মৌলভীবাজার থেকে আব্দুল ওয়াদুদ।। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার পাল্লাতল চা বাগানে স্ত্রী, শাশুড়ি ও দুই প্রতিবেশীকে হত্যা করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক ব্যক্তি।
পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫ জনের লাশ উদ্ধার করে বড়লেখা থানায় নিয়ে এসেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্মল নামের ওই ব্যক্তি প্রথমে তাঁর স্ত্রীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এরপর ঠেকাতে আসলে প্রথমে শাশুড়ি ও পরে দুই প্রতিবেশীকে কুপিয়ে জখম করে। ঘটনাস্থলে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হলে খুনি নিজের ঘরে গিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে নির্মল চারজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। নির্মল ছাড়া চারজনই চা বাগানের প্রমিক। রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে লোমহর্ষক “ফোর মার্ডার’র” ঘটনা ঘটে। বড়লেখা থানা জানায়, অভিযুক্ত খুনি নির্মল মাদকাসক্ত ছিলেন। হত্যার শিকার চারজন হলেন নির্মলের স্ত্রী জলি, শাশুড়ি লক্ষ্মী, প্রতিবেশী বসন্ত ও বসন্তের মেয়ে শিউলি।
চা বাগানের একজন কর্মকর্তা জানান, নির্মলের বাড়ি এই এলাকায় নয়। বছর খানেক আগে ডলির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তারপর থেকে তিনি শ্বশুর বাড়িতেই বসবাস করে আসছিলেন। প্রতিবেশীরা জানান, ভোর ৫টার দিকে নির্মল ও ডলির মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে ডলিকে মারধর করতে থাকলে ডলি দৌড়ে অন্য ঘরে বাবা মায়ের কাছে চলে আসে। তখন নির্মল ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডলিকে কোঁপাতে থাকে। মেয়েকে রক্ষা করতে শাশুড়ি ছুটে আসলে তাঁকেও কোপায় নির্মল। এরপর বসন্ত ও শিউলি সেখানে আসলে দুজনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে সে। পরে চারজনের মৃত্যু হলে নির্মল নিজের ঘরে গিয়ে আত্মহত্যা করে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ ও বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াসিনুল হক। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াসিনুল হক রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় বলেন, পাল্লাতল চা বাগান থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ এখনো থানায় রয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, চার জনকে হত্যা করে খুনি নিজেই আত্মহত্যা করেছে। কোন কারণে খুনের ঘটনা ঘটেছে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, আপতত প্রাথমিক অনুসন্ধানে আমরা জানতে পেরেছি স্ত্রীর সাথে পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে।