বিষয়টি বেশ আগের তবু এখনও এর জেরবার চলছে এবং আরো চলবেই বলে আমাদের ধারনা। বিষয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। হাওয়াই কারিগরীর এই সামাজিক যোগাযোগ গণমাধ্যমে নামী-দামী হতে চান এমন মানুষের সংখ্যা কমতো নয়ই বরং স্থান-কাল ভেদে এদের সংখ্যা প্রচুর। শুধু কি মানুষ, অগণিত ‘অনলাইন’ পত্রিকা থেকে শুরু করে নামে-বেনামে অসংখ্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের চাহিদা বিভিন্নমুখী।
কেউ কেউ দেখাতে চান তাদের অসংখ্য পাঠক রয়েছে। অন্যরা আবার খদ্দের খুঁজেন। এসব দাবী মেটাতে অনলাইনে কিছু ভূয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এরা লক্ষ লক্ষ ভূয়া ‘লাইক’ দেখিয়ে একদিকে পাঠক সংগ্রহ করতে চায় অন্যদিকে আবার বিজ্ঞাপন পাওয়ার চেষ্টায় একের পর এক ভূঁয়া নামে যোগাযোগ মাধ্যমে যোগদিয়ে ভূঁয়াদের সংখ্যা বাড়িয়েই চলেছে। কেউ কেউ আবার বিজ্ঞাপনের জন্য এই ভূঁয়া গ্রাহক দেখাতে অহরহ কাজ করছে।
ভূয়া নামে সামাজিক যোগাযোগ গণমাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের সাথে যোগাযোগ করে, লাইকদেয়, বিভিন্ন অরুচীকর বার্তা পাঠিয়ে মানুষকে উত্যক্ত করে, এমন অসাধু মানুষের সংখ্যা যেনো বেড়েই চলেছে। যোগ্য, দক্ষ ও ব্যবসায়িক লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠা পাওয়া খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো এসব ভূঁয়াদের মোকাবেলা করতে রীতিমত হিমসিম খাচ্ছে। নিশ্চিতভাবে এসব ভূঁয়া দূর্ণীতিমুলক কর্মকাণ্ড চিহ্নিতকরণ ও বিহীত ব্যবস্থা গ্রহনে কেউই কোন সুফল দেখাতে পারেননি।
‘নিউইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকা সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন ধরণের অসংখ্য ভূঁয়া ‘একাউন্ট’এর খোঁজ পেয়েছে। পত্রিকাটি একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠানের নামোল্লেখ করে লিখেছে যে ওই প্রতিষ্ঠান অস্বচ্ছ অসাধু পথে ভূঁয়া ‘একাউন্ট’ ব্যবহার করে ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ ডলার হাতিয়ে নিয়েছে। “দেভুমি” নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি অবশ্য ‘নিউইয়র্ক টাইমস’এর অভিযোগকে অসত্য বলে অস্বীকার করেছে। নিউইয়র্ক টাইমস কিন্তু হিসেব দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে “দেভুমি” কিভাবে এসব অনাচার করেছে। টাইমস হিসেব দিয়ে দেখিয়েছে “দেভুমি” টুইটার অনুসরণকারীদের কারবারী। চাহিদানুযায়ী খদ্দেরদের ‘অনুসরণকারী’ সরবরাহ করে থাকে। এই “দেভুমি” কমপক্ষে ৩.৫ মিলিয়ন টুইটার হিসেবের মওজুদদার এবং এ পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রাহককে প্রায় ২ মিলিয়ন অনুসরণকারী সরবরাহ করেছে। নিউইয়র্ক টাইমস ও একজন টুইটার ব্যবহারকারী ‘রিচলী’র ভাষায় এটা বড় আকারের সামাজিক পরিচিতি চুরি।
এইসব ভূঁয়া হিসাব ও এদের ভূঁয়া ‘লাইক’ দেয়া কিংবা কথা বলা, মন্তব্য করা জাতীয় ভূঁয়া সেবা কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে আমেরিকার ভার্জিনিয়ার ডেমোক্রেট ‘সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটি’র সদস্য সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার, ফেইচবুক, টুইটার ও অন্যান্য ‘প্লাটফর্ম’এর এসব ভূঁয়া বিষয়ে তদন্ত করে দেখছেন।
‘দেভুমি’র প্রতিষ্ঠাতা জার্মান কেলাস তার কোম্পানীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগকেই ভূঁয়া এবং মিথ্যা বলে দাবী করে বলেছেন ভূঁয়া চুরিকরা এসব পরিচিতি বিষয়ে আমার কোন ধারণাই নেই। তথ্য সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস
হারুনূর রশীদ, লণ্ডন বৃহস্পতিবার ১২ই এপ্রিল ২০১৮ইং