চরম যন্ত্রণাদায়ক, মর্মভেদী চিত্রটি একটি মৃত ‘সাগর কচ্ছপ’এর। প্রাণ হারিয়ে একটি সমুদ্র সৈকতে পড়ে আছে। মুখে তার বিশ্বনিন্দিত পরিবেশ দোষণকারী প্লাষ্টিকের কিছু ছেঁড়া টুকরা। ছবিতে কচ্ছপটির অবস্থা দেখেই বুঝা যায় যে মুখে প্লাষ্টিক ব্যাগ লেগে মুখ বন্ধ হয়ে গেছিল। ফলে খেতে না পেরেই তার মৃত্যু হয়েছে বলেই বিশেষজ্ঞদেরও অনুমান।
সাগর কচ্ছপের প্রায় প্রতিটি প্রজাতিই এখন বেঁচে থাকার এক বিপজ্জনক সময় পার করছে এই পরিবেশ দুষণকারী প্লাষ্টিকের কারণে। প্লাষ্টিক বর্জ্যের জঞ্জালে এ ভাবেই মারা পড়ছে সামুদ্রিক কচ্ছপেরা। ছবি: অন্তর্জাল
সাগরের ঢেউ, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের একটি সৈকতে মৃত সাগরকচ্ছপটিকে ভাসিয়ে এনে তুলে রেখে যায়। অপরূপ সুন্দরের প্রতিচ্ছবি সাগরকচ্ছপ জাতীয় প্রজাতিগুলো আশংকাজনক হারে মারা পড়ছে। প্লাষ্টিকের ছেঁড়া টুকরোগুলোকে জেলিমাছ মনে করে খেতে গিয়েই প্লাষ্টিকে মুখ বন্ধ হয়ে গিয়ে এ অবুজ প্রাণীগুলো মারা পড়ছে। একইভাবে সামুদ্রিক পাখীরাও বর্জ প্লাষ্টিকের পাতলা টুকরো গুলোকে খাবার ভেবে মুখে তুলতে গিয়ে মুখ বন্ধ হয়ে উপবাসে মারা পড়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। মারা যাওয়া কচ্ছপ নিয়ে বৈশ্বিকভাবে হিসেব করতে গিয়ে দেখা গেছে শতকরা ৫২ভাগ সামুদ্রিক কচ্ছপ প্লাষ্টিক খেয়েছে।
তুরস্কের আদানা চুকুরভা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুক্ষক্ষুদ্র প্লাষ্টিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সেদাত গান্দেগ্ধু বলেন, তুরস্কের ভূমধ্যসাগরীয় সৈকতে সামুদ্রিক কচ্ছপের এমন মৃত্যু প্রায় নিত্যকার বিষয় হয়ে উঠেছে। অবস্থা এমনই যে এসকল কচ্ছপের অন্ত্রে পর্যন্ত প্লাষ্টিক পাওয়া যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এসকল অবুঝ সামুদ্রিক কচ্ছপ সৈকতে ডিম পারার জন্য প্লাষ্টিক ব্যবহার করে। যা তাদের আচরণে পরিবর্তন আনতে পারে। সমুদ্রসৈকতে এতো বিপুল পরিমান প্লাষ্টিক বর্জ্যের ছড়াছড়ি থাকলে, যেসকল স্ত্রী কচ্ছপ ডিম পারার জন্য সৈকতে আসে তাদের মাঝে একটি বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। গবেষণায় এমনও দেখা গেছে যে বিপুল এই প্লাষ্টিক দূষণের কারণে ডিম না পেরেই স্ত্রী কচ্ছপ সাগরে ফিরে গেছে। সংবাদসূত্র: দৈনিক মিরর
|