ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়া বহু বাংলাদেশিকে ফিরে যেতে হবে!
২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪সালের মার্চ পর্যন্ত
বৃটেন ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। এ সমঝোতা স্মারকের উদ্দেশ্য হলো- যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে থাকা বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর বিষয়।
গত বৃহস্পতিবার দেশ দুটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ কর্ম দলের(জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ) প্রথম বৈঠকে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন খারিজ হওয়া, অপর দেশের অপরাধী এবং ভিসার মেয়াদ পার হয়ে যাওয়া অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো সহজ হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। দৈনিক টেলিগ্রাফ পত্রিকার উল্লেখ করে বিবিসি এ খবর প্রকাশ করেছে।
ব্রিটেনের ওই সংবাদপত্রটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গত বছরের মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ১২মাসে মোট ১১ হাজার বাংলাদেশি ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন।
ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে যে, গত এক বছরে ১১ হাজার বাংলাদেশি ব্রিটেনে এসেছেন ছাত্র, কর্মী কিংবা ভ্রমণ ভিসা নিয়ে। এরপর তারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করে ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে বসবাসের চেষ্টা করছে।
যারা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছে তাদের মাত্র পাঁচ শতাংশের আবেদন সফল হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশীরা পেছনের দরজা ব্যবহার করেছে এমন অভিযোগ এনে ওই খবরে আরো বলা হয়েছে যে, রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের যে সুবিধা ব্রিটেনে রয়েছে বাংলাদেশিরা সেটির অপব্যবহারের চেষ্টা করেছে।
সর্বাধিক আবেদন করেছেন পাকিস্তান থেকে আসা ব্যক্তিরা। তাদের সংখ্যা ১৭ হাজার ৪০০’র মতো। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত, যাদের আবেদনের সংখ্যা সাত হাজার চারশো।
এদিকে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন আরো উল্লেখ করেছে যে, মাত্র পাঁচ শতাংশ বাংলাদেশির রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন গৃহীত হয়েছে।
আগে ইইউ’র সঙ্গে থাকা চুক্তির আওতায় ব্রিটেন থেকে অবৈধ নাগরিকদের ফেরত পাঠানো হলেও ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের বেরিয়ে আসার পর দেশটির সাথে কোনো চুক্তি ছিল না। তাই এই সমঝোতা করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর মনেকরে, এর ফলে অবৈধ বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে একটি বাধা দূর হবে।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর মনে করে, এর ফলে অবৈধ বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে একটি বাধা দূর হবে। এতোদিন কাউকে ফেরত পাঠাতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে তার একটি সাক্ষাৎকার নিতে হতো নিজ দেশের দূতাবাসকে। এখন থেকে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকলে এই “অবশ্য পালনীয় সাক্ষাৎকার”(ম্যান্ডাটরি ইন্টারভিউ) এর প্রয়োজন হবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ইউরোপ যেতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মারা যাওয়াদের ১২ ভাগই বাংলাদেশি। সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে উদ্ধার পাওয়া ৩৩ জনের সবাই ছিল বাংলাদেশি, নিখোঁজ ছিল ৫০ জনেরও বেশি।