1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
সাত সাগর আর তেরো নদীর পাড়ে - মুক্তকথা
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন

সাত সাগর আর তেরো নদীর পাড়ে

হারুনূর রশীদ
  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৯৩১ পড়া হয়েছে

সে ১৯৪৭ সালের কথা। বৃটিশদের হাত থেকে সবেমাত্র ধর্মভিত্তিক ভারত-পাকিস্তান নামে ভাগ হয়ে দু’টি দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু তখনও দিল্লীর সুলতানী আর মোগলিয়ানার প্রভাব দেশ থেকে একেবারে উঠে যায় নি। উঠেতো যায়ইনি বরং ফার্সী প্রভাবের সাথে যোগ হয়েছে নতুন করে ইংরেজী ভাষা ও সংস্কৃতির প্রভাব। 
ফলে একমাত্র উর্দূ আর হিন্দী ভাষা ছাড়া বাদবাকী ভাষা আর সংস্কৃতির অবস্থা লেজেগোবড়ে!
 তখনও গ্রামে গঞ্জে বৃদ্ধ বয়সীদের মুখে ফার্সী কথার বুলি আড্ডার আকর্ষণ ছিল। আমাদের অঞ্চলে গ্রামীন আড্ডায় ইংরেজী তেমন স্থান করে নিতে পারেনি। বরং ফার্সীর দখলটাই ছিল চোখে পড়ার মত।
এখন যেমন হাটে-ঘাটে-মাঠে মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণে মানুষ পাগলপারা তখনও অবস্থা অনেকটা এখনকার মতই ছিল। ইংরেজী স্কুল নির্মাণের তাগাদা দেশের মুসলিম সমাজে কখনই তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি। স্যার সৈয়দ আহমদের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনও আমাদের মানুষের মাঝে কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি। উল্টো মানুষ বুঝতো সার সৈয়দ ইংরেজদের হয়ে এসব কাজ করছেন।
এমন যখন গোটা পূর্ববাংলার মুসলিম জনগোষ্ঠির মনের ভাবনা ঠিক ওই সময়ে সিলেটের দক্ষিনের আমাদের এই ছোট্ট অঞ্চলে, যার নাম বৃটিশরা দিয়েছিল ‘দক্ষিণ সিলেট’ বলে, মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা অর্থনৈতিক অবস্থা কি রূপে ছিল তা আজ সঠিক করে বলা খুবই কঠিন। ইতিহাস বেভুল আমাদের পূর্বপুরুষেরা তেমনভাবে কিছু লিপিবদ্ধ করে যাননি। যা আছে তা অপ্রতুল।
 
সময়ের এমন এক সন্ধিক্ষনে দক্ষিণসিলেট তথা বর্তমান মৌলভীবাজারের সমাজ ও সংস্কৃতির অঙ্গনে পঞ্চাশ দশকের সূচনালগ্নে যাদের পদচারণা ছিল উল্লেখযোগ্য তাদেরই একজন হলেন শ্রী রাইনগর গ্রামের মৌলানা মুনির উদ্দীন আহমদ।

দেখুন তো বয়সের ভারে নুব্জ কীর্তিমান এই মানুষটিকে চেনা যায় কি-না?
তিনি আর কেউ নন, “সাত সাগর আর তেরো নদীর ওপাড়ে” বসবাসকারী সকলের প্রিয় মানুষ জালাল উদ্দীন আহমদ

 

 ছবি: মুক্তকথা
যতদূর জানা যায়, মৌলানা মুনির উদ্দীনের জন্ম ১৯০৬সালে। মাস আর জানা যায়নি। মৌলানা মুনির উদ্দীনের বাবা ছিলেন একজন মুন্সি। মুন্সি আব্দুর রাজ্জাক বলেই তিনি এলাকায় সুপরিচিত ছিলেন। সে সময়ে তাদেরই মুন্সি বলা হতো যারা আদালতে অনেক সময় বাদী বা বিবাদীর পক্ষ হয়ে কাজ করতেন। আবার সময় বিশেষে বিচারকের আসনেও বসতেন। 
মৌলানা মুনির উদ্দীনের ২মেয়ে ও ৩ছেলে। ছেলে ৩জন এখনও জীবীত আছেন। একজন বাস করেন আমেরিকায় অপর একজন বাংলাদেশে এবং ভাইদের মধ্যে সকলের বড় যিনি জালালউদ্দীন আহমদ, বাস করেন লণ্ডনের নর্থউড হীল এলাকায়।

আলাপ হচ্ছিল জালাল উদ্দীনের সাথে। আমার খুব ইচ্ছে জালাল উদ্দীনকে নিয়ে কিছু লিখবো। জালাল উদ্দীনকে আমি পেয়েছি আমার কৈশোরে। তিনি তখন মৌলভীবাজার লোকেল বোর্ডের কেরানী। লোকেল বোর্ডের অফিস ছিল আমাদের বাসার লাগোয়া পূর্বদিকে। বোর্ড অফিসের ডিম্বাকৃতি পুকুরে আমরা দু’ভাই প্রায় প্রতিদিনই গোসল করতে যেতাম। আমাদের মত আরো অনেকেই এই পুকুরে এসে তাদের গোসলের কাজ সারতেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন পার্শ্ববর্তী বাসার প্রয়াত তাহির বক্স। আমরা তখন অনেক ছোট। অনেক সময় নেংটা হয়ে গোসলের কাজ সারতাম। জালালুদ্দীন আমাদের গোসলের নমুনা দেখে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসতেন। বোর্ডের কর্তামত ব্যক্তি হয়েও কোনদিন আমাদের তাড়াতে আসেন নি। নিরবে দেখতেন পানিতে আমাদের দূরন্তপনা। একা একাই হাসতেন। খুবই উপভোগ করতেন। গোসলের নামে পুকুরের পানিতে ডুব দিতে দিতে চোখ মুখ লাল হয়ে যেতো। তিনি খুব সোহাগ ভরে ডেকে নিয়ে বলতেন তোমাদের চোখ লাল হয়ে গেছে এবার বাসায় যাও। স্কুলে যেতে হবে না। একটু বড় হয়ে বুঝেছিলাম মানুষটি খুব মায়াবি ও দরদি হৃদয়ের একজন। সেই যে মনে তার দাগ কেটেছিল আজও তার সেই চেহারা আমার মনে জ্বল জ্বল করে। কোন আলাপে বৈঠকে নাম শুনলেই তাকে দেখার খুব ইচ্ছে হয়। বিলেতে এসে অনেক খুঁজা খুঁজির পর তার ঠিকানা সংগ্রহ করি। 
জালালুদ্দীনের কাছে আমি জানতে চাইলাম তার বাবা মুনির উদ্দীনের বিষয়ে।(চলবে)

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT