“এরা কোনকিছুই মানে না, নেতাও মানে না”-শ্রমিক সম্পাদক নিপেল দেশের চলমান চা শ্রমিকদের কর্মবিরতি দ্বিতীয় বারের মত প্রত্যাহার করলেও সোমবার থেকে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন চা বাগানে আবারো আন্দোলনে নেমেছে একাংশের চা শ্রমিকেরা। জেলার বিভিন্ন বাগানে চা শ্রমিক নেতাদের উপর চড়াও সহ মারধর করছেন তারা। এদিকে সোমবার বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি পঙ্কজ কন্দকে শ্রমিক কর্তৃক মারধর করার খবর বের হয়েছে। জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার বালিশিরা ভ্যালীর আওতাধীন কালিঘাট চা বাগানের শ্রমিকরা তাকে মারধর করেন। এক সূত্র জানায়, সকালে উপজেলার কালিঘাট চা বাগানে শ্রমিকদের সাথে দেখা করতে যান চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা পঙ্কজ কন্দ। দ্বিতীয় বারের মত কর্মবিরতি প্রত্যাহারের খবর জানাতে গেলে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে উপর্যোপুরী মারধর করেন। এদিকে জেলার কুলাউড়া উপজেলার ক্লিবডন চা বাগানের ব্যবস্থাপক হাসিবুল ইসলাম সোমবার রাতে জানান, দ্বিতীয় বারের মত চা শ্রমিকেরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেও ফের সোমবার দিনভর কর্মবিরতিসহ সেই আগের মত আন্দোলনে জড়ো হয় তারা। উত্তরভাগ ও ইন্দানগর চা বাগান ব্যবস্থাপক মো. লোকমান চৌধুরী বলেন, তার বাগানে চা শ্রমিকরা ফের আন্দোলনে লিপ্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চা শিল্প ধ্বংশ করতে পিছনে কেউ কল-কাঠি নাড়াতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রিয় চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেল পাল বলেন, “এরা কিছুই মানে না, নেতাও মানে না। তিনি বলেন, চা শ্রমিক নেতাদের প্রতিপক্ষরা তাদের উস্কানি দিয়ে আন্দোলনে লিপ্ত করছে”। উল্যেখ্য, গেল রোববার দিবাগত রাত ৯টায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চা শ্রমিক নেতাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা বৈঠকে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে। জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান’র সভাপতিত্বে চা শ্রমিক নেতাদের উপস্থিতিতে এক জরুরী সভায় প্রধানমন্ত্রীর উপর বিশ^াস ও আস্থা রেখে তাদের চলমান ওই ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয় এবং সোমবার থেকে তারা বাগানে কাজ করবেন এমন অঙ্গিকার করা হয়। ওই সমঝোতায় স্বাক্ষর করেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া ও বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম। সমঝোয় শ্রমিক নেতাদের মধ্যে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেল পাল, চা শ্রমিক নেতা বিজয় হাজরা, পঙ্কজ কন্দ ও মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামসহ অনেকে। এদিকে গত ৯ আগষ্ট থেকে ১২ আগষ্ট পর্যন্ত দিনে ২ঘন্টা ও ১৩ আগষ্ট থেকে ২১ আগষ্ট পর্যন্ত পূর্ণদিবসসহ মোট ১৩ দিনের কর্মবিরতিতে দেশের চা শিল্প বিশাল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ধর্মঘটে মৌলভীবাজার জেলায় চা ফ্যাক্টরীর দৈনিক ক্ষয়ক্ষতির একটা পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানে প্রতিদিন প্রায় ১৪ কোটি ৭২ লাখ টাকার লোকসান হয়েছে। |