মৌলভীবাজার অফিস।।মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েছেন চার সন্তানের জননী লুবনা খানম। এর প্রতিবাদে আজ রোববার, ৭ ডিসেম্বর, দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন ওই হতভাগ্য গৃহিনীর স্বামী আব্দুস সালাম তালুকদার। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তার স্ত্রী লুবনা খানম কোমরের ব্যাথায় আক্রান্ত হওয়ায় চিকিৎসার জন্য গত ২৭ মে মৌলভীবাজারে অবস্থানরত ডাঃ তারেক আহমদ চৌধুরীর প্রাইভেট চেম্বারে নিয়ে গেলে ওই ডাক্তার তার স্ত্রীকে চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দিলে কয়েকটি প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করিয়ে ওষুধ সেবন করি।
চিকিৎসা চলাকালীন সময়ের এক পর্যায়ে রোগী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে ওই ডাক্তার ব্যবস্থাপত্রে আবারও ওষুধ লিখেন। ওষুধ খেয়ে লুবনা’র শরীরে আরো অবনতি হয় এবং খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। লিখিত বক্তব্যে বলেন, পরবর্তীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে ডাঃ রেজাউল করিম মীর নামের এক চিকিৎসককে দেখানো হয়। রোগী দেখে তিনি “চিকেন পক্স” রোগে আক্রান্ত মর্মে ব্যবস্থাপত্র দেন। ওই ওষুধ সেবনের পর তার দুই চোখসহ শরীর ফেটে রক্তপাত হতে থাকে। এর সাথে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পচন দেখা দেয়। পরবর্তীতে অপর ডাঃ স্বপন কুমার সিংহ আরো দুদিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা দেন। অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসকরা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে “চিকেন পক্স” থাকার কারণে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর ভর্তি নেননি।
পরে সিলেটের সরকারি সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার রোগীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে “ড্রাগ রি-এ্যাকশন” এর ফলে রোগীর অবস্থা আশংকাজনক হয়েছে বলে জানান। এবং “ড্রাগ রি-এ্যাকশন” মর্মে ছাড়পত্র দিয়ে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ড্রাগ রি-এ্যাকশনের ফলে রোগীর দুই চোখ ও শরীরের সমস্ত অঙ্গে পচন ধরেছে দেখে রোগীকে প্রথমে স্কীন বিভাগে ভর্তি করেন এবং পরবর্তীতে চক্ষু বিভাগে স্থানান্তর করে চোখের চিকিৎসা করেন। দেড় মাস ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাৎসাকালীন অবস্থায় শরীরের ক্ষতস্থানের কিছুটা উন্নতি হলেও দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পরবর্তীতে গত ১১ ডিসেম্বর ডাঃ তারেক আহমদ চৌধুরী, ডাঃ রেজাউল করিম মীর ও ডাঃ স্বপন কুমার সিংহ’র বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমল আদালতে একটি মামলা (নং-৬৮০/১৭) দায়ের করেন তিনি।