম দিয়ে থাকে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রুহুল আমীন বলেন, টার্কি মুরগী পালন খুবই সহজ। এদের রোগ বালাই কম। এরা ঘাস খেয়ে বড় হয়। এখন সব যায়গায় এ জাতের মুরগী পালন বেড়েছে। এ মুরগীর বাজার তৈরি হতে শুরু করেছে। মানুষ এখন এ মুরগী খেতে পছন্দ করে। তিনি আরো বলেন, সরকার টার্কি মুরগী পালনে সহযোগীতার সিদ্ধান্ত নিলে আমরা খামারীদের সহযোগীতা করবো।