আশিকুল এসকে
বর্তমান যুগকে ডিজিটাল যুগ বলা হচ্ছে। দেশকে বলা হচ্ছে- ডিজিটাল বাংলাদেশ। কোন কোন সম্ভাবনাকে বলা হচ্ছে- ডিজিটাল সম্ভাবনা।‘তথ্য প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বাংলাদেশে ঘরে বসেই আমরা স্বাস্থ্য, আইন বা যে কোনো সেবা তাড়াতাড়ি পেতে পারব।`ডিজিটাল বিলবোর্ড, শিক্ষাব্যবস্থা ডিজিটাল, ব্যাংকিং লেনদেন, কৃষিসেবা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, ট্রাফিক সিস্টেম, বিভিন্ন চিঠি/আবেদন আদান-প্রদান, ওডিও-ভিডিও কথা বলা, কেনাকাটা, থানায় জিডি, ভ্রমন টিকেট, একাধিক অপারেশন, স্ক্যানিংমেশিন এক্স-রে মেশিন ডিজিটাল, সহ চিন্তা চেতনাও ডিজিটাল।
বাস্তব, অবাস্তব, অর্ধবাস্তব সকল কিছুতেই ডিজিটাল শব্দটি সহজে যুক্তকরা যাচ্ছে। অশিক্ষিত-শিক্ষিত সকলেই এর মানেও ইতিবাচক কিছু একটা বুঝেনিচ্ছেন। কিন্তু “ডিজিটাল” শব্দটির সেই মানে তারা কি “সংখ্যাগত” বোঝেন নাকি “অঙ্গুলিসংক্রান্ত” বোঝেন? তবে অনেকেই হয়ত বলবেন যাকিছু কম্পিউটার সংক্রান্ত তাই ডিজিটাল। এই কথার সঙ্গে “সংখ্যাগত” আর “অঙ্গুলিসংক্রান্ত” শব্দদ্বয়ের মিল আছে বটে। কিন্তু ডিজিটাল শব্দটি যখন আরো ব্যাপকভাব বোঝাতে ব্যবহার করা হয় তখন মনেহয়- যা কিছু অত্যাধুনিক তাই ডিজিটাল।
সরকার মনে করছে, তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক সেবাদানের প্রক্রিয়া সবে মাত্র শুরু হয়েছে৻ এর আরো প্রসার ঘটলে, এবং কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা আরো বাড়লে এই ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা আরো পরিষ্কার হবে।
ডিজিটালের আরো ব্যাখ্যাঃ- ইংরেজি Digit থেকে Digital শব্দের উৎপত্তি। Digit হচ্ছে noun আর Digital হচ্ছে verb. Digit অর্থ সংখ্যা আর Digital অর্থ আঙ্গুল দিয়ে গণনা করা। মূলত ডিজিটাল এর অর্থ গণনা করা হলেও “ডিজিটাল বাংলাদেশ” মানে তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ যা আঙ্গুল দিয়ে সংখ্যা গণনা করার মতই সহজ তাই অনেক সময় ডিজিটাল একটি রুপক অর্থে ব্যবহার করা হয়।
ডিজিটাল মানে গননা করা। কম্পিউটার আবিস্কারের পরেই ডিজিটাল বিষয়টি ইলেক্ট্রোনিক্স ডিভাইসে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমান যুগে প্রায় সমস্ত ইলেক্ট্রোনিক্স ডিভাইসগুলিতেই ডিজিটাল সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। এখন আসি ইলেক্ট্রোনিক্স ডিভাইসে ডিজিটাল সিস্টেম কিভাবে ব্যবহৃত হয়। আগে ইলেক্ট্রোনিক্স ডিভাইসগুলিতে এনালগ পদ্ধতি ব্যবহার করা হত। এনালগ পদ্ধতিতে তরঙ্গ বা সিগন্যাল কে ভেরিয়েবল ডিভাইস দ্বারা কমানো বাড়ানো হতো। বুঝানোর জন্যে বলছি, যেমন ১কেজি চাল বা আধা কেজি চাল বা ২০০গ্রাম চাল ইত্যাদি। এখানে চালের পরিমাপ বুঝানো হয়েছে। এখানে ২০০গ্রাম চালে কয়টি চাল আছে তা কিন্তু গননা করা হয়নি। কম বেশী পরিমাপটাই হলো এনালগ সিস্টেম। আর ডিজিটাল হলো প্রতিটি চাল গননা করা। ডিজিটাল শব্দ এসেছে ডিজিট থেকে। এখন আসি ইলেক্ট্রোনিক্সে ডিজিট কি। ইলেক্ট্রোনিক্স ডিভাইসে বিদ্যুৎ এর দুইটি আধান ব্যবহৃত হয়। এর একটির নাম ইলেক্ট্রোন অপরটির নাম প্রোটন। ইলেক্ট্রোন কনাকে ডিজিটাল সিস্টেমে ”০” (শুন্য) হিসাবে গননা করে। আর প্রোটনকে ”।” (দাঁড়ি) হিসাবে গননা করে। বর্তমান যুগে সকল ইলেক্ট্রোনিক্স ডিভাইসে তরঙ্গ বা সিগন্যালকে (শব্দ, ব্রাইট, কালার ইত্যাদি) গননার মাধ্যমে বাড়ানো কমানো হয়। এটাই ডিজিটাল। পরিমাপ করে কমানো বাড়ানো কে এনালগ বলে। আর গননা করে কমানো বাড়ানোকে ডিজিটাল বলে। আর ব্যবহারিক অর্থে যেখানে কম্পিউটার, ইন্টারনেট ইত্যাদি ব্যবহার করে এ্যাকুরেট হিসাব, মাপ, সেবা ইত্যাদি দেয়া হচ্ছে সেখানেই আমরা ডিজিটাল ব্যবহার করছি।
ডিজিটাল সম্পর্কে একধরনের ভিন্ন ব্যাখ্যাঃ- রোবোট ও মানুষ উভয়ই সৃষ্ট, রোবোট মানুষের সৃষ্টি আর মানুষ মহান আল্লাহ পাকের সৃষ্টি।
রোবোটের ব্যবহারকারী যাতে সুবিধামত প্রোগ্রাম বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন সেজন্য তার অভ্যান্তরে দেওয়া থাকে একটি কোডিং লাইব্রেরী, তদ্রুপ মহান আল্লাহ পাক মানুষের সুবিধামত প্রোগ্রাম বানানোর জন্য মানুষের লাইফ সিস্টেমের অভ্যান্তরে দিয়েছেন একটি কোডিং কিতাব আল-কুরআন।
রোবোটের অপারেটিং সিস্টেমের রয়েছে তিনটি অংশ বেসিক, ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল। তদ্রুপ মানুষের লাইফ সিস্টেমেও রয়েছে তিনটি অংশ ঈমান, ইসলাম ও ইহসান। -কৌড়া থেকে