বাংলাদেশ-ভারত
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক দিল্লীতে" />
৩টি দ্রুত কার্য্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার ফলপ্রদ কার্য্যে রূপ দেয়া অধিক কার্য্যকর করার লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় বন্দীবিনিময় চুক্তি সংশোধন
মুক্তকথা: শনিবার ৩০শে জুলাই ২০১৬।।
৩টি দ্রুত কার্য্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার ফলপ্রদ কার্য্যে রূপ দেয়া
অধিক কার্য্যকর করার লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় বন্দীবিনিময় চুক্তি সংশোধন
গত বৃহস্পতিবার ২৮শে জুলাই দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশ-ভারত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক যৌথ সভা। সভায় ৩টি বিষয়ে অনতিবিলম্বে মানুষে দেখতে পায় এমন পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত সর্বসন্মতিতে গৃহীত হয়। দীর্ঘ ৩বছর পর এ বৈঠক হল।
বৈঠকে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং গত জুলাই মাসে ঢাকার গুলশানে সংগঠিত গায়ের লোম খাড়া হয়ে যাওয়া সন্ত্রাসী নরহত্যাযজ্ঞের নিন্দা করেন এবং শোকাকূল পরিবার-পরিজনের কাছে তার আন্তরিক শোকবার্তা জানান। আলোচনায় শ্রী সিং জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রতি তিনি ও তার সরকারের সর্বাত্মক সহযোগীতার নিশ্চয়তা দেন।
শ্রী সিং বলেন যে, উভয় দেশের উন্নয়ন-সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা ও শান্তি স্থায়ী ভাবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা উভয় দেশকেই সন্ত্রাস দমনে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। শ্রীরাজনাথ সিং ভারত-বাংলা উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা স্মরণ করে ১৯৭৪ সালের স্থলসীমান্তচুক্তি ও ২০১১ সালের আচরণবিধির সফল বাস্তবায়নে তার গভীর সন্তুষ্টির কথা প্রকাশ করেন।
তিনি আরও সন্তোষ প্রকাশ করেন, সীমান্তের অমিমাংষিত ৩০টি বিষয়ে স্বাক্ষর সম্পাদন, অমিমাংষিত সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারীদের তাদের সুবিধামত দেশে পূণর্বাসন, তাদের নাগরীকত্ব সুবিধার তড়িৎ ব্যবস্থা করা ও চুক্তির সমূহ বিষয় সময়মত সম্পন্ন হওয়ায়।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং ভারতের পক্ষে ভারতীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং।
২০১৫ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশে সফল সফরের কথা স্মরণ করে দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদ্বয় একমত হন যে ওই সফরে দুই দেশের সম্পর্কের মাঝে এক নতুন গতিশীলতা এনেছে, উভয় দেশের পারষ্পারিক সম্পর্কের সহযোগীতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করেছে। বন্ধুত্ব, বিশ্বাস ও পারষ্পারিক সুবিধার উপলব্দির আলোকে উভয় পক্ষই পারষ্পারিক ওই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো সামনের দিকে নিয়ে যাবার পুনঃনিশ্চয়তা দেন।
আলোচনার সময় উভয় মন্ত্রীই সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতীয় ঐক্যের আহ্বানের কথা স্মরণ করে সন্ত্রাসবাদ দমনে এক্যের উপর জোর দেন এবং সমাজের অস্থির অংশের দুরভিসন্ধিমূলক ছকের বিরুদ্ধে সজাগ থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। সেই সাথে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের বলিষ্ট পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানান। তথ্য আদান-প্রদান, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বাড়ানোর মধ্য দিয়ে চলমান সহযোগীতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য উভয় পক্ষ সহমত প্রকাশ করেন।
সম্পাদিত চুক্তির অতিশীঘ্র বাস্তবায়ন এবং সে অনুসারে সন্ত্রাস দমন এবং সংগঠিত দুষ্কর্ম ও নেশাদ্রব্য পাচার রোধে উভয়পক্ষ একমত হয়েছেন। ২০১৩সালে সম্পাদিত দ্বিপাক্ষিক নাগরীক হস্তান্তর চুক্তিকে আরো কার্য্যকর করার উদ্দেশ্যে অতিরিক্ত কিছু শর্তের সংযোজন স্বাক্ষরিত হওয়ায় উভয়পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা একমত হয়েছেন একটি প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে। বন্দী বিনিময় ও পাচারের শিকার মানুষদের উভয় পক্ষে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে অতিশীঘ্র পদক্ষেপের বিষয়েও তারা একমত হয়েছেন।
২০১৫ সালের জুন মাসে ভারতীয় প্রধান মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে যে তিনটি এমওইউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় আলোচনায় এ বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করে ৩টি দ্বিপাক্ষিক এমওইউ সম্মতঃ
সমুদ্রে বহুজাতিক বেআইনী চলাচল বন্ধ ও আঞ্চলিক সহযোগীতা উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতীয় উপকূল প্রহরী(Coast Guard)দের মধ্যে সহযোগীতামূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্য এমওইউ।
নকল মূদ্রাসরবরাহ বন্ধ ও চোরাইচালান প্রতিহত করার জন্য এমওইউ।
মানুষ পাচার বিশেষকরে মহিলা ও শিশু পাচার রোধে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং মানুষ পাচারকারীদের হাত থেকে উদ্ধারকরাদের প্রত্যাবাসন, একীকরণ, ত্রাণ ও পুনঃউদ্ধারের জন্য এমওইউ।
(সংবাদ-পিআইবি)