প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ।। সন্তোষ রবিদাস। চা বাগানের দরিদ্র চা শ্রমিক পরিবারের সন্তান। পরিবারের এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। বাবা প্রয়াত সত্য নারায়ণ রবিদাস। মা চা শ্রমিক কমলি রবিদাস। নিজের টিউশনির আয়ে চলে সন্তোষের লেখা পড়ার ব্যয়। সে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। পিতৃহীন পিছিয়ে পড়া চা জনগোষ্ঠীর সন্তান সন্তোষের ঠিকানা কমলগঞ্জের শমশেরনগর চা-বাগান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন ইউনিয়ন অর্থাৎ ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সমাজ সেবা সম্পাদক পদে অংশ নিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে সন্তোষ রবিদাস। নির্বাচনে অংশ গ্রহনের সকল প্রকার কাজ সম্পন্ন করে এখন সে নির্বাচনী প্রচারনায় ব্যস্ত।
সমাজে অনেকটা পিছিয়ে পড়া চা শ্রমিক সন্তানরা বুঝে একটি ভালো পরিবেশে আসতে কতটুকু কষ্ট ও সময় লাগে। এ কথা উল্লেখ করে সন্তোষ রবিদাস জানায় সে খুব অনুভব করে এই কষ্টগুলো। সে সেখানে থেমে থাকেনি, এই নান্দনিক পরিবেশের মাথায় উঠতে পেরেছে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়ে। সন্তোষের ইচ্ছা সে লেখাপড়া করে আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। যারা তার মতো অবহেলিত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী থেকে উঠে এসেছে এই সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে, সন্তোষ তাদের জন্য কিছু একটা করতে আগ্রহী আর এ লক্ষ্যেই সে ডাকসু নির্বাচনে নাম লিখিয়েছে।
সন্তোষ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ আবাসকি হলের ছাত্র। সে বিশ্ববিদ্যালয় চা-ছাত্র সংসদের আইন বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ রবিদাস ছাত্র পরিষদের দপ্তর সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আল্যামনাই-এর একজন স্বেচ্ছাসেবী সদস্য। ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে সম্মানে মাষ্টার্স মোহন রবিদাস ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন, সন্তোষ মেধায় যেভাবে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে লেখা পড়ার সুযোগ করে নিয়েছে, আচরণে ও তার কর্মে সে আসন্ন ডাকসু নির্বাচনেও জয়লাভ করবে। এটা তাদের দৃঢ় বিশ্বাস।