মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। গুজারাই, সাবিয়া, বলিয়ারভাগ, বালিকান্দি, ঢেউপাশা, গদাধর, মমরুজপুর ও আশিয়া এ ৮টি গ্রাম মৌলভীবাজার জেলা শহর সংলগ্ন মনুনদী লাগুয়া উত্তর তীরে অবস্থিত। এই ৮টি গ্রামের জনসংখ্যা অন্যুন ১০হাজার। এ জনসংখ্যার মাঝে চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ী ও ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ন্যুনতম পক্ষে ৫হাজার। এ পাঁচ হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত জেলা শহরে আসা-যাওয়া করে থাকেন। জেলা শহরের সাথে তাদের প্রাত্যহিক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম মনুনদীর পশ্চিমবাজার আখড়া নিকটস্ত সাবিয়া খেয়াঘাট। প্রাচীনকালের সেই নবাবী আর রাজা-বাদশাহী আমলের নৌকা দিয়ে খেয়াপারাপারের ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থায় প্রাচীনত্ব আছে, আছে ঐতিহ্য এবং ভিন্ন এক যাতায়াত স্বাদ। এ যেমন ঠিক তেমনি এ খেয়া ব্যবস্থায় গতি নেই, নিরাপত্তা নেই। জীবনের ঝুঁকি প্রতি পদে। বিশেষ শুষ্ক মৌসুম ছাড়া সারা বছরই খুবই ঝুঁকি নিয়ে এ আদমসন্তানদের পারাপার হতে হয়। বিশেষকরে বর্ষা মৌসুমে জীবনের ঝুঁকি ভয়াবহ হয়ে উঠে। তখন প্রবল খরস্রোতা মনু নদী হয়ে ওঠে অধিক বিপজ্জনক। এসময় বয়োবৃদ্ধ, মহিলা, স্কুলের শিশু-কিশোর ছাত্র-ছাত্রীসহ সব পেশার মানুষকে জীবনের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতে হয়।
শহরের এই আখড়া খেয়াঘাটে নৌকায় খেয়াপারাপার তুলে দিয়ে এখানে সেতু নির্মানের দাবী এলাকার মানুষের বহুদিনের। অন্ততঃ পাকিস্তানী আমলের একেবারে শেষদিক ধরে নিলেও মানুষের এ দাবী ৫০বছরের পুরানো একটি দাবী। এ দাবী পূরণে জননেতা থেকে পদস্ত আমলা কেউই কোনদিন না বলেননি। কিন্তু শুনতে যতই খারাপ লাগুক সত্য হলো যে আজো সাধারণ মানুষের সে দাবী কেউ পূরণ করেননি। আজো এসব গ্রামের কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীসহ সকলকে বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই খেয়াঘাট ব্যবহার করতে হয়।
জানা যায়, মৌলভীবাজার পৌরসভার আওতাধীন এই খেয়াঘাটটি স্বাধীনতার পর থেকেই নিয়মিত লিজ দেয়া হয়, যা থেকে বেশ বড় অংকের আয় হয়ে থাকে কেন্দ্রীয় সরকার ও পৌরসভার। কিন্তু নিতান্ত দুঃখের বিষয় যে, নদীর ঐ স্থানে কোন সেতু বা অন্ততঃ পায়ে চলার ছোট-খাটো আকারের কোন পায়েহাটাসেতু আজ অবধি নির্মাণ করা হয়নি। অথচ খেয়াঘাট বন্দোবস্তবাবৎ বিগত ৫০ বছরে নিশ্চয়ই সরকারের আয়ে একটি বড় অংকের টাকা জমা হয়েছে। সেই টাকার সাথে আরো কিছু মিলিয়ে এখানে একটি পায়েহাটার ছোট সেতু নির্মাণের দাবী নিশ্চয়ই অহেতুক কিছু নয়। এ না হলে আমাদের অগ্রগতি দৃশ্যমান হয় কি দিয়ে?
তাই এখানে একটি পায়েচলা সেতু বানানো অতি জরুরি এবং এ বিষয়ে বিলম্ব না করে কর্তৃপক্ষের সময়োপযোগী পদক্ষেপ, এলাকাবাসীর জোর দাবী।