1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
সঠিক হোক আর ভুল হোক দীর্ঘজীবনে যে যা রপ্ত করে সেখান থেকে বের হয়ে আসা যায় না - মুক্তকথা
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৯:৩২ অপরাহ্ন

সঠিক হোক আর ভুল হোক দীর্ঘজীবনে যে যা রপ্ত করে সেখান থেকে বের হয়ে আসা যায় না

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন, ২০১৭
  • ২৬৬ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ।।

লন্ডন: আমাদের এক সুপরিচিত জ্যেষ্ঠ একসময় অধ্যাপনা করেছেন (এখন আছেন কি-না জানিনা) খুব সুন্দর করে তার ফেইচবুকে লিখেছেন। আমাদের দেশের প্রচলিত এক বনেদি ঘরের সন্তান তিনি। লিখেছেন দুনিয়া বদলে যাচ্ছে। প্রমাণ হিসেবে তার নিজের জ্যেষ্ঠভগ্নির মেয়ে ও নাতনীর কথা উল্লেখ করে তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন যে ওইগুলি ছিল ধর্মের নামে কট্টর মানসিকতা। তার লেখায় অতীত দিনের চিত্র বাঙ্খময় হয়ে নিজের চোখের সামনে কেঁপে উঠেছে বার বার। আমরা তো বহু দূরের, অনেক আধুনিক লেখকের চেয়েও শক্তিশালী লেখা। লেখা খুবই সংক্ষিপ্ত আর সকলে বুঝতে পারে এমনি সাদা-মাটা কথায় লিখা। লেখায় গতি আছে। পড়তে ইচ্ছে হয়। অত্যন্ত সংক্ষেপে সত্য কিছু কথা তিনি লিখেছেন। লিখেছেন সেই পঞ্চাশ দশকের কথা। তার বোন যখন মেট্রিক পাশ করেন তখন সে সময়ের অনেক ধর্মীয় বোদ্ধারা তাঁর বাবাকে, মেয়েকে যে টুকু ইংরেজী পড়িয়েছেন তার জন্য আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে উপদেশ খয়রাত করেছিলেন। তার সেই বোনের মেয়ে আজ অধ্যাপক আর তস্য মেয়ে মানে তাঁর নাতনী একজন উচ্চ পদস্ত ‘মাইক্রবায়োলজিস্ট’।
দিন বদলের নমুনার উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি খুবই সাবলিলভাবে, সকলেরই মনে কাতরভাব মিশ্রিত পুলক অনুভুত হয় এমন একটি বিষয়কে তুলে ধরেছেন।
দিন বদলের নমুনার তিনি উদাহরণ দিয়েছেন। শুনে পুলকিত হওয়া যায় আবার একটি কাতরভাবও মনে কাজ করে। প্রচ্ছন্নভাবে অতীত স্মৃতিপটে ভেসে উঠে এমন একটি নান্দনিক বিষয়কে তুলে ধরেছেন। অবশ্যই নান্দনিক আমার কাছে। অত্যন্ত সংক্ষেপে বলতে গেলে বলা যায় একটি ‘স্মৃতিকাতর বিষয়’কে তুলে এনেছেন সুনিপুণভাবে। তার কথিত ওই অতীত কাহিনীর বিশেষ অবস্থার সাথে আমার সম্পৃক্তি খুব গভীরভাবে। তিনি উদাহরণ দিয়েছেন অতীত পরদা-পুশিদার বিষয়ে। তার নিজের কাহিনী বিবৃত করেছেন। তিনি তাঁর ছোটবেলায় মায়ের সাথে আত্মীয়বাড়ীতে যেতেন। তখন পর্দার খুব কড়াকড়ি। মেয়েদের শুধু বোরকা পড়লেই হবে না। রিক্সায় চড়ে গেলে সেই রিক্সাকে বাড়তি আর একটি কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে নেয়া হতো। লিখেছেন, সে কি শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা ছিল! আমরা পাঠকদের কিছুটা বিনোদিত করার লক্ষ্যেই মনে হয় খুব মজা করে লিখেছেন- “আমি যখন ছোট ছিলাম তখন মেয়েদের বুরকা পরলেই যথেষ্ট হত না। রিকশাকে বড় কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে রাখা হত। কী শ্বাস রুদ্ধকর অবস্থা! মনে আছে মায়ের সাথে ঐ পেঁচানো রিকশার পা রাখার জায়গায় বসে আমি পেঁচানো কাপড়ের বাইরে কচ্ছপের মত মাথা বের করে রাখতাম। পর্দার ব্যাপারে সেই কড়াকড়ি বা বাড়াবাড়ি এখন আর দেখা যায় না। দিন বদলেছে।”
