হারুনূর রশীদ।। দক্ষিন কোরিয়ার পূবের উপকূল থেকে সাগরের দিকে চাইলে বহু ‘ক্রুজ’ চোখে পড়বে। কিন্তু কোরিয়ার সাগর পারের শহর জিয়ংদংজিন-এ গেলে যে ‘ক্রুজ’ চোখে পড়বে তা অন্যদের চাইতে সবচেয়ে আলাদা আর আকর্ষনীয়। প্রায় সব জাহাজই যখন সাগরের উপরে ভাসছে, দেখবেন ‘সান ক্রুজ রিসোর্ট এবং প্রমোদতরী’ আর সকল জাহাজ বা ক্রুজ থেকে কমপক্ষে কয়েক ডজন ফুট উপরে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে এসেছে।
অবিশ্বাসের কিছুই নেই, বিশ্বের প্রথম হোটেল যা ‘ক্রুজ’-এর নমুনায় নির্মাণ করা হয়েছে এবং তার নির্মাণ শৈলী এমনই যে দূর থেকে মনে হবে পাহাড়ের অপাশে সাগরের উপর বিশাল আকৃতির একখানা ‘ক্রুজ’ দাড়িয়ে আছে। “সান ক্রুজ রিসোর্ট এন্ড ইয়াচ” নামের ওই ক্রুজাকৃতির হোটেল দালান লম্বায় ৫০০ ফুট এবং খাড়া বা উচ্চতায় ১৫০ ফুট। সাগরের মনোরম দৃশ্য সমৃদ্ধ ওই ক্রুজহোটেলে গ্রাহকদের জন্য ২১১টি কক্ষ রয়েছে; রয়েছে ৬টি রেস্তোরাঁ, একটি ভাষ্কর্য্য বাগান এবং একটি ভলিবল খেলার মাঠ। হোটেল ইমারতটি একটি খাড়া পাহাড়ের চূড়ায় এমনভাবে স্থাপন করা যে প্রথম দর্শনে দূর থেকে মনে হবে সত্যিকারের একটি ক্রুজ যেনো সাগরে ভেসে চলেছে। আর সাগর ভ্রমণকারীদের চোখের সামনে এ নমুনার একটি মনমুগ্ধকর চিত্র তুলে ধরতেই মনকাড়া এই স্থাপনা।
সাগরের কূল ঘেঁসে পাহাড়ের চূড়ায় অত্যাধুনিক ভাষ্কর্য্য শৈলীতে নির্মিত ‘ক্রুজ’ আকারের এই স্বাস্থ্যনিবাসটি তার নজরকাড়া আবেদনময়ী সাজ আর পাখীর ডাক ও সমুদ্রের গর্জন দিয়ে সাগর ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের সত্যি মুগ্ধ করে। নিবাসের কক্ষে বসেই নান্দনিকভাবে সাগরের গর্জন আর পাখীর কলকাকলি শুনতে পাবেন যা হৃদয়মনে এক অনন্ত আবেগময় ভাব জাগিয়ে দেয়। পাখীর ডাক আর সমুদ্রের গর্জন পুরো ইমারতের ভেতরে এমনভাবে লাগানো হয়েছে যে কোন অবস্থাতেই কেউ বুঝতেই পারবেনা এই আওয়াজ কৃত্তিম! সত্যি সত্যি সমুদ্র ভ্রমণে বের হলে যে শব্দধ্বনি কর্ণকুহরে এসে মনকে আন্দোলিত করে, ভ্রমণকারী গ্রাহকদের অবিকল সেই একই শব্দ আরো মধুরস্বরে শুনিয়ে এক নির্মল আনন্দদানের লক্ষ্যে এই ব্যবস্থা। সময়ের তালের সাথে মানুষের মনের মিল রেখে পর্যায়ক্রমিক দ্রাক্ষারস পানের বেশ কয়েকটি সরাইখানা রয়েছে যা একজন পর্যটকের সামনে জিয়ংদংজিন এর সুখ্যাত সূর্য্য উঠার বিস্তৃত চলমান এক প্রাকৃতিক দৃশ্য তুলে ধরবে। এ যেনো সাগরকে তীরে তুলে নিয়ে আসা। (অবসকোড়া অবলম্বনে অনুদিত)
বৃহস্পতিবার, ২৭শে পৌষ ১৪২৩