চান মিয়া: ছাতক, সুনামগঞ্জ।। ছাতকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নৌকা ডুবিতে মৃত্যুবরণকারি দু’বোনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। একইভাবে মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় দু’শতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অর্ধলক্ষাধিক শিশু শিক্ষার্থী। রোববার ময়নাতদন্ত শেষে এদেরকে ছৈলা-আফজালাবাদ ইউপির কহল্লা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। দু’বোনের মৃত্যুতে উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানা যায়, শনিবার, ১৯আগষ্ট, বাংলাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বন্যার পানিতে নৌকা যোগে কহল্লা গ্রামের নিজ বাড়িতে ফেরার পথে নৌকা ডুবিতে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছে দিলাল মিয়ার মেয়ে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী লিজা(১১) ও ২য় শ্রেণীর ছাত্রী নিলুফা(৮)। এসময় প্রতিদিনের ন্যায় দেড় কিলোমিটার হাওর পাড়ি দিয়ে ছোট কাঠবডির নৌকায় বাড়ি ফিরছিল। একই নৌকার যাত্রি ছিল তাদের প্রতিবেশি ৫ম শ্রেনীর ছাত্রী আলেয়া(১১) ও রুকশানা(১১)। ঘটনার সময় তারা প্রানে বেঁচে গেলেও বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় লিজা ও নিলুফা। ২য় শ্রেণীতে পড়ুয়া নিলুফার দুপুরে ছুটির পর বড়বোন লিজার সাথে নৌকায় বাড়ি ফিরতে স্কুলের বারান্দায় বসে থাকে। বিকেলে ৫ম শ্রেণীর ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে এঘটনা ঘটে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, দিলাল মিয়ার মোট ৪মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে দু’মেয়েই মারা গেল। মা নীপা বেগম, লিজা ও নিলুফার মৃত্যু শোকে কাতর হয়ে হায়-হোতাস করছেন। ঘটনার পর উপজেলা জুড়ে পশোকের ছায়া নেমে পড়েছে। অনেকে দাবি করছেন, সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের গাফিলতির কারনে এঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মানিক চন্দ্র দাস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গত ৯আগষ্ট থেকে উপজেলা পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বৃষ্টিপাতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এরপরও প্রায় দু’শতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষনা করা হয়নি। ফলে মৃত্যু ঝুকিতে রয়েছে উপজেলার প্রায় অর্ধলক্ষাধিক শিশু শিক্ষার্থী। বাংলাবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা (চদা) রাহিমা বেগম জানান, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে এমর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান গয়াছ আহমদ জানান, রাত সাড়ে ১০টায় নিহত দু’বোনের লাশ দাফন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে পরিবারে সহায়তা দানেরআশ্বাস দেন তিনি। এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মানিক চন্দ্র দাস ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, এখনো এককি.মিটার পাঁেয় হেটে ও আরো দেড় কি.মিটার.নৌকা যোগে কহল্লা গ্রামের শিক্ষার্থীরা বাংলাবাজার স্কুলে গিয়ে পড়েন। এখন কহল্লা গ্রামে একটি নতুন স্কুল হচ্ছে বলে জানিয়ে বলেন, গ্রামটি মনে হয় উপজেলার মধ্যে তুলনামূলক সবচেয়ে বশি অবহেলিতই রয়ে গেছে।