লন্ডন: শুক্রবার, ১৪ই পৌষ ১৪২৩।। ১২১১ সালের একটি বন্দোবস্তের জন্য লন্ডন শহরকে, আজও ভাড়া দিতে হয় মহারাণী এলিজাবেথকে। ছোটখাটো একটি আয়োজনের মধ্যদিয়ে লন্ডন শহর রাণীকে হস্তান্তর করেন একখানা কুঠার, ৬ টুকরো ঘোড়ার লোহার জুতো(হর্সসোজ) এবং ৬১টি পেরেক।
কৌতুহলোদ্দীপক মজার এ ছোট্ট কাহিনীটি লিখেছেন ‘সারা লাস্কো’ এ বছরের গত ১৭ই অক্টোবরে “এটলাস অব্সকোরা”য়। চেষ্টা করেছেন, তারপরও বলতেই হয়, খুব একটি আকর্ষণীয় করে কাহিনীটিকে ফুঁটিয়ে-ফাঁটিয়ে তুলতে পারেননি।
“সিরিমনি অব কুইট রেন্ট” নামের এই বাৎসরিক অনুষ্ঠানটিকে নিয়ে তিনি শুরু করেছেন এভাবে- এই অক্টোবরের প্রথমদিকে রয়েল কোর্ট অব জাস্টিজ-এ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে লন্ডন শহর রাণীকে তার ভাড়া পরিশোধ করিল। অনুষ্ঠানটি চলছিল তেমনভাবেই যেমনি চলে আসছে বিগত ৮ শত বছর ধরে। একটি ছুরি, একখানা কুঠার, ৬খানা বড়আকারের “হর্সসোজ” এবং ৬১টি লোহা ‘বারবারা জেনেট ফন্টেইন’ এর হাতে তুলে দিল ‘শহর লন্ডন’। এই ‘বারবারা জেনেট ফন্টেইন’ হলেন ‘রাণীর স্মারণিক’ (কুইন রিমেমব্রান্সার), যা ইংল্যান্ডে বহু পুরানো একটি বিচারবিভাগীয় পদ। এ পদটি সৃষ্টি হয়েছিল ১২শ শতাব্দীতে যার কাজ ছিল রাজার মালিকানায় যা যা আছে তার হিসেব ঠিক রাখা।
‘রাণীর স্মারণীক’(রিমেমব্রান্সার) দু’টুকরো সম্পত্তির একটির বিষয়ে বিগত ১২৩৫ সাল থেকে আর অপরটির ব্যাপারে ১২১১ সাল থেকে এই ভাড়া আদায় করে আসছেন। প্রতি বছরই রাজার খাজনা পরিশোধের এ অনুষ্ঠানে রাজা ‘মুরল্যান্ড’ নামের একখন্ড জমি ও কামারের একটি হাতুরির মূল্য আদায় করে থাকেন শহর লন্ডনের কাছ থেকে। কেউ জানেইনা এই মুরল্যান্ড আর কামারের হাতুরী কোথায় কার কাছে আছে কিন্তু বিগত শত শত বছর ধরে লন্ডন শহর রাণীকে তার খাজনা স্বরূপ মূল্য দিয়ে আসছে। খাজনার মূল্য বা পরিমাণ অবশ্য বদলায়নি আর একই জিনিষই শত শত বছর ধরে দেখিয়ে এই খাজনা আদায় করা হয়।
সারাহ লস্কো লিখেছেন, এই “সিরিমনি অব কুইট রেন্ট” অনুষ্ঠানটি খুব একটি আলোচিত বিষয় নয় এবং এর খুব একটা প্রচারও করা হয় না। সচরাচর নয়, সংবাদ পত্র ও সংবাদ মাধ্যম মাঝে মধ্যেই এ নিয়ে লিখে। সারাহ লিখছেন, আমি এবার লন্ডন শহরের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত একটি রচনা প্রতিযোগীতার পুরস্কার হিসাবে ওই অনুষ্ঠানে যোগদেয়ার সুযোগ দেয়া হবে, এমন একটি প্রচার পত্র দেখতে গিয়ে এই অনুষ্ঠানের খবর পেলাম। ওই প্রচারপত্রে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস এর লর্ড চীপ জাস্টিজেরও উল্লেখ ছিল। (আরো আছে ‘অবস্কোরা’ দেখতে পারেন)