দেশে গাড়ীর সংখ্যা ৫৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৬৩টি
উপযুক্ততা ছাড়াই ৫-৬ লাখের বেশি গাড়ি চলছে
পুলিশের গাড়িরই ফিটনেস নেই – গেলো দু’তিনদিন আগে আমাদের সংবাদমাধ্যমের প্রধান শিরোনাম ছিল এটি। ওই দিনের পত্র-পত্রিকার ভাষায়- ঢাকা মহানগর পুলিশের(ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ ঢাকায় অবৈধ ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযানে নামে। ফিটনেস না থাকায় নাগরিকদের গাড়ি ডাম্পিংয়ে পাঠানোসহ জরিমানা করে ট্রাফিক পুলিশ। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ওই সব অভিযানে পুলিশ নিজেই ব্যবহার করে ফিটনেস বিহীন যানবাহন। বিষয়টা কতটা যে হাস্যকর তা পুঃন বলার অপেক্ষা রাখে না।
ঐদিনের সবক’টি সংবাদপত্র কিংবা অনলাইন পত্র-পত্রিকায় যেসকল শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল তার রূপটা ছিল এমনই-(শুধুমাত্র অহেতুক কলেবর না বাড়ানোর জন্য এখানে কেবল ৪টি সংবাদ মাধ্যমের উদৃতি দেয়া গেলো।)
সকল ছবি সংগৃহীত |
‘বাংলা ইনসাইডার’ তাদের অনলাইনে লিখেছিল-“৪৩ বছরের পুরনো বাস সড়কে চলে কীভাবে? Bangla Insider, https://www.banglainsider.com › ৪…”
‘বাংলা ট্রিবিউন’ লিখেছিল-23 Jul 2022 — “প্রতিবারই সড়ক দুর্ঘটনার পর বেরিয়ে আসে ফিটনেসবিহীন গাড়ি কিংবা চালকের লাইসেন্স না থাকার বিষয়টি। “ঢাকা মহানগরে পুলিশের গাড়িরই ফিটনেস নেই” ttps://www.banglatribune.com › ক…Translate this page
‘Bhorer Kagoj’ ছবি দিয়ে লিখেছিল- “…কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে চলে ফিটনেস ছাড়া গাড়ি – বাসটি ৪৩ বছরের পুরোনো, ফিটনেস ছাড়াই চলছিল-
রাজধানীর সড়কে কর্তৃপক্ষের নাকের ডগা দিয়েই দাপটে চলে ফিটনেসবিহীন যানবাহন।” https://www.bhorerkagoj.com › tp-l
‘প্রথম আলো’ লিখেছিল-“অনেক গাড়ি বা বাসচালকের যেমন কাগজপত্র নেই, তেমনি সড়কে বেপরোয়া মোটরসাইকেল ও অটোরিকশাও চলাচল করে। দুর্ঘটনাকবলিত …” https://www.prothomalo.com › বাংলাদেশ- 24 Apr 2024
‘প্রথম আলো’ ২০১৯ থেকে ২০২২সাল অবদি গাড়ী ও মটর সাইকেল দূর্ঘটনায় প্রতি বছর মৃতের সংখ্যা উল্লেখ করে একটি চিত্রলেখ বা নকশা প্রকাশ করেছিল-
সংবাদ পত্রের ঐসব খবর থেকে আমরা আরো জানতে পারি যে, ডিএমপি ২০-৩০ বছরের পুরনো ছয়টি রেকার এখনো ব্যবহার করে। এমনকি আসামি বহন করার বন্দীবহনকারী গাড়ীসহ জরুরি কাজে ব্যবহৃত ৩৯৬টি চারচাকা গাড়ীর উপযুক্ততা(ফিটনেস) নেই।
চলতি বছরের ১জুন বিআরটিএ’র ওয়েবসাইটে হালনাগাদ করা তথ্য অনুযায়ী, মে মাস পর্যন্ত সারা দেশে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৫৭ লাখ ৪১ হাজার ৮৬৩টি। যা ২০১০ সালে ১৪ লাখ ২৭ হাজার ৩৬৮টি ছিল। ফলে গত এক যুগে(২০১০-২০২২) নিবন্ধিত যানবাহন বেড়েছে ৪৩ লাখ ১৪ হাজার ৪৯৫টি। এর মধ্যে ৫-৬ লাখের বেশি গাড়ি ফিটনেসবিহীন বলে জানা যায় বিভিন্ন সূত্রে। বৈজ্ঞানিক উপায়ে ফিটনেস পরীক্ষা না করায় এবং নানান পথে এসব গাড়ি নিবন্ধিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঐসকল সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সূত্রমতে, নিবন্ধিত যানবাহনের বাইরেও সড়কে চলাচল করা গাড়ির মধ্যে একটি বড় অংশই ফিটনেসবিহীন ও চলাচলের অনুপযোগী। অনিবন্ধিত এই যানবাহনের সংখ্যা কত, সে তথ্য বিআরটিএ’র কাছে নেই। এর মধ্যে ফিটনেসবিহীন গাড়ির পরিমাণ কত সে তথ্য না থাকাটাই স্বাভাবিক।
অবশ্য ২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা ৪ লাখ ৮১ হাজার ২৯টি। মালিকদের এসএমএস-এর মাধ্যমে ফিটনেস করার তাগাদা, সার্কেল অফিস থেকে নবায়নের ব্যবস্থার পাশাপাশি ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অর্থদণ্ড, কারাদণ্ড ও ডাম্পিংসহ নানামুখী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি…। এতোসব কাহিনীর পরে আমরাও চাই শক্তভাবে নানামুখী শক্তিশালী পদক্ষেপ নিয়ে আমরা সাধারণ মানুষের জানমালের নিশ্চিত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হোক।