অনিয়মের অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মৌলভীবাজার দফতর থেকে: বৃহস্পতিবার, ২৭শে অক্টোবর ২০১৬।।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২০ অক্টোবর এমনি এক অভিযোগ কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে করেছেন হতদরিদ্র লোকজন। লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নে ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সরকারের হতদরিদ্রদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০ টাকা দরে চাল বিক্রির তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। অন্য ওয়ার্ডের লোকজনকে তার ওয়ার্ডে দেখিয়ে এবং তার ওয়ার্ডের ১২১ টি কার্ডের মধ্যে অর্ধেক মেম্বারের আত্মীয় স্বজনকে অন্তর্ভুক্তি করে তৈরী করেছেন।
একই পরিবারের স্বামী স্ত্রীকে অন্তর্ভুক্তি করা, যারা বয়স্ক ভাতা কিংবা বিধবা ভাতা পাচ্ছে তাদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করায় উক্ত ওয়ার্ডে অনেক ভিক্ষুক ও গরীব মানুষ বঞ্চিত হয়েছেন। এছাড়াও নানা অনিয়ম করে ওয়ার্ডের ১২১ জনের তালিকা জমা দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ‘মনিটরিং’ কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে।
এলাকার পক্ষে মো: উম্মর আলী ও মো: নাজিম উদ্দিন গত ২০ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করেছেন এবং অনুলিপি দিয়েছেন পৃথিমপাশা ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারী মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার নিকট। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মনিটরিং ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলিনা ইয়াছমিন জানান, অভিযোগ পেয়ে আমি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে মেম্বারের তালিকা সংশোধন করে পুনরায় আমার নিকট প্রেরন করার জন্য বলেছি। মেম্বার ফোন বন্ধ করে রাখায় তার সাথে কথা বলা যায়নি।
এদিকে রাজনগর উপজেলায় ২নং উত্তর ভাগ ইউনিয়নেও হতদরিদ্রদের জন্য সরকার নির্ধারিত মূল্যে কার্ডের মাধ্যমে চাল বিতরন কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। মেম্বারদের তালিকা তৈরিতে গরীবদের অন্তরভূক্ত ছাড়াই তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের এক সভায় চেয়ারম্যান হতদরিদ্রদের তালিকা পরিষদের মেম্বারদের নিকট তুলে ধরেন এবং স্বাক্ষর করতে অনুরুধ করেন। প্রচুর হট্টগোলের পর চেয়ারম্যানের অনুরোধে মেম্বারগন স্বাক্ষর করেন। ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বার একজন জুয়েল আহমদ স্বাক্ষর করেননি।
ওই ওয়ার্ড মেম্বার জানান, ইউনিয়ন পরিষদের কোন মেম্বারকে না জানিয়ে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ২৫ সেপ্টম্বর চেয়ারম্যান ইউনিয়নের একটি মিটিং-এ হতদরিদ্রের তালিকায় স্বাক্ষর করার অনুরোধ করলে সকল মেম্বাররা প্রতিবাদ করেন। পরে চেয়ারম্যানের বিশেষ অনুরোধে অন্যরা স্বাক্ষর করলেও তিনি করেন নি।
এদিকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ওই ইউনিয়নে বয়স্ক, বিধবা ও বিজিপি ভাতাভোগীরাও কার্ডের আওতায় রয়েছেন বলে জানা যায়। নিয়ম ভঙ্গ করে কলেজ ছাত্র দিপংকর রায়কে ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। চেয়ারম্যান, ডিলার ও কয়েক জন মেম্বারের যোগসাজসে ওই অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। ওই অনিয়মের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলেমান আহমদ উপজেলা ইউএনও বরাবর আবেদন করেছেন। মৌলভীবাজার জেলা খাদ্য কর্মকর্তা সুমাইয়া নাজনীন জানান, ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া একটি মহতি উদ্যোগে। আমার জানা মতে জেলায় ত্রুটিমুক্ত চাল বন্ঠন হচ্ছে। অনিয়মের অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।