মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।। মৌলভীবাজারের রাজনগর থানার এক নারী এসআই স্ত্রীর অধিকার পেতে স্বামী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এর ঘর তছনছ করেছেন এমন অভিযোগ উঠেছে। স্বামী ফারুক আহমদ এর ঘরের মালামাল ভাংচুর ও বাড়ির কেয়ারটেকারের উপর হামলার অভিযোগে ওই থানার নারী এসআই নাজমা বেগমকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় রাজনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামল বণিক বিষয়টি মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারকে জানালে তিনি এসআই নাজমাকে তাৎক্ষণিক ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেন। অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে ক্লোজ করা হয়েছে বলে রাজনগর থানার ওসি শ্যামল বণিক জানিয়েছেন।
জানা যায়, ২০১৪ সালের মধ্য সময়ে রাজনগর থানায় যোগদেন উপ-পরিদর্শক নাজমা বেগম। প্রায় দুই বছর নিজের দ্বায়িত্ব নিয়ে রাজনগর থানায় নিজের পেশাদারিত্ব পরিচালনা করেন। পরবর্তীতে ট্রেনিং ও জুড়ি উপজেলায় আরো ৩ মাস কাটিয়ে তিনি আবার রাজনগর থানায় যোগ দেন। এরই মধ্যে রাজনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও মুন্সিবাজার ইউপির গয়াসপুর গ্রামের ফারুক আহমদ মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওই থানায় যাওয়া আসার সুবাদে পরিচয় হয় দুজনের। এক সময় দুজনে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে বিষয়টি বিয়ে পর্যন্ত এগিয়ে যায়। এর আগে থেকেই এসআই নাজমা বেগম ও ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ উভয়েই বিবাহিত ছিলেন। তাদের আগের সন্তানও রয়েছে বলেও জানা গেছে। দুজনের বিয়ের পর ভাইস চেয়ারম্যান ফরুক আহমদ নাজমাকে নিজের ঘরে তুলছেনা এমন খবর ও ঘোরপাক খাচ্ছে সর্বমহলে। আর ওই কারনেই গত বৃহস্পতিবার বিকালে এসআই নাজমা বেগম ফারুক আহমদের বাড়ি যান। বাড়িতে কেউ না থাকায় কেয়ারটেকার সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় ওই ঘরে তার ফোন না ধরা ও ফারুক আহমদ কর্তৃক তাকে ঘরে না তোলা নিয়ে বিভিন্ন আলাপচারিতা তুলেন।
এক পর্যায়ে নাজমা ঘরের মালামাল তছনছ করাসহ কেয়ারটেকারের উপর হামলা করেন এমন অভিযোগ উঠে। মুন্সীবাজার ইউপি সদস্য লিটন মিয়া বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নাজমা ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়ে কেয়ারটেকারের সঙ্গে বাকবিতন্ডাসহ ভাংচুর ঘটনা ঘটিয়েছেন এটা আমি লোক মুখে শুনেছি। বাড়ি থেকে বের হবার সময় তিনি নিজের দেয়া (ফারুক আহমদকে) কাপর-চোপর সাথে করে নিয়ে যান এমন খবর ও দিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শিরা। মুন্সিবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছালিক আহমদ বলেন, ঘটনার সার্বিক বিষয় তিনি জানেন না। কেউ তাকে বলেনি। দুজনের বিয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান নিজে বিবাহিত এখন যদি নাজমার সাথে তার বিয়ে হয় তবে লুকিয়ে সম্পন্ন হতে পারে।
সোমবার বিকেলে এসআই নাজমা বেগম এর সাথে সার্বিক বিষয় জানতে এ প্রতিবেদক মুঠোফোনে কথা বললে তিনি আলাপচারিতা করতে রাজি হননি। তিনি এ প্রতিবেদককে দুটি কথা বলেন, তার বিরুদ্ধে যেসক কথা উঠেছে সব মিথ্যা। তার কিছু বলার নাই। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ’র সাথে সোমবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বণিক বলেন, এসআই নাজমাকে অসৌজন্যমূলক আচরণের দায়ে ক্লোজ করা হয়েছে।