বরগুনা সদরের ইউএনও তারেক সলমানের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির মামলা ও তার গ্রেপ্তারকে নিয়ে নিউজবাঙলাদেশ.কম সর্বশেষ যে খবর দিয়েছে তাতেই জানা গেল ঘটনার আসল রহস্য। মামলার কারণে তারেক সালমান গ্রেপ্তার হন। তার অপরাধ তিনি বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করেছেন। বিষয়টি নিয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বলে নিউজবাঙলাদেশ.কম লিখেছে। ওই অনলাইনটি ইউএনও তারেক সালমানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান যে, ঘটনার শুরু গত এপ্রিলে। বরিশালের আগৈলঝাড়ার শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে বাংলাদেশের ইতিহাস ও অভ্যুদয় পরীক্ষা চলকালে। পরীক্ষার শেষ সময়ে সরকারি গৌরনদী কলেজের শিক্ষার্থী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের ছেলে আল রাজিন ওরফে পিয়াল সেরনিয়াবাতকে নকল করার দায়ে বহিষ্কার করেন সেখানে দায়িত্বরত ইউএনও তারিক সালমান। এ সময় পিয়াল তার চাচা বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর পরিচয় দিয়ে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এ ঘটনায় পিয়ালকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও নকলে সহযোগিতা করায় কলেজের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নারায়ণ চন্দ্র সরকারকে দুই মাসে বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়। সেই সঙ্গে পরীক্ষা কক্ষে কর্মরত থাকা দুই প্রভাষককেও বহিষ্কার করা হয়। তখন থেকেই উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা ক্ষিপ্ত ছিল তারিক সালমানের ওপর। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে।
ওই নিউজপোর্টালকে তারেক সালমান আরও জানান, গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শিরোনামে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় আগৈলঝাড়ার এসএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম ও দ্বিতীয় পুরস্কারের জন্য দুই শিশুর হাতে পুরস্কার তুলে দেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোর্তজা খান। পুরস্কার পাওয়া দুটি ছবির মধ্যে একটি ব্যবহার করা হয় স্বাধীনতা দিবসের আমন্ত্রণপত্রে। সেটি নিয়েই বরিশাল আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু তার বিরুদ্ধে জাতির জনকের ছবি বিকৃত করার অভিযোগ এনে গত ৭ জুন বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।
তিনি দাবি করেন, তিনি ছবি বিকৃতি করেননি বরং বঙ্গবন্ধুর মতো দেশপ্রেমে শিশুদের উদ্বুদ্ধ করতে ছবিটি আমন্ত্রণপত্রে ব্যবহার করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসা আমন্ত্রণপত্রে এমন ছবির ব্যবহার হয়। তাই তিনিও এমন করেছেন। এতে তার কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না।
নিউজবাংলাদেশ.কম মন্তব্য করে লিখেছে, তারিক সালমানের মতো একজন সৎ সাহসী ইউএনওকে পেয়ে বরগুনাবাসী গর্বিত। তার সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে তার কঠিন বিচার হওয়া উচিৎ বলে মনে করেন সচেতন নাগরিক কমিটির বরগুনা জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রব ফকির। রব ফকির বলেন, “ক্ষমতার অপব্যাবহারের শিকার হয়েছে ইউএনও। একটি স্বাধীন দেশের একজন সরকারি কর্মকর্তাকে এভাবে লাঞ্চিত করা ঠিক হয়নি। ব্যক্তি আক্রোশের জেরে যারা এমন কর্মকাণ্ড করেছে তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত।”