মহান মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি(সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ মৌলভীবাজার জেলার যৌথ উদ্যোগে মৌলভীবাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার গেইটের সামনে সকাল ১১টায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এবং সমাবেশ শেষে শহরে একটি লাল পতাকা মিছিল বের হয়।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, পুঁজিবাদী এই সমাজ ব্যাবস্থায় মালিক তার মুনাফার একটা উপাদান হিসেবে শ্রমিককে বিবেচনা করে। পুঁজিবাদী সমাজ কাঠামোয় প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র এবং তার সরকার প্রতিনিয়ত শ্রমিক নির্যাতন ও নিপীড়নের নতুন নতুন কলাকৌশল এবং আইন প্রস্তুত করছে। তেল এবং জল যেমন এক হতে পারে না ঠিক একইভাবে মালিক ও শ্রমিক শ্রেণি কখনো এক হতে পারে না। এই দুই শ্রেণির স্বার্থ আলাদা। মালিক চায় শ্রমিককে শোষণের মধ্য দিয়ে মুনাফা বৃদ্ধি করা আর শ্রমিক চায় তার প্রাপ্য অধিকার আদায়। আর এই সংগ্রামী চেতনায় শ্রমিক শ্রেণিকে অনুপ্রাণিত করে ঐতিহাসিক ‘মে দিবস’ যা সারা পৃথিবীর শ্রমিক শ্রেণী আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
বাংলাদেশে সকল পেশার শ্রমজীবীরা আজ শোষণের জাতাঁকলে পিষ্ট। সরকারের অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিলের নামে শ্রমিক স্বার্থকে পদদলিত করার জন্য আইন, শ্রমিকদের ধর্মঘট সহ সকল অধিকারকে হরণ করবে। শ্রমিকরা বেতন-মজুরী না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করলেও ডামি নির্বাচনের ডামি সরকারের কোন মাথাব্যথা নাই। সকল মাথাব্যথা শ্রমিকদের কিভাবে দমিয়ে রাখা যায় এ নিয়ে। ফলে ইতিহাস বলে একমাত্র বামপন্থীদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া ছাড়া শ্রমিকদের ভাগ্যের উন্নয়ন কোনভাবে সম্ভব নয়। আমাদের মুষ্টিবদ্ধ হাতের এই লাল পতাকাই পুঁজিবাদী রাষ্ট্র ও সমাজ কাঠামোকে উচ্ছেদের মাধ্যমে শ্রমিক শ্রেণির অগ্রগতির দিক নিশানা দেখাবে। তাই শ্রমিক আন্দোলনকে সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রামে পরিনত করতে হবে।
বাসদ মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক এডভোকেট মঈনুর রহমান মগনুর সভাপতিত্বে এবং সিপিবি জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জহর লাল দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি এডভোকেট মকবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক(ভারপ্রাপ্ত) এডভোকেট মাসুক মিয়া, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সদস্য এডভোকেট আবুল হাসান, বাসদ জেলা সদস্য ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজি পাশী, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী জেলা সাধারণ সম্পাদক রামেন্দ্র চন্দ্র দাস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সাধারণ সম্পাদক রাজিব সূত্রধর, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সভাপতি তপন দেবনাথ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।