1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
জিএমজি এয়ার লাইন্স ও এস এফ রহমানের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংক টাকা আদায়ের মামলা করতে পারে - মুক্তকথা
বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন

জিএমজি এয়ার লাইন্স ও এস এফ রহমানের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংক টাকা আদায়ের মামলা করতে পারে

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : বুধবার, ১২ জুলাই, ২০১৭
  • ১৩৪৩ পড়া হয়েছে

১৯৯৬ সালে শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারী মামলারও অন্যতম আসামী
১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত একটানা ৭বছর জিএমজি লোকসানে ছিল
শেয়ার বাজারের কারসাজি নিয়ে খন্দকার ইব্রাহীম খালেদের তদন্ত রিপোর্ট
এতোকিছুর পরও জিএমজি’কে সাড়ে ৪ কোটিটাকা ‘ওভারড্রাফ্ট’ ঋণ সুবিধা দেয় সোনালী ব্যাংক।
২০০৯ সালে ১০টাকার প্রিমিয়াম শেয়ার ৫০টাকায় বিক্রি করা হয়। এতে তাদের সংগ্রহ বাজার থেকে ৩শত কোটি টাকা।
৩শ কোটি টাকা ৭ বছরেও ফেরৎ দেয়নি কোম্পানীটি

লন্ডন: ইউটিউবে, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ঋণ খেলাপী কাজের নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে এসকে টিভি। এ থেকে পাওয়া তথ্যে যায় যে জনাব রহমান জিএমজি এয়ার লাইন্সের খেলাপী ঋণের ২৬৭ কোটি টাকা সোনালী ব্যাংকের কঠোর অবস্থানের করণে কিছুটা বিলম্বে হলেও দিতেই হচ্ছে তাকে। না দিলে সোনালী ব্যাংক আইনী ব্যবস্থায় যাবে বলে এসকে টিভি বলেছে।
সম্প্রতি সোনালী ব্যাংকের ৫২৩তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব ওবায়দুল্লাহ মাসুদ এসকেটিভি’কে বলেন প্রতিষ্ঠানটি ঋণ পুনঃ তফশিল ও সুদ মওকুপের আবেদন করেছিল কিন্তু পরিচালনা পর্ষদ তা অনুমোদন করেনি বরং অর্থ আদায়ের জন্য আইনী ব্যবস্থা নিতে সিদ্ধান্ত দিয়েছে এবং এ বিষয়ে জিএমজি’কে যথাসময়ে জানানো হয়েছে। এর আগে ১৯ মার্চ সব সুদ মওকুপ চেয়ে ঋণটি পুনঃ তফশিলের চিঠি দেয় জিএমজি, কিন্তু বোর্ড তা অনুমোদন করেনি।
এ বিষয়ে জানতে, এসকে টিভি জনাব রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে গিয়ে তাকে পায়নি। পরে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়েও কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি বলে প্রকাশ করে। এ বিষয়ে তারা সোনালী ব্যাংকের পরিচালক সাবেরা আক্তারী জামালের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে চাননি। অবশ্য ব্যাংকের সূত্র এসকে টিভি’কে জানিয়েছে যে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই মামলা হয়ে যেতে পারে।
এ প্রক্রিয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর খন্দকার জনাব ইব্রাহীম খালেদ এসকে টিভিকে জানান, ব্যাংক ও কোম্পানী আইন অনুসারে যদি কেউ ঋণখেলাপী প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কিংবা মালিক হোন তবে তিনি অন্য কোন ব্যাংক বা কোম্পানীর পরিচালক বা চেয়ারম্যান হতে পারবেন না। আর ইনিতো পুরনো ঋণখেলাপী। কি করে তিনি ঋণখেলাপী থাকা অবস্থায় অপর একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান হতে পারেন! বাংলাদেশ ব্যাংকের বিষয়টি দেখা উচিৎ।
