মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে অবশেষে ভয়ংকর অজ্ঞান পার্টির ৫ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্প। ২৬ সেপ্টেম্বর বড়লেখা থানায় দায়ের করা চুরি মামলায় র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল আসামীদের গ্রেফতার করে।
গত ১৫ অক্টোবর রাত অনুমানিক ১০.৩০ মিনিটে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল শ্রীমঙ্গলে অভিযান পরিচালনা করে অজ্ঞান পার্টির ৫ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। সূত্র জানিয়েছে, ওই চক্রটি সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে টাকায় বরকত বাড়ানোর ফুঁ দেয়ার নামে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে বিশাল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে বিভিন্ন সুত্র ও পুলিশ নিশ্চিত করছে। মূলত তারা নারীদের টার্গেট করে বিভিন্ন ব্যাংকের সামনে ওঁত পেতে থাকে। যে নারী তাদের ফাঁদে পা দেয় মূলত তার টাকাই হাতিয়ে নিয়ে তারা সটকে পড়ে। এই চক্রের মূল হোতা হিসেবে নেতৃত্ব দেয় ইব্রাহিম নামের ভয়ানক প্রতারক।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রাজটিলার মৃত তুফান মিয়ার পুত্র ইব্রাহিম মিয়া(৫৯), বালিগাঁওয়ের মৃত মতি মিয়ার পুত্র মোঃ শাহাব উদ্দিন(৩৪), নগর এলাকার মৃত কলিম উল্লাহ চৌধুরী পুত্র মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী(৩৩), দক্ষিণ রাজটিলার ইব্রাহিম মিয়ার পুত্র শরীফ মিয়া(২৩) ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের হাবিব মিয়ার পুত্র জুবায়ের মিয়া(২৮)।
র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুর। বড়লেখা পৌরশহরে পূবালী ব্যাংক বড়লেখা শাখা থেকে ৭৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেন কাতার প্রবাসী ছুয়াব আলীর স্ত্রী ছাবিয়া বেগম। ব্যাংক থেকে বেরিয়ে তিনি পড়েন এক প্রতারক চক্রের ফাঁদে। চক্রটি টাকায় বরকত বাড়ানোর ফুঁ দিয়ে দ্বিগুণ টাকা বাড়িয়ে দেয়ার নামে ছাবিয়া বেগমের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় ৭৩ হাজার টাকা। পুরো ঘটনাটি ধরা পড়ে একটি সিসি ক্যামেরায়।
এই ঘটনায় সুজানগর ইউপির বড়থল গ্রামের কাতার প্রবাসী ছুয়াব আলীর স্ত্রী ছাবিয়া বেগম বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামী করে বড়লেখা থানায় চুরি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১০/১৪০, তারিখ- ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ, ধারা- ৩২৮/৩৭৯ পেনাল কোড-১৮৬০।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেশব্যাপী আলোচিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে আসামীদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব-৯ চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।
গত ১৫ অক্টোবর রাত অনুমানিক ১০.৩০ মিনিটে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল শ্রীমঙ্গলে অভিযান পরিচালনা করে অজ্ঞান পার্টির ৫ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেফতারকৃতদের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, ওই চক্রটি সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে টাকায় বরকত বাড়ানোর ফুঁ দেয়ার নামে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মূলত তারা নারীদের টার্গেট করে বিভিন্ন ব্যাংকের সামনে ওঁত পেতে থাকে। যে নারী তাদের ফাঁদে পা দেয় মূলত তার টাকাই হাতিয়ে নিয়ে তারা সটকে পড়ে। এই চক্রের মূল হোতা হিসেবে নেতৃত্ব দেন ইব্রাহিম।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের মূল হোতা ইব্রাহিমসহ গ্রেপ্তারকৃতরা কাতার প্রবাসী ছোয়াব আলীর স্ত্রী ছাবিয়া বেগমের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। পাশাপাশি কাতার প্রবাসীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া কিছু টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব-৯, সিলেট মিডিয়া অফিসার সিনিঃ এএসপি আব্দুল্লাহ আল-নোমান স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানান, যেকোন ধরনের অপরাধের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে র্যাব-৯ এর গোয়েন্দা তৎপরতা এবং চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।