দিন যে বদলাচ্ছে তার উদাহরণ টানতে গিয়ে তিনি আরো লিখেছেন। খুব সত্য কথাগুলোই লিখেছেন। তাঁর ওই কাহিনীর কথাগুলো আমরাও শুনেছি প্রচুরভাবে বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে। মেয়েদের বাইরে যাওয়া কোন ভাবেই সঠিক নয়। এটি নাফরমানির চরম! শুধু কি তাই। আমার মনে আছে আমাদের ছোটবেলায় গ্রামে আমাদের মাইক বাজাতে দেয়া হতো না। সেটাও ছিল আরেক নাফরমানী। রেডিও শুনা, টিভি-সিনেমা দেখা নাজায়েজ এখনও তো বলা হয়। এই সেদিন ১৯৬৭ সালে যখন চাঁদে রকেট গেল তখন আমাদের শহরে ছোটখাটো হলেও ভয়ঙ্কর এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। জনৈক মুরব্বী সম্ভবতঃ মসজিদ ওয়ালাদের উচকানীতে চৌমুহনার পয়েন্টে দাঁড়িয়ে আমেরিকাকে সেকি গালাগাল। আর সাধারণ মানুষদের, চিৎকার করে নাসারাদের এসব মিথ্যা প্রচারণা বিশ্বাস না করার আহ্বান! তার বক্তব্য, যে চাঁদ দেখে মুসলমানেরা রোজা রাখে ফিরিঙ্গি কাফিরের বাচ্ছা বলে কি-না সে চাঁদে চলে গিয়েছে, এর মতো মিথ্যা এবং নাফরমানী কতা আর কি হতে পারে! শেষে তাকে ডজনখানেক লোক মিলে ধরে সেদিন আটকিয়েছিলেন। 
আর লন্ডন আসা? সেওতো ছিল নাজায়েজ। শহরের মাদ্রাসার বার্ষিক ওয়াজে প্রকাশ্যে লন্ডনের বিরুদ্ধে বিষোদগার শুনেছি। ওয়াজে বলা হয়েছিল নাছারার দেশ। ওখানে গেলে ধর্ম থাকবে কি করে! লন্ডনের রেস্তোরাঁর মদ বিক্রি হারাম এ কথাতো এখনও শুনি। অথচ এই লন্ডনে আসার জন্য কোন মৌলানা সাহেব না বলবেন! আর যারা এসেছেন হাজারো মিথ্যা বলে থাকার চেষ্টায় এখনও মিথ্যার বেশাতি চালিয়ে যাচ্ছেন। আর লন্ডনের রেস্তোরাঁর মদ বিক্রির উপার্যনের টাকায় সারা ভূ-ভারতের কোন জায়গায় মসজিদ মাদ্রাসা হয়নি কেউ বলতে পারবেন!
যার কথা বলছিলাম, তিনি যেহেতু তবলীগ জামাতের সক্রিয় ও নেতৃস্থানীয় মানুষ তাই লিখতে গিয়ে ‘তবলীগের মুরব্বী’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। লিখেছেন- “পনের বিশ বছর আগে তবলীগের মুরব্বীরা বলতেন, “খবরদার মেয়েদের বাইরে আনা যাবে না। তা হবে আগুণ নিয়ে খেলা। তোমার মাধ্যমে যেমন চাউল ডাইল তোমার ঘরে যায় তেমনি তোমার মাধ্যমে দ্বীন তোমার স্ত্রী-কন্যার কাছে পৌঁছবে।” তবে সাম্প্রতিক কয়েক বছর ধরে মুরব্বীদের মত বদলেছে। এখন সাথীদের প্রতি জোর তাগিদ হচ্ছে মাস্তুরাত অর্থাৎ স্ত্রী, কন্যা ও মা কে নিয়ে তবলীগে বেরুতে হবে। অতএব দিন বদলাচ্ছে, বদলাতে বাধ্য।”
এর পরই তিনি লিখেছেন-“আশা করি সবাই এক মত হবেন যে, ইসলাম সব যুগের জন্য উপযোগী এবং মঙ্গলময়। আমাদের মানসিকতাই বিভ্রাট ঘটায়।”
শ্রদ্ধেয় জ্যেষ্ঠ, শুধু তবলীগের মুরব্বী নয় ধর্মের নামাবলী পড়া মৌলোভীরা আর এদের সাথে বুঝুক না বুঝুক অধিকাংশ বয়স্করাই তাই বলতো। আপনি সঠিকই বলেছেন দিন বদলাচ্ছে এবং বদলাতে বাধ্য। আজকে যে আমি, কালকের আমি সেই আমি নই। আজ যে গাছটি ১ বছর বয়সের চারা, কাল সেটি একবছর একদিনের চারা। গতকালেরটি নয়। মানুষও যুগে যুগে বদলায়। ধর্মও বদলায়। ইসলামও বদলেছে। আরো বদলাবে। শুধু আপনারা বদলাবেন না। আপনারা বদলাতে চান না। কারণ সম্ভবতঃ একটিই, সঠিক হোক আর ভুল হোক দীর্ঘজীবনে যা রপ্ত করেছেন সেখান থেকে বের হয়ে আসা যায় না। আপনিও পারবেন না। কিন্তু কোনদিন তা বলবেন না। এটাই সত্য।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT