একজন ওমান প্রবাসীর সংবাদ সম্মেলন-
নিজ বাড়ির সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বাঁধা;
থানায় অভিযোগ দেয়ায় প্রাণনাশের হুমকি
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের আধকানী গ্রামে ওমান প্রবাসীর বাড়ীর সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বাঁধাদানের বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। থানায় অভিযোগ দেয়ায় প্রতিপক্ষের লোকজন প্রবাসীর পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে উল্লেখকরে নিজ ও পরিবার সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানের দাবী জানিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওমান প্রবাসী মোস্তাকার হোসেন প্রকাশ উকিল প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। গেলো বুধবার(১৭ জুলাই) বিকেলে আধকানী গ্রামে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওমান প্রবাসী মোস্তাকার হোসেন প্রকাশ উকিল বলেন, আধকানী গ্রামে আমাদের বসতবাড়ির জায়গাটি কিছু অংশ মায়ের হতে মৌরশী ও কিছু অংশ ক্রয়সুত্রে মালিক হয়ে প্রায় ৩০ বছর যাবত বসবাস করে আসছি। আমাদের পার্শ্ববর্তী মৃত আরিফ মিয়ার ছেলে রাজু আহমদ পারভীন গংরা দীর্ঘদিন যাবত আমাদের বসতবাড়ি দখল করার পাঁয়তারা করে আসছে। গত ৯ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আমার বাড়ির সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সময় রাজু আহমদ পারভীন, মিজান মিয়া, দেলোয়ার হোসেন সিবার, বাহার উদ্দিন ও ফরিদ মিয়া রাজমিস্ত্রীদের ভয়ভীতি দোখিয়ে তাড়িয়ে দেন।
খবর পেয়ে ওমান প্রবাসীর পরিবারের লোকজন বাঁধাদানের কারণ জানতে চাইলে বিবাদীরা জানায় জায়গার মালিক রাজু আহমদ পারভীন। এ সময় জায়গাটি কিছু অংশ মায়ের হতে মৌরশী ও কিছু অংশ ক্রয়সুত্রে মালিক বলে প্রবাসীর পরিবার জানানোর পরও বিবাদীরা তাদেরকে হামলা করার চেষ্টা করে। এ সময় তারা চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাদের একরকমের উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় গত ১৪ জুলাই ওমান প্রবাসী মোস্তাকার হোসেন প্রকাশ উকিল এর স্ত্রী মজিরুন বেগম বাদী হয়ে রাজু আহমদ পারভীনকে প্রধান আসামী করে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ওমান প্রবাসী নিজের ও পরিবারের জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের আশু দৃষ্টি কামনা করে বলেন, থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর বিবাদীরা নানাভাবে আমাদের হুমকি প্রদান করছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাজু আহমদ পারভীন জানান, আমার চাচাতো ভাই আবুল কালাম ওরপে কালাম বাবু ২০০৯ সালে তৎকালীন বাজার মূল্যে ৪ লক্ষ টাকা দরে ১৫ শতক ভূমি ২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আমার কাছে বিক্রি করেন। আমি ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা পরিশোধ করি। দলিল করার পর বাকী ১৫ হাজার টাকা পরিশোধ করার শর্তে কালাম বাবু আমাকে জমি বুঝিয়ে দেন। আমি ঐ ভুমিতে দীর্ঘদিন ধরে ফসল ফলিয়ে ভোগ দখল করতে থাকি। এদিকে জমির দলিল করে দেয়ার জন্য কালাম বাবুকে তাগাদা দিলে ভুমির কাগজে দাগে ভুলের কথা বলে দলিল সম্পাদন হচ্ছেনা, দাগ সংশোধন করার পর দলিল সম্পাদন করবে বলে জানান। আমার ক্রয়কৃত অংশে সীমানা প্রাচীর করলে আমি বাঁধা দেই। টাকা দিয়ে জমি কিনে এখন টাকা ও জমি হারিয়ে সর্বশান্ত হওয়ার পথে। আমি প্রশাসনের কাছে সু-বিচার প্রার্থনা সহ জানমালের নিরাপত্তার দাবী করছি।
কমলগঞ্জ থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই অনিক দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে যাই। জমিজমার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সালিশের মাধ্যমে সমাধান করার জন্য উভয় পক্ষকে শান্তনা দিয়ে আসি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: আবদাল হোসেন বলেন, আধকানী গ্রামে জমি নিয়ে একটা ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। রাজু আমার কাছে এসে বিচার প্রার্থী হলে ও অন্য পক্ষ এখনো আসেনি। আসলে বিষয়টি সালিশে দেখে দেয়া হবে। এখানে একটি প্রশ্ন আসতেই পারে যে সালিশে বিচার হবে না-কি গ্রাম আদালতে বিচার হবে?