শুধু ইকোপার্ক থেকে দেড় কোটি টাকার বৃক্ষ কর্তন
মৌলভীবাজারের বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক থেকে রাতের আধারে
মৌলভীবাজারে বন বিভাগের কয়েক কোটি টাকার বৃক্ষ নিধন হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে গাছ কাটার দৃশ্য ক্যামেরায় ধরা পড়ে। গাছ চুরি অব্যাহত থাকলেও বন বিভাগ নীরব ভূমিকা পালন করছে। এদিকে বন বিভাগ জানিয়েছে, চুরির ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মামলা হয়েছে কারো কারো বিরুদ্ধে।
জানা যায়, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ,সিলেট,(সদর দপ্তর,মৌলভীবাজার)এর অধিনে থাকা কোটি কোটি টাকার মূল্যবান বৃক্ষ প্রতিনিয়ত কেটে পাচার করছে একটি সক্রিয় চক্র। কয়েকটি গাছ চুরির ঘটনায় আসামী করে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু এতেও থেমে যায়নি বৃক্ষ নিধন। শুক্রবার ওই বিভাগের নিয়ন্ত্রনাধীন বর্ষিজোড়া ইকো পার্কের গহীন বনে গেলে এমন চিত্র ক্যামেরায় ধরা পড়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইকোপার্কের পিছনের মূল্যবান শাল গাছ কাটা হয়েছে। শুধু ওই স্থানের কাটা গাছ দেখে মনে হয়েছে, কিছু বৃক্ষ সম্প্রতি ও কিছু বৃক্ষ মাস ছয়-এক আগের কাটা। এভাবে বনের বহু টিলায় গিয়ে দেখা যায়, বনের প্রায় ৩শ গাছ উধাও হয়েছে। চালাক চুরেরা গাছ কেটে কোন প্রমাণ রেখে যায়নি। বৃক্ষের ডাল-পালা তো দূরের কথা, কাটা স্থানের গাছের ছালও পাওয়া যায়নি। ঘন শাল গাছের কারণে ‘শালবন’ বলেই মানুষ জানে।
বনে দুজন সশস্ত্র পাহারাদার থাকার পরেও কিভাবে এতো বৃক্ষ চুরি হয় এমন প্রশ্ন রেখেছেন স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, পাহারাদারদের যোগসাজসে এসব বৃক্ষ চুরি হচ্ছে। তারা জানান, পুরাতন একটি পূর্ণবয়স্ক চল্লিশোর্ধ্ব শালের দাম ১ লাখ টাকার উপরে। মধ্যবয়সী গাছ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের। এই হিসেবে ৩শ বৃক্ষের দাম সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা করে ধরা হলে দাম পড়ে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ইকো পার্কের গোয়ালাবাড়ি এলাকার ফনি মালাকার বলেন, “সারা বাগানেই গাছ কাটা হচ্ছে। কারা কাটে কইতাম(বলতে) পারি না। আমরা সকালে কাজে যাই, রাতে বাড়ি ফিরি”।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, সিলেট(সদর দপ্তর, মৌলভীবাজার)এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বৃক্ষ নিধনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গাছ চুরির ঘটনায় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন আসলে জানা যাবে। তিনি আরো বলেন, চুরির ঘটনায় কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে আসামীর নাম বলতে রাজি হননি তিনি। তিনি বলেন, আমাদের লোক সঙ্কট থাকার কারণে এগুলো পুরোপুরিভাবে দেখভাল করতে পারি না।