কন্ট্রোল রুম চালুকুশিয়ারায় পানি বৃদ্ধি, নদী পাড়ে ত্রাণের জন্য হাহাকারমৌলভীবাজার, তারিখঃ ১৯ জুন ২০২২ইংমোঃ আব্দুল ওয়াদুদ ও ওমর ফারুখ নাঈম৩ দিনের অভিরাম ভারি বর্ষন ও উজান থেকে আসা ঢলে কুশিয়ারা নদীতে প্রচুর পরিমানে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। মৌলভীবাজার শহর দিয়ে ঘেঁষে যাওয়া মনূ নদ-এ প্রতি ঘন্টায় ৫ সেঃ করে পানি বাড়ছে। এছাড়াও লাগাতার এই বৃষ্টি বন্ধ না হওয়াতে মৌলভীবাজারের দুই উপজেলার প্রায় ৫০টি গ্রামের মানুষ পানি বন্দি হয়ে নানা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। জেলার রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের বকসিপুর,সিক্কাগাঁও,কামালপুর,আমনপুর,সুরীখাল,যুগীকোনা,কেশরপাড়া,সুনামপুর,উমরপুর,কান্দিাগাঁও, জোড়াপুর,গালিমপুর ও ফতেপুর ইউনিয়নের সাদাপুর, বিলবাড়ি,হামিদপুর,বেড়কুড়ি,শাহাপুর,জাহিদপুর,আব্দুল্লাহপুর,ছরখারপাড়,রশীদপুর,ইসলামপুর ও মনূমুখ ইউনিয়নের আরো বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। |
মৌলভীবাজার থেকে সাংবাদিক ওমর ফারুখ নাঈম রোববার ১৯ জুন ২০২২ইং তারিখে আরও লিখছেন-বৃষ্টিপাত, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং কুশিয়ারা নদী ও হাকালুকি হাওরের পানি বেড়ে মৌলভীবাজার জেলার ১০টি ইউনিয়নের ২০০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে জেলার এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন। জেলা প্রশাসক কার্যালয় এসব তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অর্ণব মালাকার। বড়লেখা উপজেলার পাশাপাশি পাহাড়ধসে উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের আয়েশাবাগ চা বাগানে একজন নিহত ও সদর ইউনিয়নের কেছরিগুল গ্রামে একজন আহত হয়েছেন। বিদ্যুতের সাবস্টেশন ইতোমধ্যেই পানিতে ডুবে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। কুলাউড়া উপজেলায় অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নদ-নদীসহ হাকালুকি হাওরের পানি বেড়ে ভূকশিমইল, ভাটেরা, জয়চন্ডী, ব্রাহ্মণবাজার, কাদিপুর ও কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের প্রায় সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কর্মধা ইউনিয়নের মহিষমারা গ্রামের ফানাই নদীর বাঁধ ভেঙে মহিষমারা, বাবনিয়া, হাশিমপুর, ভাতাইয়া ও পুরশাই গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে। গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। জুড়ী উপজেলায় গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ২৮টি গ্রামের প্রায় ১৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব গ্রামের অধিকাংশ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় ২৪টি পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। |
|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
এছাড়া জায়ফরনগর ইউনিয়নের গৌরীপুর ও সাগরনাল ইউনিয়নের কাশিনগর গোয়ালবাড়ি পশ্চিম শিলুয়া গ্রামে জুড়ী নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাঁধ মেরামত কাজ চলছে।
এদিকে, সদর উপজেলায় ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে খলিলপুর, মনুমুখ, আখাইলকুড়া, কনকপুর, কামালপুর, চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এখানে বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা সাত হাজার ৫০০ জন। রাজনগর উপজেলায় ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে চার ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এখানে বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ৫ ইউনিয়নের ১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এই ইউনিয়নে বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যা চার হাজার। কমলগঞ্জ উপজেলায় বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীর পাড় ভেঙে ৯টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, মনু ধলাই ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার খুব কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন অবস্থায় বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন কর্তৃক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বর ০৮৬১-৫২৭২৫। মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, বন্যাদুর্গতদের সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে। রবিবার থেকে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে। |