1. muktokotha@gmail.com : Harunur Rashid : Harunur Rashid
  2. isaque@hotmail.co.uk : Harun :
  3. harunurrashid@hotmail.com : Muktokotha :
চলমান বিশ্বপটে বাংলা ভাষা, সাংবাদিকতা ও বাঙ্গালী - মুক্তকথা
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩২ অপরাহ্ন

চলমান বিশ্বপটে বাংলা ভাষা, সাংবাদিকতা ও বাঙ্গালী

সংবাদদাতা
  • প্রকাশকাল : সোমবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
  • ৬২১ পড়া হয়েছে

হারুনূর রশীদ।।

হাটি হাটি পা পা করে বৃটেনে গড়ে উঠছে বাংলাভাষার সাংবাদিকতা। কোন শিল্প বা অঙ্গন গড়ে উঠার পথে যে সকল অন্তরায় সক্রিয় থাকে, এখানে নব্য উঠতি বাংলা সাংবাদিকতায় সেগুলো তো আছেই উপরন্তু নতুন নতুন কিছু উপসর্গ ও অন্তরায় এখানে কাজ করছে। এমনিতেই ভাষার কারণে বৃটেনসহ পশ্চিমাবিশ্ব, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অন্যান্য বহু জায়গায় বাংলা ভাষায় সাংবাদিকতা যে নমুনায় হওয়ার সে মাত্রায় এখন‌ও পৌঁছাতেই পারেনি। সুদীর্ঘ সময়ের অনুশীলনের পর বৃটেন, আমেরিকা, সৌদিআরব, কানাডায় এখনও বাংলায় সাংবাদিকতা বিশেষ করে ছাপা সংবাদপত্রের সাংবাদিকতা পূর্ণমাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি। দূরদর্শনের অবস্থান এক্ষেত্রে আরো দূর্বল। বৃটেন ও আমেরিকায় চলছে। বলা যায় টিকে আছে। এখনও পূর্ণতায় পৌঁছায়নি। অবশেষে টিকতে পারবে কি-না এ সন্দেহ লেগেই আছে।
আরবীয়ানরা তাদের ভাষা সংস্কৃতির জন্য যা করেছে, আমরা যদি তাদের মত হয়ে কাজ করতে পারি তা’হলে সফলতা আসতেই হবে। আমরা হয়তো আরবীয়ান হতে পারবো না। তবে তাদের ধরন-ধারণ অনুসরন করতে পারি। এখন সময়, আমাদের, তাদের মত হয়ে কাজ করার। আরবীয়রা তাদের ভাষা দিয়ে প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার বছর ধরে সারা দুনিয়ায় ছড়ি ঘুরিয়ে বেড়াচ্ছে। আরবীয়ানদের সে পথ পরবর্তীতে ইংরেজরা অনুসরণ করে। ইংরেজদের আগে স্পানিশরাও একই ভাবে দুনিয়ার একতৃতীয়াংশ মানুষকে তাদের ভাষা শিখিয়ে নিয়েছিল। এ তিন গোষ্ঠীর মানুষ তাদের ভাষা দিয়ে সারা দুনিয়াকে তাদের সাম্রাজ্য বানিয়ে রেখে শাসন করে যাচ্ছে। আরবীয়ানরাতো তাদের ভাষাকে গর্বভরে কল্পিত স্বর্গের ভাষা বলে ঘোষণা দেয় এখনও। এ পর্যায়ে ইংরেজ আর স্পানিশরাও কম করেনি। তারা বুঝে, কোন জাতিকে নিজের মত করে নিতে হলে সবচেয়ে উত্তম রাস্তা নিজের ভাষা সংস্কৃতিকে ধীরে ধীরে তাদের শিখিয়ে দেয়া। এখনও বাংলাদেশে মক্তব মাদ্রাসায় আরবী পড়ানোতো হয়ই উপরন্তু এও বলা হয় যে, অর্থ পরে জানলেও হবে। আগে মুখস্ত করে নাও।

