মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ও ড্রেসারের ভুল চিকিৎসায় গর্ভবতী গাভীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। প্রায় লক্ষাধিক টাকা মূল্যের গর্ভবতী গাভিটি মারা যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তেরও অভিযোগ তুলে প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী। রোববার বেলা ১২টায় বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কমলগঞ্জ ইউনিটের শমশেরনগরস্থ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন কমলগঞ্জ পৌরসভার নছরতপুর গ্রামের ফটিক মিয়া।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গরু বর্গা নিয়ে ও অর্ধেক টাকা পরিশোধ করে তিন বছর ধরে একটি জার্সি গরুর বাচ্চা লালন পালনের পর সম্প্রতি সাড়ে ৮ মাসের গর্ভবতী হয় গাভিটি। পনের দিন পরই গাভীটি বাচ্চা প্রসব করার কথা। তবে শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়ার পর গত ৬ মার্চ উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে গিয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আরিফ মইনুদ্দীন এর সাথে কথা বলেন। পরে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আরিফ মইনুদ্দীন তার সহকারী ঈমান আলীকে নিয়ে ফটিক মিয়ার বাড়িতে গরু দেখতে যান। গরু দেখার পর তিনি ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন এবং এক হাজার টাকা ফি দাবি করেন। গরিব লোক থাকায় ফটিক মিয়া ৩শ’ টাকা ফি দিলেও পরে তাদের চাপাচাপিতে পাঁচশত টাকা দিতে বাধ্য হন। পরদিন ৭ মার্চ ফটিক মিয়া ঔষধ কিনে অফিসে গিয়ে চিকিৎসকের সাথে দেখা করলে ড্রেসার লিটন মিয়াকে নিয়ে যেতে বলেন। বিকালে লিটন মিয়া গিয়ে ঔষধ পুশ করা যাবে না বলে ৪টি প্যারাসিটামল খাওয়াতে বলেন। ৯ মার্চ আবারো লিটন মিয়া বাড়িতে গরু দেখে স্যালাইন ইনজেকশন দেয়া যাবে না বলে জানান। এজন্য তাকে ২শ’ টাকা ফি প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ১১ মার্চ শুক্রবার দুপুরে ফটিক মিয়ার বাড়িতে গিয়ে ড্রেসার লিটন মিয়া স্যালাইনের সাথে ইনজেকশন দ্রুত বেগে গরুর গায়ে পুশ করান। স্যালাইনের অর্ধেক যেতে না যেতেই গরুটি মারা যায়। কৃষক ফটিক মিয়া বলেন, প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ও ড্রেসারের ভুল চিকিৎসার কারণে গর্ভবতী গরুটি মারা যাওয়ায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এবিষয়ে প্রশাসনের কাছে তিনি বিচার দাবি করেন।
তবে অভিযোগ বিষয়ে ড্রেসার লিটন মিয়া বলেন, স্যারের ব্যবস্থাপত্র এবং নিয়ম অনুযায়ী গরুর শরীরে ঔষধ প্রয়োগ করা হয়েছে। আমার কোন ত্রুটি নেই।
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আরিফ মঈনুদ্দীন বলেন, কয়েকদিন ধরেই গরুটি খুবই অসুস্থ ছিল। আমি ব্যবস্থাপত্র দেয়ার তিনদিন পর ফটিক মিয়া ঔষধ দিয়েছেন। আমার চিকিৎসায় কোন ভুল ছিল না। ফটিক মিয়ার কাছে ফি হিসাবে পাঁচশত টাকা দাবি করলে ৪৫০ টাকা দিয়েছেন বলে জানান।