প্রসঙ্গতঃ বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইচ চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান বর্তমানে আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান! তিনি ১৯৯৬ সালে শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারী মামলারও অন্যতম আসামী। আইজিএমজি কোম্পানীর শেয়ার বাজারে বিক্রি করে তিনি ৩০০ কোটি টাকা নিয়ে আটকে রেখেছেন। অথচ বিনিয়োগকারীদের টাকা পরিশোধ করছেন না। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জিএমজি এয়ার লাইন্স। পরের বছর থেকে অভ্যন্তরীন রুটে যাত্রী পরিবহন শুরু করে। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত একটানা ৭বছর জিএমজি লোকসানে ছিল। এ সময়ের মোট লোকসানের পরিমান ৪২ কোটি টাকা। ২০০৬-৭ সালে প্রতিষ্ঠানটি ১কোটি টাকা মুনাফা দেখায়। কিন্তু ২০১১সালে অস্বাভাবিকভাবে তাদের মুনাফা আরো বেড়ে যায়। ওই বছরের প্রথম ৯মাসে তারা ৭৮কোটি ৮৭ লাখ টাকা মুনাফা দেখায়।
শেয়ার বাজারের কারসাজি নিয়ে খন্দকার ইব্রাহীম খালেদের তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় ২০০৮ সালের স্থীতিপত্রে ৩৩কোটি টাকার পুনর্মূল্যায়ন উদ্বৃত্ত দেখানো হয়। এর জবাবে জিএমজি বলে তাদের দু’টি বিমানের সম্পদ পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছে। কিন্তু বিমান দু’টি পুরনো আর পুরনো বিমানের দাম কম হবার কথা অথচ আলাদীনের যাদুর চেরাগের মত দাম বাড়িয়ে দেখিয়েছে জিএমজি। এরূপে তারা ১৬৬ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ সংগঠনটি প্রিমিয়ামসহ আরো ৩শ কোটি টাকা সংগ্রহের আবেদন করে। সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালে জিএমজি এয়ার লাইন্স সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় ঋণের জন্য আবেদন করে। এ জন্য ধানমন্ডির ২নং সড়কের ১৭নং প্লটে নতুন ১বিঘা ৩৩শতাংশ জমি ও তার উপরে ভবনসহ সবস্থাপনা ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখা হয়। এ জমির মালিক বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান।
ওই বছরে জিএমজি’কে সাড়ে ৪ কোটিটাকা ‘ওভারড্রাফ্ট’ ঋণ সুবিধা দেয় সোনালী ব্যাংক।(?) পরে ধীরে ধীরে সুদসহ ঋণ দাড়ায় ২৬৬কোটি ১০লাখ টাকা। ২০১২ সালে জিএমজি’র চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে ওই ঋণ খেলাপী হয়ে যায়। এ সময় ঋণটি পুনঃ তফসিল করে সোনালী ব্যাংক। এরপর আবারো খেলাপী হয়ে পড়লে বিভিন্ন মাধ্যমে খেলাপী ঋণ উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালায় ব্যাংক। আলোচনা, চিঠি ও সর্বশেষ উকীলনোটিশ পাঠানো হয়। সবদিক থেকে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে ব্যাংক, অর্থঋণ আদালত আইন ২০১৩এর আশ্রয়ে যায়। এ আইনের ১২ধারা মোতাবেক ব্যাংকে বন্ধক রাখা সম্পত্তি, গত বছরের ১২ জুলাই নিলামে তোলে নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে ব্যাংক। শেষমূহুর্তে জেএমজি রীট দায়ের করলে নিলাম স্থাগিত হয়ে যায়। পরে আইনী প্রক্রিয়ায় রীটটি তাদের পক্ষেই নিষ্পত্তি করে সোনালী ব্যাংক। এর পর থেকে রীটটি পুনঃ তফশিলের চেষ্টা শুরু করে জেএমজি।
অর্থ ঋণ আদালত ২০১৩এর ১২ ধারা অনুযায়ী কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিবাদীর কাছ থেকে কোন স্থাবর সম্মপ্তি বন্ধক রেখে, অস্থাবর সম্মপ্তি দায়বদ্ধ রেখে ঋণ প্রদান করলে এবং বন্ধক প্রদান বা দায়বদ্ধ রাখার সময় সম্পত্তি বিক্রিক্ষমতা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করলে তা বিক্রি না করে, বিক্রির চেষ্টা করে ব্যর্থ না হয়ে, সমন্বয় না করে, অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করা যায় না। ব্যাংকের নথিতে জেএমজি’র চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, পিতা: ফজলুর রহমান, মাতা সৈয়দা ফাতিনা রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহাব ছত্তার, পিতা: আজিজ এ এইচ সত্তার, মাতা: ভাজিহা আজিজ সত্তার, পরিচালক উসমান কায়ছার চৌধুরী, পিতা: সাবের আহমেদ চৌধুরী, মাতা: হোসনে আরা বেগম।