আমাদের বাঙ্গালী মৌলবী, মৌলানাগন এটি বুঝেও বুঝেন না যে বিষয়টি আরবীয়ানদের জাতিগত সুবিধার জন্য তাদেরকে এভাবে বলতে শিখিয়ে দেয়া হয়েছে শত শত হাজার বছর আগে। আর তাঁরা এখনও সেই বোঝা কাঁধে বয়ে চলেছেন কল্পিত সেই স্বর্গের আশায়। প্রবঞ্চনাময় মিথ্যা আশ্বাসে নিরীহ সাধারণ মানুষ যুগ যুগ ধরে প্রতারিত হচ্ছে। আরবদের মত করে নিজের ভাষা সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার বিষয়ে কোন চিন্তাই করতে পারেন না আমাদের মৌলভী-মৌলানাগন। এতে করে নিজের পায়ে কুড়াল দিয়ে যে কুপিয়ে যাচ্ছেন যুগের পর যুগ শত শত বছরব্যাপী, বিষয়টি তাদেরকে বুঝানো আপাততঃ বেশ কঠিনই। কারণ হাজার বছরের অনুশীলনে বুনিয়াদ পরম্পরায় মনোজগৎ এভাবে তৈরী হয়ে আছে।
একই ভাবে, ইংরেজদের ১৯০ বছরের প্রত্যক্ষ শাসনে আমাদের সমাজে ইংরেজী ধ্যান-ধারনায় গড়ে উঠা কিছু মানুষ এখনও আছেন। তারা কথায় কথায় ইংরেজী বলতে খুব সাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এদের বেশীর ভাগই বিত্তশালী হওয়ায় তাদের আদলে ইংরেজী শব্দ মিশিয়ে কথা বলাকে কিছু মানুষ গর্বের বিষয় মনে করেন। একটু খেয়াল করলেই এর সত্যতা যেকোনজন প্রত্যক্ষ করতে পারবেন। দূরদর্শনের আলাপ থেকে শুরু করে ঘরোয়া বৈঠকে বসলে দেখা যায় কিছু শিক্ষিত মানুষই নিজের ভাষার সাথে ভুল হোক আর শুদ্ধ হোক দু’একটি ইংরেজী শব্দ মিশিয়ে কথা বলাকে খুব বনেদি মনে করেন। ইংরেজরাও আরবীয়ানদের অনুকরণ করে বিগত ১৯০ বছরে আমাদের রক্তের সাথে মিশিয়ে দিয়েছে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতির অনেক উপসর্গ। ইদানিং অবশ্য এ ঘোর অমানিশার পথ থেকে ধীরে ধীরে আমাদের শিক্ষক উস্তাদগন কিছুটা হলেও নিজের দিকে ফিরে তাকাচ্ছেন বলে মনে হয়। আমরা যতদিন এ ঘোর কেটে উঠতে না পারবো ততদিন অন্ধত্বের গোলামী থেকে মুক্তি পাবো না এটা স্থির নিশ্চিত।
কিছুটা হলেও আশার বিষয় হলো এখন আর সেদিন নেই। আরবীয়ান, ইংরেজ বা স্পানিশদের মত সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, পেছনে পড়ে থাকা অজ্ঞ নিরীহ মানুষকে নিজের ভাষা সংস্কৃতি শিখিয়ে শাসন করা। এখন দুনিয়ার সকল জাতের মানুষই নিজের ভাষা ও সংস্কৃতির বিষয়টি খুব ভাল করে বুঝে। সকলেই বুজে রাজনীতির এই ঘোর মারপ্যাচ। বাংলাদেশের ছোট্ট নৃগোষ্ঠী মনিপুরী, চাকমা, খাসী, মারমা এরা সকলেই তাদের নিজেদের ভাষা সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখায় খুবই সচেষ্ট। এবং এটি হওয়া খুবই যুক্তিসংগত।
এমনি অবস্থার মাঝে নতুন করে ‘ইন্টারনেট’ আর ‘ডিজিটেল’ ব্যবস্থা একটি আশার বার্তা নিয়ে সারা বিশ্বব্যাপী আবির্ভুত হয়েছে। এ এক যুগান্তকারী বৈপ্লবিক অবস্থা। ইন্টারনেট সুবিধার কারণে দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাংলাভাষায় অভিজ্ঞ বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ‘অনলাইন ডিজিটেল’ মাধ্যমের সহায়তায় বাংলা ভাষার সাংবাদিকতাকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছেন। ইন্টারনেট ও ডিজিটাল সুবিধা কাজে লাগিয়ে ছোট বড় আকারের বাংলাভাষার বহু সংবাদপত্র, ব্লগ ও দূরদর্শন সারাবিশ্বব্যাপী এখন সক্রিয় রয়েছে। ফলে কোন গবেষণা ছাড়াই বলা যায়, সারা বিশ্বব্যাপী এখন ছড়িয়ে পড়েছে বাংলা ভাষায় সাংবাদিকতা। ইংরেজী, আরবী, স্পানিশ ভাষায় সাংবাদিকতার এতোদিনের গড়ে উঠা সাম্রাজ্যকে মোকাবেলা করে বাংলা ভাষার সাংবাদিকতা হাটি হাটি পা পা করে হলেও এগিয়ে যাচ্ছে। একই সাথে বাংলা সাহিত্যেরও পরিধি সম্প্রসারিত হচ্ছে। শুনা যায়, একমাত্র বাংলাদেশ থেকেই ৩০হাজারের উপর বাংলায় অনলাইন সংবাদমাধ্যম ও দূরদর্শন সক্রিয় আছে।
বাংলা ভাষা আন্দোলনের মহান একুশের এ মাসে আমরা অবশ্যই চাইনা আমাদের আশ-পাশে থাকা ছোট ছোট নৃগোষ্ঠীকে বাংলা ভাষা দিয়ে হজম করে নিয়ে তাদের বাঙ্গালী বানিয়ে নেবো। আবার কোন অজুহাতেই আমাদের ভাষার প্রয়োজনীয় ব্যবহার, সংস্কার ও দিকে দিকে ছড়িয়ে দেয়ার কাজ থেকে আমরা কোন অবস্থায়ই বিচ্যুত হতে চাই না। যে কোন ধরনের গবেষণা, ভাষার উৎকর্ষতা ও উন্নয়নে বিশাল সহায়কের ভূমিকা রাখে। এক্ষেত্রে সকল বিষয়ে গবেষণার দিকে আমাদের মনোযোগী হতে হবে অত্যাবশ্যক মনে করে। আমাদের বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে ছোট কোন দফতরের কারনীক পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে ভাষার ব্যবহারকে শর্তহীনভাবে নিশ্চিত করতে হবে। ধর্মের মতো ভাষার বিষয়কে রাজনৈতিক ব্যবহার থেকে দূরে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের সকলকে নিঃসংকোচে নিঃশর্তভাবে কাজ করতে হবে। এ সমূহ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। কোলকাতা এ ভূমিকায় শক্তিশালী অংশীদার হতে পারে।

এ জাতীয় সংবাদ

তারকা বিনোদন ২ গীতাঞ্জলী মিশ্র

বাংলা দেশের পাখী

বাংগালী জীবন ও মূল ধারার সংস্কৃতি

আসছে কিছু দেখতে থাকুন

© All rights reserved © 2021 muktokotha
Customized BY KINE IT