জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি বলেন, গণতন্ত্রের সংগ্রামের নামে দেশকে চরম দক্ষিণপন্থা, ধর্মান্ধতা, প্রতিক্রিয়াশীলতার দিকে ঠেলে দেয়ার দেশবিরোধী রাজনীতি রুখে দেয়ার দায়িত্ব যুব সমাজের। তিনি বলেন, দল নিরপেক্ষ সরকারের শ্লোগানের আড়ালে শেখ হাসিনাকে উৎখাত করে অসাংবিধানিক সরকার আনার আসল উদ্দেশ্য মুখোশপড়া জামাত-বিএনপির সরকার অর্থাৎ ছদ্মবেশী জামাত-বিএনপি সরকার আনা।
তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের মোড়লদের মুখে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া আর কিছুই না। পশ্চিমারা তাদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে তাদের তাবেদার সরকার আনতে চাইছে। পশ্চিমারা প্রকাশ্যেই বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি পাকিস্তানপন্থী জামাত-বিএনপিকে আস্কারা দিচ্ছে।
জনাব ইনু বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-সংবিধান-দেশের সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব যুব সমাজের। তিনি দুর্নীতি-লুটপাট-বিদেশে অর্থপাচার বন্ধ করে বৈষম্যের অবসান করে সুশাসন ও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এগিয়ে নেয়ার জন্য যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান। জনাব ইনু বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির উপর সংগঠিত ইতিহাসের বর্বরতম যুদ্ধাপরাধের পক্ষে সাফাই গাওয়া, ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধু ও কর্নেল তাহের হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাওয়া, ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার পক্ষে সাফাই গাওয়া- এ তিনটি মহা অপরাধ জাতিকে মহাবিভক্ত ও মহাবিভাজিত করে রেখেছে। এ তিনটি মহাবিভক্তি ও মহাবিভাজন বহাল রেখে এই দেশের রাজনীতিতে কোনো মিটমাটের সুযোগ নেই। বাংলাদেশে স্থায়ী শান্তি, স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে হলে ১৯৭১ এর যুদ্ধাপরাধী, ১৯৭৫ এর খুনী, ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলাকারীদের রাজনৈতিকভাবে পরাজিত ও বিতাড়িত করতে হবে।
জনাব হাসানুল হক ইনু এমপি গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শনিবার, বিকাল ৪ টায়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাসদের সহযোগী যুব সংগঠন জাতীয় যুব জোটের ৩য় জাতীয় কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষনে এ কথা বলেন।
জাতীয় যুব জোটের সভাপতি রোকনুজ্জামান রোকনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপনের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক জননেত্রী শিরীন আখতার এমপি, জাসদের কার্যকরী সভাপতি জননেতা এড. রবিউল আলম, জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ও জাসদের সহ-সভাপতি জননেত্রী আফরোজা হক রীনা এমপি।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল আজিম বনি, মুহাম্মদ সামছুল ইসলাম সুমন, শরিফুল ইসলাম সুজন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন যুব মৈত্রীর সভাপতি তৌহিদুর রহমান, যুব ইউনিয়নের খান আসাদুজ্জামান মাসুম, যুব আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মোশাহিদ আহমেদ।
বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় উপেক্ষা করে জাতীয় যুব জোটের এই জাতীয় কংগ্রেসে সারা দেশের বিভিন্ন জেলা, মহানগর, উপজেলা থেকে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী যোগদান করেন। কংগেসের উদ্বোধনী প্যান্ডেল যুবদের একটি বর্ণাঢ্য মিলন মেলায় পরিণত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যা ৭ টায় নগরীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ইম্পেরিয়াল হোটেল মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়।