অবাক করা হলেও বিষয়টি সত্য। এখনও ইরাণের একটি গ্রাম রয়েছে যার বাড়ীঘর ৭০০বছরের পুরানো পাথুরে গুহাবাড়ী। গ্রামের নাম কান্দোভান। গ্রামটি উত্তর-পশ্চিম ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের ওসকু কাউন্টির সদর সাঁদ পল্লী জেলার একটি প্রাচীন গ্রাম। এটি ওসকু শহরের নিকটবর্তী সান্দ পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত।
২০০৬ সালের আদম শুমারিতে, গ্রামের জনসংখ্যা ১৬৮ পরিবারে ৬০১ জন। গ্রামটি কঠিন শিলাপাথর কেটে মনুষ্যনির্মিত পর্বতারোহণ আবাসগুলির অন্যতম উদাহরণ হিসেবে আজো টিকে আছে।
সবচেয়ে অবাক করা আশ্চর্যের বিষয় হলো বাড়ীগুলো পাথরের পাহাড় কেটে প্রায় ৭শত বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল এবং আজও ব্যবহৃত হয়ে যাচ্ছে। গ্রামে প্রাচীন ওইসকল মানুষের অনেক বুনিয়াদ এখনও এসব বাড়ীঘরে বসবাস করে আসছেন। সুযোগ থাকলেও তারা অন্য কোথায়ও আধুনিক বাড়ীঘরে যেতে নারাজ। আবার অনেকেই খালি ফেলে রেখে অন্যত্র চলে গেছেন।
শিলাকাটা পাথর ঘরের ভেতর দৃশ্য। ছবি: অন্তর্জাল | নিপুণ হাতে কঠিন শিলা পাথর কেটে আবাস তৈরী। ছবি: অন্তর্জাল |
প্রায় হাজার বছরের পুরোনো প্রচীন মানুষদের আগ্নেয়শিলা পাথর কাটার এমন নিপুণ কাজ দ্বিতীয় কোথায়ও পাওয়া যায় না। কিছুটা মিল পাওয়া যায় তুরস্কের কাপ্পাদোসিয়া অঞ্চলের শিলাবাড়ীর সাথে।
অন্তর্জাল ঘেঁটে যতদূর জানা যায় কয়েক হাজার বছর আগে ওই সান্দ পর্বতের পাদদেশে এক আগ্নেয়গিরির উদগিরণ থেকেই এই আগ্নেয়শিলার উদ্ভব হয়েছিল। বহু শতাব্দি পরে মানুষ সে শিলা কেটে বসবাসের জায়গা তৈরী করে নেয়। শিলাভাঁজের পরতে পরতে পাথর কেটে এমন শৈল্পিক নমুনায় ঘর বানানো হয়েছে যে তা আজো মানুষের মনে বিস্ময়ের জন্ম দেয়। অত্যাধুনিক না হলেও আধুনিক সাজানো বাড়ীঘরের চেয়ে কোন অংশেই কম নয় এসকল কঠিন পাথরকাটা গুহাবাড়ী। এসবের মাঝে দ্বিতল বাড়ীও রয়েছে। প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় সকল এলাকা থেকেই ভ্রমণপিপাসু মানুষ এখানে আসেন শিলাপাথর কাটা গুহাবাড়ী দেখার জন্য।
ইদানিং অবশ্য আধুনিক সাজসরঞ্জাম দিয়ে বাড়ীঘরগুলোকে সাজানো হচ্ছে। নির্দ্বিধায় বলা যায় বাড়ীগুলোর এমন উন্নয়নের মূলে রয়েছে পর্যটন ও বিক্রির সুবিধা ভোগ করা।
তথ্যসূত্র: অন্তর্জাল