মুক্তকথা সংবাদ।। খালিফ মির্জা মাসরুর আহমদ নামের একজন মুসলিম নেতা বলেছেন, আইএস বধু শামিমা বেগমকে বাংলাদেশ নিয়ে নিলে এটি হবে মহানুভবতার এক মহান উদাহরণ। শামিমা বেগমের বৃটিশ নাগরীকত্ব বাতিল করে দেয়ার পর পরই এই মুসলিম নেতা বিশ্বের সকল মুসলমান অধ্যুষিত দেশের প্রতি শামিমাকে গ্রহন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। আহ্বানে তিনি বলেছিলেন যেকোন একটি মুসলমান দেশ শামিমার প্রতি মহানুভবতা দেখাতে পারে তাকে গ্রহন করে। গতকাল শনিবার ৯ই মার্চ এ খবর প্রকাশ করেছে লন্ডনের বহু সংবাদ মাধ্যম।
দক্ষিন-পশ্চিম লন্ডনের মর্ডেন শহরে অবস্থিত বায়তুল ফুতু মসজিদে আয়োজিত এক শান্তি সম্মেলনে যোগ দেয়ার আগে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে মিঃ আহমদ বলেন, বৃটিশ সরকার শামিমার নাগরীকত্ব বাতিল করে দেন তা’হলে অন্য যেকোন মুসলিম দেশের উচিত হবে তাকে গ্রহন করে নেয়া। তার পিতা-মাতা যেহেতু বাংলাদেশের সে হিসেবে প্রথমেই বাংলাদেশের উচিৎ তাকে বাংলাদেশী হিসেবে গ্রহন করা। বাংলাদেশ অবশ্য এ বিষয়ে নেতিবাচক জবাব দিয়েছে।
শামিমার শিশুপুত্রটি মারা যাওয়ার খবরে লন্ডনের প্রাক্তন মেট্রোপলিটান প্রধান পুলিশ তত্ত্বাবধায়ক(২০০৯-১৩) ডাল বাবু বৃটিশ সরকারকে দায়ী করে বলেছেন, শামিমা যা করেছে তার জন্য সরকার দায়ী। আমরা শামিমার পরিবারকে আগে জানাতে ব্যর্থ হয়েছি যে তারা কয়েকজন নিরপরাধ কিশোরী আইএস এ যোগ দিতে সিরিয়া যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়াও শামিমা যে মাত্র ১৫বছর বয়সে একটি সন্ত্রাসী দলে যোগ দিতে লন্ডন থেকে পলায়ন করেছিল, সে তার ১৫দিনের বাচ্চাসহ ফিরে আসার জন্য কাকুতি-মিনতি করেছে। কিন্তু স্বরাষ্ট্র সচিব সে বিষয়ে সামান্যতম সহানুভুতি দেখাতে সমর্থ হননি কেবল মানুষের নানামুখি সমালোচনার ভয়ে। উল্টো তিনি তার পাসপোর্ট বাতিল করে দেন।
একটি ডাক্তারী বিবরণের উল্লেখ করে বিবিসি বলেছে শিশুটি নিউমুনিয়ায় মারা গেছে। এর আগে শামিমা তার শিশু সন্তানটির জীবনের ব্যাপারে খুবই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল এবং বলেছিল-“এই ক্যাম্পগুলো শিশু লালন-পালনের আদৌ কোন উপযুক্ত স্থান নয়।” এর আগে তার পরিবারও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জাবেদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পূনর্বিবেচনার আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রক্ষনশীল দলের মন্ত্রীকে লিখেছিল, শামিমাকে তার বাচ্চা নিয়ে দেশে নিরাপদে আসার অনুমতি দেয়ার জন্য।
গতকাল শনিবার সরকারের বিরুধী পক্ষের নেতৃ ডায়না এবোট বলেছেন, সরকার শামিমার সাথে লজ্জ্বাস্কর ব্যবহার করেছে। মৃত্যুজনিত দুঃখজনক দূর্ঘটনাটি এড়ানো সম্ভব ছিল। তিনি বলেন, যদি মা ও শিশুকে দেশে আনা হতো তা’হলে শামিমাকে বৃটিশ আইনের মোকাবেলা করতে হতো এবং শিশুপুত্রটি হয়তো বেঁচে যেতো।
লিবারেল ডেমোক্রেট দলের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র এড ডাবে বলেছেন ছেলেটিকে স্মরণ করা হবে যদি আদালত অবশেষে বলে যে একজন বৃটিশ নাগরীককে রাষ্ট্রহীন করার কাজে মিঃ জাবেদের ভূমিকা বেআইনী ছিল। তিনি আরো বলেন, ঘটনার দুঃখজনক অবস্থায় আমরা অনেকেই ভীত হয়েছি এই দেখে যে একজন বৃটিশ নাগরীক ও একটি বৃটিশ শিশুর বিষয়ে বৃটিশ স্বদেশ মন্ত্রী তার সঠিক দায়ীত্ব পালন না করে হাতধুয়ে ঘরে উঠে পড়লেন।
রক্ষনশীল দলের চেয়ারম্যান ব্রান্ডন লেউইস, সচিব(আমাদের ভাষায় মন্ত্রী) জাবেদের পক্ষ নিয়ে বলেন, একজন বৃটিশ স্বরাষ্ট্র সচিবের দায়ীত্ব তার দেশের মানুষকে নিরাপদ রাখা। সূত্র: ষ্ট্যান্ডার্ড