নিপু কোরেশী।।
তৃতীয় বিশ্বের রাজনীতিতে একশ্রেণীর উচ্চাভিলাষী সুবিধাবাদী লুটেরা সমাজ সরকারের চারিপাশে সবসময়ই ঘুরপাক খায়। তা শুধু বাংলাদেশে নয় আমাদের মতো বিভিন্ন দেশে এই শ্রেণী বিদ্যমান। যেহেতু রাজনীতিকে পুঁজি করে সরকারের কিছু কিছু নেতৃবৃন্দ ব্যক্তিগত উন্নয়ন সাধনে লিপ্ত হোন তাই তাহারা একাজে পূর্ব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোকদের সহোযোগিতার স্মরনাপর্ণ হোন। এবং তখন কদর সৃষ্টি হয় পূর্ব উল্লেখিত সেই লুটেরা গোষ্ঠীর। তখনই ওদেরকে দলে বা দলের আশেপাশে আশ্রয়-পশ্রয় দেয়ার খেলা শুরু হয়।কারণ এই অসাধু সমাজটি দূর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রের সম্পদ লুটপাটের যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে সেটাকে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে দূর্নীতি পরায়ন চক্র কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন।তারই ধারাবাহিকতায় ক্ষমতার পট পরিবর্তনের সাথে সাথে আমরা নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি বা বলয়ের রাজনৈতিক অবস্থান বা দল পরিবর্তন পরিলক্ষিত করি।
বাংলাদেশে বাস্তব অর্থে বড় দুটি দল যেহেতু পরিবার কেন্দ্রিক সেহেতু নীচ থেকে পরিক্ষিত নেতৃত্ব বেড়িয়ে আসার যে গনতান্ত্রিক পদ্ধতি তাহা মূলত অকার্যকর। উপজেলা-জেলা-কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ মূলত সেই পরিবার গুলোর সবুজ সংকেতেই গঠিত হয়। আর এই সুযোগটাই গ্রহন করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে থাকা মধ্যস্বত্বভোগি কিছু অংশ। যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে আমরা বিগত জাতীয় নির্বাচনে বড় একটি রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মুখে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীদের তুলকালাম কাণ্ডের কথা উল্লেখ করতে পারি। এরকম অনেক উদাহরণ আমাদের অজানা নয়।
গতকাল থেকে আবার রাজনীতির মাঠ সরগরম হয়েছে সরকারের কোন কোন মহল কর্তক আশ্রয় প্রাপ্ত রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদকে ঘিরে। সাহেদ কোন দলের নয় “সাহেদরা শুধু ওদেরই “। সাহেদ সম্পর্কে যারা ওয়াকিবহাল আছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন এই ব্যক্তিটির সাথে বিগত চার দলীয় সরকারের ফায়দা লুঠা মামুন গংদেরও সখ্যতা ছিলো। এর সবকিছুই অংকের একই “ফর্মূলা” মাত্র। এবং এরই ধারাবাহিকতায় সাহেদ বর্তমান সরকারের কিছু কিছু মহলের আপনজন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সাহেদের অপকর্মের বর্তমান সময়ের দায়ভার কোনক্রমেই অন্য কোন দল বা সরকারের উপর চাপানোর কোন সুযোগ নেই। এটি ঘটেছে প্রধানমন্ত্রীর অগোচরে আঃলীগের উচু পর্যায়ে গড়ে উঠা সুবিধাবাদী শ্রেনীর তত্বাবদানে।
দলের ভিতরে শামীম,খালেদ,লোকমান,পাপিয়া ও সর্বশেষ সাহেদদের উত্থানের দায়ভার সরকার বা দলের উপরই বর্তায়। এতো মেগা-মেগা প্রজেক্ট নিয়ে সরকার যেখানে জাতীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন বা নিকট ভবিষ্যতে বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে তার সবটুকু অর্জনই আজ মলিন হয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র ঐ সকল গুটিকয়েক লুটেরা শ্রেনীর অপকর্মের জন্য।
যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন ওদেরকে বর্জন ব্যতীত সাধারণ জনগনের মনের কাছাকাছি পৌঁছা বা অবস্থান করা আদৌ অসম্ভব।
|