মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা।। দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকি ও কাউয়াদীঘি অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে প্রবল ঝড় হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে ২শ ২০ হেক্টর পাঁকা বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে ক্ষতির এ পরিমান জানা গিয়েছে। তবে সাধারণ কৃষকদের মতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরো বেশি।
এ মৌসুমে ২শ ২০ হেক্টর বা ১ হাজার ৭শ ৬০ কিয়ার বোরো জমিতে গড়ে প্রতি কিয়ারে ১২মন( ৩ কাটা) ধান ফলন হয়েছে। ১২মন(৩ কাটা) ধানের দাম ৭ হাজার ২শ টাকা হলে মোট ফলনের পরিমান ২১ হাজার ১২০ মনের হিসেবে ক্ষতির পরিমান দাড়িয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ ৭২ হাজার টাকার। গেল শনিবারের কাল বৈশাখীর ঝড় ও শিলার আঘাতে এসব জমির পাঁকা বোর ধান শীষ থেকে ছিটকে মাটিতে পড়ে যায়। ওইদিন দুপুর দুটায় হঠাৎ করে আসা ঝড়ের কবলে পড়ে মারাত্বক আহত হন মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা জুড়ে অবস্থিত কাউয়াদীঘি হাওর ও পুকুরিয়া বিলের শত শত কৃষক।
ওইদিনের শিলা বৃষ্টিতে রাজনগর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ফসলের মারাত্বক ক্ষতি হয়। এছাড়াও ওই এলাকার ঘর-বাড়ি, বিদ্যুৎ লাইন ও গাছ-পালারও ব্যাপক ক্ষতি হয়। উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের সুনামপুর, উমরপুর, সুরিখাল, সুপ্রাকান্দি, সাফাতপুর, রুস্তুমপুর, মুন্সিবাজার ইউনিয়নের আরো কয়েক এলাকাসহ উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের কাউয়াদীঘি হাওরের গোলাইয়া, ঘাগটি বিল, মাজরবান্দ বিলে শিলার তান্ডবে প্রায় ২ হাজার কিয়ারের ২৮, ২৯ ও ১৪ জাতের ধান ছিটকে পড়েছে বলে এলাকার কৃষিজীবীগন দাবী করেছেন। গোলায় পাঁকা ধান তুলতে না পেরে আগামীদিনের চিন্তায় কৃষকেরা একেবারে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
ফতেপুর ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামের জাকির হোসেন এ সাংবাদিককে জানান, শিলে তার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিনি ১শ কিয়ার জমি চাষ করেছেন। এসব জমি চাষ করতে তার ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তার পুরো ক্ষতির পরিমাণ ২১ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রাসরণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শাহজান এ সাংবাদিককে জানান, শনিবারের শিলাবৃষ্টিতে শুধু রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ, মুন্সিবাজার ও ফতেপুর ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এ কথা ঠিক। আমাদের কর্মকতারা সরেজমিনে হাওরে ঘুরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আলামত পেয়েছেন। এই ৩টি ইউনিয়নে ২শ ২০ হেক্টর জমির বোরো ধানের ক্ষতি সাধন হয়েছে।