১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সিদ্ধান্ত নিলো মুক্তিকামি বাঙালীকে থামিয়ে দিতে হলে গনহত্যা চালাতে হবে। তাই এই নরপশুরা বেঁচে নিলো ঢাকা বিঃবিদ্যালয়ের ইকবাল হলকে। এর নাম দেয়া হয়েছিলো *অপারেশন সার্চ লাইট*।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দোয়ারখ গ্রামের বাসিন্দা জনাব মশাহিদ উদ্দিন আহমদ(মাসুক) সেই সময়ে কর্মরত ছিলেন ঢাকাস্থ তিব্বত ফ্যাকটরিতে। উনি অবসর সময়ে প্রায়ই ঢাকা হলে(বর্তমান শহীদুল্লাহ হল) যেতেন উনার এক বাল্যবন্ধুর সাথে দেখা করতে। সেই বন্ধু তখন ঢাকা বিঃবিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ছিলেন।
নিয়তির লেখা অনুযায়ী জনাব মাসুক ২৫ তারিখেও গিয়েছিলেন বন্ধুর সাথে দেখা করতে। এবং তারপর বাকী সবই ইতিহাস।
লিখছিলাম আমাদের বাল্যবন্ধু লন্ডন প্রবাসী জুনেদ আহমদ ও মরহুম দিলদার আহমেদের( আমেরিকায় সড়ক দূর্ঘঠনায় নিহত) শহীদ পিতার কথা।
সেই কালো রাত্রীতে যে সকল তাজাপ্রাণ ঝরে গিয়েছিল তাঁদের মধ্যে আমাদের বন্ধুর পিতাও একজন। ঘটনাক্রমে শহীদ মাসুক সাহেবের সেই বন্ধু গুলিবিদ্ধ হলেও প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। কারণ হানাদারদের গুলিটা লেগেছিল উনার হাঁটুতে। এবং সাথে সাথে উনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। শকুনের দল ভেবেছিল উনিও মৃত্যুবরণ করেছেন। জ্ঞান ফেরার পর উনি কোনক্রমে নিরাপদে জায়গাটি ত্যাগ করতে সফল হয়েছিলেন।
যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আমাদের বন্ধুরা ওদের পিতার কোন খবরই জানতো না। উনি বেঁচে আছেন কি না? পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হবার পর ২৫শে মার্চে আহত হওয়া উনার বন্ধু খবর পাঠালেন যে ঐ রাত্রীতে আমাদের বন্ধুদের পিতা শহীদ হয়েছেন। তখনই তাদের পরিবার জানতে পারলো যে জনাব মাসুক আর বেঁচে নেই।
পরাজিত পাকিস্তানিদের বর্বোরচিত হত্যাকাণ্ডে সেই দিন শহীদ হয়েছিলেন অসংখ্য নিরীহ বাঙালী।
আজ ২৫শে মার্চ ২০১৯। বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে গিয়ে যে সকল নরনারী জীবন বিসর্জন দিয়েছেন এবং পজ্ঞুত্ত বরণ করে এখনো জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন তাদেঁর এবং তাঁদের পরিবারের সবাইকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। (তথ্য সূত্রঃ শহীদ মাসুক সাহেবের ছেলে বাল্য বন্ধু জুনেদ আহমদ)