প্রতি বছরের মতো এ বছরেও মৌলভীবাজারের চা বাগানে পালন করা হলো গারো সম্প্রদায়দের ওয়ানগালা নবান্ন উৎসব। রোববার, ৭ ডিসেম্বর, দুপুরে শ্রীচুক গারো নকমা এসোসিয়েশনের আয়োজনে ও মণিপুরী ললিতকলা একাডেমির সহযোগিতায় শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া চা বাগান মাঠে ওয়ানগালা অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।
গারো সম্প্রদায়ের নারী পুরুষেরা নেচে-গেয়ে উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। পাহাড়ে বসবাসকারী উপজাতি নৃ-গোষ্ঠী গারোদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ও কৃষ্টির অন্যতম উৎসব হলো এ নবান্ন বা ওয়ানগালা উৎসব।
দেবতাকে নতুন ফসলের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এবং নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতি চেয়ে গারোরা পালন করেন এই উৎসব। এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য আগামী বছরে যেন ফসল ভালো হয়। তাদের সন্তান ও পরিবার-পরিজনরা যেন ভালো থাকে।
গারোদের মূল ধর্ম ছিল সাংসারেক এখন খ্রিষ্টানদের সঙ্গে মিশে গেছে। ‘ওয়ানা’ শব্দের অর্থ দেবদেবীর দানের দ্রব্যসামগ্রী আর ‘গালা’ অর্থ উৎসর্গ করা। দেবদেবীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও মনোবাসনার নিবেদন হয় এ উৎসবে। সাধারণত নতুন ফসল তোলার পর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। আর তাই একে নবান্ন বা ধন্যবাদের উৎসবও বলা হয়ে থাকে।
উৎসব আয়োজন কমিটির মতে, দেবতার সন্তুষ্টির পাশাপাশি এই আয়োজনের উদ্দেশ্য গারোদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে জাগ্রত রাখা। নতুন প্রজন্মকে এ সম্পর্কে জানানো আর এই সাথে সবার একই স্থানে একই উদ্দেশ্যে মিলিত হয়ে উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করা। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদি ছাড়াও আয়োজন করা হয় তাদের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা।
আলোচনা পর্বে শ্রীমঙ্গল ক্যাথলিক মিশনের প্রধান পুরোহিত ফাদার ড. জেমস শ্যামল গমেজের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন, মনিপুরী ললিতকলা একাডেমির অতিরিক্ত পরিচালক প্রভাস চন্দ্র সূত্রধর প্রমুখ।