জিএমজি ছিল ২০১০ সালের শেয়ার বাজার ধ্বসের আগে অন্যতম আলোচিত একটি কোম্পানী। দীর্ঘদিনের লোকাসানি এ কোম্পানীকে কারসাজির মাধ্যমে লাভজনক দেখিয়ে প্রথমে ‘প্লেইসমেন্ট শেয়ার’ বিক্রি করা হয় এবং পরে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও’র মাধ্যমে তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। পরবর্তীকালে শেয়ার বাজার ধ্বসের পর সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেও জিএমজি’র কারসাজির বিষয় উঠে আসে। কমিটির প্রতিবেদনে সালমান এফ রহমানের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল। ১৯৯৬এর শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারীতেও তার নাম রয়েছে। জানা যায় সালমান এফ রহমান জিএমজি’র চেয়ারম্যান। খেলাপি এ প্রতিষ্ঠানের বেক্সিমো গ্রুপের শেয়ারের পরিমাণ ৪৮শতাংশ।
জিএমজি এয়ার লাইন্স ২৯ মার্চ সোনালি ব্যাংকের কাছে ঋণটি পুনঃ তফশিলের আবেদন করে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ চিঠি দেয় জিএমজি। আবেদনে জিএমজি সব সুদ মওকুফ চায়। ৮বছরে ২৩ কিস্তিতে আসল ঋণ পরিশোধের সুযোগ চায় জিএমজি। এ সময় অগ্রীম সাড়ে ১৬কোটি টাকাও জমা দেয় তারা। এ প্রস্তাব গত ৫জুন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় উত্থাপন করা হলে তা সর্বসম্মতভাবে নাখচ হয়ে যায়। ঋণ আদায়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয় পরিচালনা পর্ষদ।
এদিকে, শুধু মুদ্রাবাজারে নয় পুঁজি বাজারেও সংকট সৃষ্টি করেছে জিএমজি। আর্থিক প্রতিবেদন জালিয়াতি করে শেয়ার বাজার থেকে নেয়া ৩শ কোটি টাকা ৭ বছরেও ফেরৎ দেয়নি কোম্পানীটি। ২০০৯ সালে প্লেইসমেন্ট শেয়ার বিক্রি করে এই টাকা নেয়া হয়। পরে এ জালিয়াতি ধরা পড়ায় এবং ব্যাপক সমালোচনার মুখে বাজারে তালিকাভুক্ত করেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিওরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিএসইসি। কিন্তু টাকা আর ফেরৎ পায়নি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। জানা গেছে আইপিও’র আগে মূলধন বাড়াতে নির্দিষ্ট কিছু বিনিয়োগকারীর কাছে শেয়ার বিক্রি করতে পারে কোম্পানী। শেয়ার বাজারের পরিভাষায় একে প্রাইভেট প্লেইসমেন্ট বলা হয় কিন্তু কোম্পানীটি অবশেষে বাজারে তালিকাভুক্ত না হলে প্লেইসমেন্টের টাকা ফেরৎ দিতে হয়। একই সঙ্গে যতদিন টাকা আটকে রাখা হবে, বিনিয়োগকারীদের তার লভ্যাংশ দিতে হয়। ২০০৯ সালে ১০টাকার প্রিমিয়াম শেয়ার ৫০টাকায় বিক্রি করা হয়। এতে তাদের সংগ্রহ বাজার থেকে ৩শত কোটি টাকা।
পুরো ভিডিওটি দেখে আমাদের মনে হয়েছে সালমান এফ রহমান সাহেবের বিরুদ্ধে অবশেষে মামলাই যেতে হবে সোনালী ব্যাংককে। কারণ রহমান সাহেব ও তার কোম্পানী নিশ্চয়ই দেখাবেন কি নমুনায় ঋণের এ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিভাবে সময় দিলে তার কোম্পানী এ টাকা ধীরে ধীরে ফেরৎ দিতে পারবে। এবং তখনই জনাব রহমানকে রাষ্ট্রের এতোগুলো টাকা একসাথে দিতে হবে না। বাকী জীবনে তিনি বা সন্তান তা শোধ করবেন।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT