হাওর অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলার হাওর কাউয়াদিঘি, হাকালুকি সহ বিভিন্ন হাওরে কৃষকরা গড়ে তুলেছেন হাঁসের খামার। একেক খামারে হাজারো হাঁস রয়েছে। এসব হাঁস হাওরের মাছ বা জলজ প্রাণী এবং জলজ উদ্বিধ খেয়ে থাকে। শুকনো মৌসুমে খাল-বিল-নদীর অল্প পানিতেও রয়েছে পর্যাপ্ত হাঁসের খাবার।
লাভজনক হওয়ায় হাওরপারে এখন অনেকেই হাঁসের খামার করতে আগ্রহী হচ্ছেন।
সরজমিনে, হাওর কাউয়াদীঘির মধ্য স্থলে গেলে চোঁখে পড়ে হাজার হাজার হাঁসের ঝাঁক। রাখাল যেমন গরুর পাল নিয়ে ছুটে চলে, তেমনি হাঁসের ঝাঁক নিয়ে ছুটে চলেন এর মালিক। দল বেঁধে এসব হাঁস হাওরের খাল-বিল-নদীর অল্প পানিতে মাছ বা জলজ প্রাণী কিংবা শেওলা খাচ্ছে।
হাওরে মানুষ এসব হাঁস পোষেন এবং এই হাঁসের ডিম, বাচ্চা ও বড় হাঁস বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন।
জেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানাযায়, মৌলভীবাজারে ৪৩২টি হাঁসের খামার রয়েছে। খামারগুলোতে মোট হাঁসের সংখ্যা ৭ লক্ষ, ৪৮ হাজার, ৫শত ৭০টি।
স্থানীয় লোকজন বলেন, ‘হাওরের হাঁসের তেল (তৈল) হয় জব্বর।’ এই হাঁসের স্বাদ অন্য হাঁস থেকে আলাদা বলেই এর বেশ কদর আছে স্থানীয় বাজারে। এই হাঁসের ডিমেরও অনেক চাহিদা রয়েছে বাজারে।
লাভজনক হওয়ায় হাওরপারে এখন অনেকেই হাঁসের খামার করছেন।
পাইকারি ক্রেতারা খোঁয়াড় থেকে ডিম সংগ্রহ করে বাক্স ভর্তি করে গাড়িতে উঠিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে ডিমের আড়তে চালান দেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ি জুয়েল মিয়া বলেন, হাওরের খামারে উৎপাদিত ডিমের চাহিদা বাজারে অনেক বেশি, দামও পাওয়া যায় বেশি।
হাঁসের খামারি সুবু মিয়া বলেন, “আমি ১৫ বছর পূর্বে ১০০টা হাঁস দিয়ে খামার শুরু করি এখন আমার খামারে প্রায় ১ হাজার ৫ শত হাঁস আছে। আমার খামারে ৫ জন শ্রমিক রয়েছে। হাঁস ডিম দেয়া বন্ধ করলে আমরা আর্থিক সংকটে পড়ে যাই। শ্রমিকদের মজুরি দিতে হিমশিম খেতে হয়।”
মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: আব্দুস ছামাদ বলেন, হাওর অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলা হাঁস পালনে একটি সম্ভাবনাময় ব্যাবসা। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগীতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকি।
|