হারুনূর রশীদ: বুধবার, ১৭ই আগষ্ট ২০১৬।। ফেইচবুকের একটি ছবি। দিয়েছেন শামিম রেজা। শামিম রেজা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে লিখাপড়া করেছেন। এখন কি করেন জানিনা। থাকেন ঢাকায়। কি ভাষা ব্যবহার করলে ছবিখানার বিষয়ে আমার মনোবেদনার সঠিক বহিঃপ্রকাশ ঘটবে সে ভাষা আমার জানা নেই। অত্যন্ত হৃদয় স্পর্শী একখানা ছবি দিয়েছেন তার ফেইচবুকে। ছবিখানা দিয়ে তিনি ভাল করেছেন না-কি খারাপ করেছেন তাও জানিনা। একসময় মনে হয়েছে কাজটি তিনি ভাল করেননি। খুবই মন্দ লোক এই রেজা। ফেইচবুকে একটু নাম কেনার জন্য আর কিছু লাইক পাবার জন্য এই কুৎসিত কাজটি করেছেন। পরক্ষনেই আবার মনে হয়েছে দেবেইবা না কেনো? দেয়াটাই উচিৎ! আর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এই লোক এসব খাটো নাম কামানো আর ‘লাইক’ ব্যবসার জন্য কখনও এ কাজ করতে পারে না। অবশ্যই মেয়েদের নিয়ে আমাদের সমাজের পৈশাচিকতা আর বর্বরতার রূপকে তুলে ধরার জন্যই রেজা এই ছবিটি তার ফেইচবুকে দিয়েছেন। আর এই দেয়ার জন্য তাকে বরং সাধুবাদ জানানো উচিৎ। এই দু’দোলায় ভুগছি লিখার মূহুর্ত পর্যন্ত।
এক নিরপরাধ নবজাতক। দুনিয়ার মুখ দেখার আগেই ঝরে পরতে হয়েছে। পঁচে গলে যাওয়া দূর্গন্ধময় সমাজ ব্যবস্থার তথাকথিত লজ্জ্বা, ঘৃণা কিংবা ধর্মের ভয় নিরপরাধ একটি প্রাণকে পৃথিবীর রূপ দেখতে দেয়নি। হতে পারে, পৈশাচিক অপকর্মের শিকার হয়ে কোন মা’কে আত্মহত্যার মত এ কাজটি করতে হয়েছে। আবার এও হতে পারে কোন পাপিষ্ট ধনির দুলালের বলপূর্বক ধর্ষণের শিকার হয়ে কোন নিরীহ গরীব মেয়েকে এই অমানুষিক কাজের পথ বেচে নিতে হয়েছে। এ ছাড়া বাঙ্গালী কোন মা সে কিশোরী হোক বা বয়োপ্রাপ্ত হোক এ হেন কাজ করতে পারে না। এই ভূমন্ডলের কোন পশু যে কাজটি করবে না এমন কাজ করেছে একজন মানব সন্তান।
অনেকেই হয়তো বলবেন এ নতুন কিছু নয়। এ ধরনের নোংড়া কাজ আগেও হয়েছে এখনও হচ্ছে। আগে ফেইচবুক ছিল না তাই এসব আমরা দেখতে পেতাম না। এখন দেখি।
পরিচিত একজন বললেন, এমনওতো হতে পারে কোন হাসপাতাল অকাল গর্ভপাত ঘটিয়ে কোন বোনের ভবিষ্যৎ রক্ষা করেছে!
আগেও হয়েছে বলে এখনও হবেই এমনতো কোন কথা হয় না। আজ যদি বিধান থাকতো যে কোন উপযুক্ত কুমারী চাইলে সরকারী হাসপাতালে নিশ্চিন্ত নিরাপত্তায় নির্বিঘ্নে প্রসব করাতে পারবেন এমনকি স্বইচ্ছায় গর্ভপাত ঘটাতে চাইলেও সরকারী হাসপাতাল তা করে দিতে বাধ্য। তা’হলে এই অকালে ঝরে যাবার মত অমানবিক অনাকাঙ্খিত মৃত্যু ঘটতো না আর এক সোনার শিশুকে শ্বাশ্বতঃ জীবনের স্বাদ বঞ্চিত হয়ে তার মরণের ঠিকানা রাস্তার ডাষ্টবিন হতো না।
সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি আর ধর্ম কারো কাছে কি এসব প্রশ্নের উত্তর আছে? প্রশ্ন আসতেই পারে কোথায় চলছি আমরা? এই পৈশাচিকতা, এই অপকর্ম এর কি কোন শেষ নেই?