মুক্তকথা সংবাদকক্ষ।। ব্রিটেনের মোট ৬৫০টি আসনের সাংসদ নির্বাচন করতে গতকাল বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ভোট হয়ে গেলো। রক্ষণশীলরাই এবারের ভোটে জয়ী হয়েছে। যেখানে ৩২৬টি আসনে পাশ হলে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা হয়ে যায় সেখানে রক্ষণশীলরা ৩৯টি আসন বেশী পেয়েছে। তাদের পাওয়া মোট আসনের সংখ্যা ৩৬৫টি। শ্রমিকদল পেয়েছে ২০৩টি আসন, লিবারেল ডেমোক্রেট পেয়েছে ১১টি আসন, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি পেয়েছে ৪৮টি আসন এবং আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিষ্ট পার্টি পেয়েছে ৮টি আসন।
রক্ষণশীল দলের এই নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর তাদের প্রথম ও প্রধান কাজ হবে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার বিষয়ে তড়িৎ বিহীত ব্যবস্থা নেয়া। এমন দৃঢ়তা ব্যক্ত করে বক্তব্য রেখেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
তিনি বলেছেন যে সাধারণ মানুষ এমন বিপুল ভোটে তাদের দলকে বিজয়ী করেছে সেই ভোটারদের প্রতিদান দেবে দল। এই প্রতিদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আগামী ৩১ জানুয়ারীর মধ্যেই ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার সমূহ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর পরই তিনি এমন ঘোষণা দেন। তিনি আরো বলেন যে তাদের দলের এই বিপুল বিজয়ে এতোদিন ধরে সংসদে যে অচল অবস্থা চলে আসছিল এবার তার অবসানের সমূহ সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে।
ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসার বক্তব্যই মূলতঃ কাজ করেছে রক্ষণশীল দলের বিজয়ে পেছনে বলেই বিভিন্ন পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন খুবই মজার কথা বলেছেন। তিনি অনেক ভোটারের উদ্দেশ্যে বলেছেন যে আপনারা হয়তো আপনাদের ভোট আমাদের কর্জ দিয়েছেন। আপনারা কখনওই রক্ষণশীল দলের আসল সমর্থক নন। আগামীতে হয়তো আবারও শ্রমিকদলকেই ভোট দেবেন। তবে একবারের জন্য আপনারা যে আমাদের ওপরে আস্থা রেখেছেন, সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আপনাদের আমরা হতাশ করবো না। এর প্রতিদান অবশ্যই আপনারা পাবেন।
বরিস জনসন আরো বলেছেন, আমরা এমন মানুষজনেরও আস্থা অর্জন করেছি যারা আগে কখনও আমাদের ভোট দেননি। যারা আমাদের ভোট দিয়েছেন, তারা পরিবর্তন চান। সেজন্য আমাদের প্রথম কাজ হবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসা।
লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন ব্রেক্সিট নিয়ে নিজের অবস্থান নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি এখনও। হয়তো এ কারণেই শ্রমিকদলের ঘাঁটি রেড ওয়াল নামে খ্যাত সেন্ট্রাল ও নর্দার্ন ইংল্যান্ডেও অনেকে এবার রক্ষণশীল দলকে ভোট দিয়েছেন।
উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ২০১৬ সালে এক গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় দেন যুক্তরাজ্যের ভোটাররা। ব্রেক্সিটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের(ইইউ) সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের শর্ত নির্দিষ্ট করে কয়েক দফায় তৈরি হয় ব্রেক্সিট চুক্তি। তবে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট এসব চুক্তি অনুমোদন করেনি। এজন্য পার্লামেন্টে দলের আসন বাড়াতে ১২ ডিসেম্বর আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।